বি টি অ্যান্ড ইভিনিং কলেজে ভাঙচুর করার ঘটনায় দুই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে ১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি তৃণমূল সমর্থক বলে এলাকায় পরিচিত। তবে পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের ওই ঘটনা নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ একদল লোক হামলা ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ জানান। তাতে কারও নাম নেই। অন্যদিকে ছাত্র পরিষদের দখলে থাকা ছাত্র সংসদের সদস্য সাহিনুর ইসলাম নবীনবরণ উৎসবমঞ্চ সাইকেল, বাইক ও ছাত্র সংসদের অফিসের আসবাব ভাঙচুর, সংসদের আলমারিতে রাখা দেড় লক্ষ টাকা লুঠ, মারধরের নালিশ করেছেন। পুর চেয়ারম্যান বীরেন কুণ্ডু ও তার ছেলে শুভজিৎবাবুর পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে ওই হামলার ঘটনা হয় বলেও ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের তালিকায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে শুক্রবার সন্ধে পর্যন্ত অভিযোগ থানায় জমা পড়েনি। পুর চেয়ারম্যান বীরেনবাবু বলেন, “এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার চেষ্টা। দেড় লক্ষ টাকা চুরির মতো দুরবস্থা আমার হয়নি।” পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল জানান, কলেজের ঘটনা নিয়ে শুক্রবার সন্ধে পর্যন্ত দুটি অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। তার একটি কলেজ কর্তৃপক্ষ, অন্যটি ছাত্র পরিষদের তরফে করা হয়েছে। দুটি অভিযোগের ভিত্তিতেই নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই ঘটনায় জড়িত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানায় ধৃতের নাম আফছার হোসেন। কোচবিহার শহর লাগোয়া খাগরাবাড়িতে বাড়ি। তিনি তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচিত। পাশাপাশি পুরসভার চেয়ারম্যান সহ সকলের বিরুদ্ধে চুরি ভাঙচুর জখম করার মত একাধিক অভিযোগের ধারা যুক্ত করে মামলা হয়েছে। তার মধ্যে জামিন অযোগ্য ধারা রয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের উত্তরবঙ্গের আহ্বায়ক বরুণ দত্ত বলেন, “স্মারকলিপি দিতে গেলে আমাদের কর্মীদের ওপর ছাত্র পরিষদের দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। তাতে বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ততার জন্য তখন অভিযোগ করা হয়নি। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হবে।” এ দিকে বৃহস্পতিবারের ঘটনার জেরে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত জেলার সব কলেজে ছাত্র সংগঠনের কর্মসূচি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ৪ অক্টোবর উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে নতুন করে গোলমালের আশঙ্কা এড়াতে ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোচবিহার সদর মহকুমাশাসক বিকাশ সাহা বলেন, “কলেজ কর্তৃপক্ষগুলিকে ওই নির্দেশের কথা জানিয়ে দিয়েছি। বি টি অ্যান্ড ইভিনিং কলেজে নবীন বরণ অনুষ্ঠান হয়নি।” ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ চঞ্চল মণ্ডল বলেন, “প্রশাসনের নির্দেশ মেনেই নবীনবরণ স্থগিত রাখা হয়েছে। ক্লাস হলেও ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হার কিছুটা কম ছিল।” ছাত্র পরিষদের তরফে এ দিন কোচবিহার শহরে প্রতিবাদ মিছিল করা হয়। সংগঠনের জেলা সভাপতি অরিন্দম দে বলেন, “পুলিশ পুরসভা চেয়ারম্যান সহ অভিযুক্তদের সবাইকে গ্রেফতার না করলে লাগাতার আন্দোলন হবে। শনিবার দুপুর ১২ টা থেকে জেলা জুড়ে একঘন্টা পথ অবরোধ করা হবে। বৃহস্পতিবার ওই কলেজে ছাত্র ভর্তি করা নিয়ে অনিয়ম ও লেনদেনের অভিযোগ ঘিরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের স্মারকলিপি কর্মসূচি ছিল। তা নিয়ে উত্তেজনা থেকে ছাত্র পরিষদ ও টিএমসিপি সমর্থকেরা সংঘর্ষে জড়ান। উভয়পক্ষের ৩০ জন জখম হন। |