দিন দুই আগে মণ্ডপ পরিদর্শনে বেরিয়ে পুলিশ কমিশনারের কনভয় ভোগান্তিতে ফেলেছিল মানুষকে। পুজোর ভিড়ের সঙ্গে সিপি-র কনভয়ের জন্য পুলিশি তৎপরতা মিলে শহরের বেশ কয়েকটি রাস্তা কিছুক্ষণের থমকে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবারও কলকাতার পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থ রাস্তায় বেরোলেন পুজোর প্রস্তুতি দেখতে। কিন্তু তার জন্য পুলিশ আগাম সতর্ক থাকায় এ দিন অবশ্য আর যানজটের কবলে পড়লেন না শহরের মানুষ। পুলিশের কনভয়ের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে চলল অন্যান্য যানবাহনও।
তবে এ দিন বাড়তি বিপত্তি ছিল তুমুল বৃষ্টি। আর সেই বৃষ্টি মাথায় কাদা প্যাচপেচে মণ্ডপে ঘুরলেন পুলিশ কমিশনার। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চেতলা, আলিপুর, নাকতলা, বড়িশা, গড়িয়া, বৈষ্ণবঘাটা-সহ বিভিন্ন এলাকার মণ্ডপে ঘুরলেন। কোথাও বৃষ্টি থেকে বাঁচতে নিজেই ছাতা হাতে হাঁটলেন।
গত মঙ্গলবারও পুজোমণ্ডপ পরিদর্শনে বেরিয়েছিলেন সিপি। ওই দিন অভিযোগ ওঠে, পুজোর মুখে অফিসের ব্যস্ত সময়ে শহরের বেশ কয়েকটি রাস্তায় নগরবাসীর ভোগান্তির কারণ হয়েছে খোদ পুলিশ কমিশনারের কনভয়। এই ধরনের পরিদর্শন সকালে না করে দুপুরে বা রাতে করা যায় কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। |
তবে বৃহস্পতিবার এ সব প্রশ্ন তোলার সুযোগই দেননি লালবাজারের কর্তারা। গত মঙ্গলবার পাইলট কার নিয়ে ঘুরলেও এ দিন সাধারণ ভাবেই শহরের রাস্তায় ঘুরেছেন পুলিশ কমিশনার। শহরের বিভিন্ন মোড়ে সিগন্যালে দাঁড়িয়ে গিয়েছে তাঁর কনভয়। কোনও একটি রাস্তায় ঢোকার পরে সেখান দিয়ে উল্টো দিকের যান চলাচল করতে দেওয়া হয়েছে। এমনকী, সমস্ত পুজোমণ্ডপের সামনে রাস্তার এক ধারে গাড়িগুলি রেখে অন্য গাড়িকে চলার সুযোগ করে দিতে ব্যস্ত ছিলেন ট্রাফিক পুলিশের কর্মীরা। তবে এ দিনও দমকল, সিইএসসি, পুরসভা-সহ লালবাজারের কর্তাদের নিয়ে ১৩-১৪টি গাড়ির কনভয় ছিল।
এ দিন কমিশনার জানান, মণ্ডপে ঢোকা-বেরোনোর রাস্তা, অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা, মণ্ডপের সামনে যান-নিয়ন্ত্রণ, দর্শনার্থীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা-সহ সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। লালবাজার সূত্রে খবর, এ বছর মণ্ডপে ও সংলগ্ন এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যাতে পুলিশের উপস্থিতি চোখে পড়ে, সে ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। ভিড়ে ইভটিজিং ও পকেটমারি রুখতে বাড়ানো হচ্ছে সাদা পোশাকের পুলিশ। থাকছে বেশি সংখ্যক ভলান্টিয়ার ও হোমগার্ড। মহিলা পুলিশকর্মীর সংখ্যাও বাড়ানো হবে। অন্যান্য বছর পঞ্চমীর দিন থেকে পুলিশের কাজ শুরু হত। এ বছর চতুর্থী থেকেই পথে নামবেন পুলিশকর্মীরা। ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত বিশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকবে পুরোমাত্রায়।
সিপি বলেন, “যে সমস্ত গঙ্গার ঘাটে কম সংখ্যায় বিসর্জন হত বা খুব একটা ব্যবহারই হত না, সেগুলিতে যাতে বেশি প্রতিমা বিসর্জন করা যায়, সে দিকে লক্ষ রাখা হয়েছে। এলাকা অনুযায়ী কোন পুজোর বিসর্জন কোন ঘাটে হবে, তা নির্দিষ্ট করা হচ্ছে।”
|