বিসর্জনের নয়া ঠিকানা এ বার নয়ানজুলিও
পূর্ব কলকাতার প্রতিমা বিসর্জনের নতুন ঠিকানা হল ‘দেবীঘাট’। ভিআইপি রোডের ধারে লেকটাউন থানা এলাকায় গোলাঘাটার একটি নয়ানজুলিতে এই বিসর্জনের ঘাট তৈরি হয়েছে দক্ষিণ দমদম পুরসভার উদ্যোগে। ওই পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘাটটির পরিকাঠামো এমন ভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে যাতে শুধু দমদম বা সল্টলেকই নয়, গোটা পূর্ব কলকাতার সমস্ত প্রতিমাই এই ঘাটে বিসর্জন দেওয়া যায়।
গঙ্গার ঘাটে প্রতিমা বিসর্জনের চাপ কমাতে এ বার পুজোয় শহরে ঘাটের সংখ্যা বাড়াতে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শহরে বেশ কিছু ঘাট রয়েছে, যেগুলোয় প্রতিমা বিসর্জন হয় না বা হলেও সংখ্যায় কম। সেই সব ঘাটে এ বার বিসর্জনের সংখ্যা বাড়াতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। গোলাঘাটায় নতুন এই ঘাট কিছুটা হলেও গঙ্গার ঘাটের চাপ কমাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
স্থানীয় বিধায়ক তথা দক্ষিণ দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুজিত বসু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী গঙ্গার ঘাটের বিকল্প খোঁজার কথা বলেছেন। আমরাও এলাকায় বিকল্প ঘাটের কথা ভেবেছিলাম। মূলত গঙ্গার ঘাটের চাপ কমাতেই এই উদ্যোগ।” তিনি জানান, এ বার এখানেই শ্রীভূমি স্পোর্টিংয়ের প্রতিমার বিসর্জন হবে। পূর্ব কলকাতার অন্যান্য পুজো কমিটিগুলিকেও এই ঘাটে বিসর্জনের জন্য অনুরোধ করা হবে। বুধবার দেবীঘাটের উদ্বোধন করেন দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারপার্সন অঞ্জনা রক্ষিত। উপস্থিত ছিলেন সুজিতবাবু এবং ওই পুরসভার কয়েক জন কাউন্সিলর।
লেকটাউন বা সল্টলেক এলাকা থেকে বিসর্জনের জন্য গঙ্গার ঘাটে যাওয়ার ক্ষেত্রে এক দিকে যেমন যানজটের সমস্যা ছিল তেমনই ওই ঘাটে চাপ বেশি থাকায় অনেক সময়ও লেগে যেত। নয়ানজুলির এই ঘাট তৈরি হলে পূর্ব কলকাতার পুজোগুলির বিসর্জনের এই সমস্যারও অনেকটা সমাধান হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্টোডাঙা থেকে ভিআইপি রোড ধরে লেকটাউন যাওয়ার পথে গোলাঘাটার আগে বাঁ দিকে ওই নয়ানজুলি। বেশ বড় নয়ানজুলিটির চার দিকে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং। অঞ্জনাদেবী বলেন, “ভিআইপি রোডের ধারে এই বড় নয়ানজুলিটি দেখে এখানেই বিসর্জনের পরিকাঠামো তৈরির কথা চিন্তাভাবনা শুরু করি। এ বছরই বিসর্জনের সব ধরনের পরিকাঠামো গড়ে ফেলা হচ্ছে।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিসর্জনের পাশাপাশি নয়ানজুলির সৌন্দর্যায়নেরও ব্যবস্থা হবে। নয়ানজুলিটি ঘিরে তৈরি করা হবে পার্ক। বসানো হবে আলো। ব্যবস্থা করা হবে প্রাতর্ভ্রমণেরও।
মোট ২৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই সৌন্দর্যায়নের কাজ হবে। তবে পুরসভা জানিয়ে দিয়েছে, বিসর্জনের পরেই প্রতিমার কাঠামো তুলে ফেলতে হবে পুজো-উদ্যোক্তাদের। তুলে ফেলতে হবে প্রতিমা বিসর্জনের সব ধরনের বর্জ্যও। তা হলে নয়ানজুলি দূষিতও হবে না। কাঠামো ও বর্জ্য তোলার ব্যবস্থা করবে পুরসভা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই নয়ানজুলির কাছে গিয়ে দেখা যায়, কাজ চলছে জোর কদমে। ঘাটে বসানো হচ্ছে বাহারি টালি। সংস্কার করা হচ্ছে পাড়। ঘাটের পাশে বসার জন্য তৈরি হচ্ছে বেদী। দক্ষিণ দমদম পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কাজ শেষ হয়ে যাবে দিন কয়েকের মধ্যেই। ওই ঘাটের পাশেই রয়েছে বেশ কিছুটা জায়গা ও সার্ভিস রোড। ফলে বিসর্জনের সময়ে ভিআইপি রোডে কোনও রকম যানজট হবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
নয়ানজুলিতে প্রতিমা বিসর্জনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে লেকটাউন এলাকার একটি পুজো সংগঠন নেতাজি স্পোর্টিং ক্লাবের সদস্যেরা জানান, গঙ্গার ঘাটে ভিড় হয় বেশি। অতটা পথ যেতে এত দিন যানজটেও পড়তে হতো। এলাকাতেই বিসর্জনের এই পরিকাঠামো থাকলে অনেক তাড়াতাড়ি ও সহজে বিসর্জন দেওয়া যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.