|
|
|
|
সমর্থকের স্ত্রীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা-সহ ৩ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বনগাঁ |
দলেরই এক সমর্থকের বাড়ি ভাঙচুর করে তাঁর স্ত্রীকে মারধর, ধর্ষণ এবং শেষে বিবস্ত্র অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রাখার অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল নেতা-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে।
বনগাঁর কালুপুর-পাঁচপোতা এলাকায় সোমবার ঘটনার পরে বছর পঁয়ত্রিশের ওই মহিলাকে বনগাঁ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তখন মহিলা পুলিশের কাছে স্থানীয় তৃণমূল নেতা শ্যামল সরকার-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে ঘর ভাঙচুর এবং শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানান। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মা মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন থানায়।
উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “অভিযুক্তেরা পলাতক। মহিলার উপরে নির্যাতনের পিছনে কয়েকটি কারণ উঠে আসছে। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” তৃণমূল নেতা শ্যামল সরকার অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ঘটনার দিন মহিলার স্বামী কর্মসূত্রে অন্যত্র ছিলেন। সকাল ১০টা নাগাদ রাস্তায় ধান শুকোতে দেওয়া নিয়ে ওই মহিলার সঙ্গে পড়শি এক মহিলার গোলমাল হয়। প্রতিবেশীদের হস্তক্ষেপে তা মিটে যায়। কিন্তু তার পরেই রড, শাবল নিয়ে শ্যামলবাবুরা ওই তৃণমূল সমর্থকের বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁর স্ত্রী-র উপরে নির্যাতন চালান বলে অভিযোগ। প্রতিবেশীরা জানান, তাঁরা চিৎকার শুনে গিয়ে দেখেন, মহিলা রাস্তায় পড়ে। তাঁর পোশাক ছেঁড়া।
শুক্রবার বনগাঁ হাসপাতালে ওই মহিলা বলেন, “মার খেয়ে জ্ঞান হারাই। তখন শ্যামলবাবুরা আমায় নির্যাতন করেন। জবানবন্দি নেওয়ার সময়ে মহিলা-পুলিশ না থাকায় সব কথা পুলিশকে বলতে পারিনি।” মহিলার মা-র দাবি, “মেয়ের অবস্থা খারাপ থাকায় ধর্ষণের অভিযোগ জানাতে দেরি হল।” তদন্তকারীদের অবশ্য বক্তব্য, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে ওই মহিলা মারধর এবং শ্লীলতাহানির কথাই বলেছেন। হাসপাতালের সুপার গয়ারাম নস্করও বলেছেন, “ওই মহিলা ধর্ষণের কথা চিকিৎসককে জানাননি। তাঁকে পরীক্ষা করেও ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি।”
কিন্তু হামলার কারণ নিয়ে নির্যাতিতা বা তাঁর পরিবারের লোকজন নির্দিষ্ট কিছু জানাননি। মহিলার স্বামীর দাবি, তাঁরা তৃণমূল সমর্থক হলেও পঞ্চায়েত ভোটে নির্দল হিসেবে দাঁড়ানো দলের এক বিক্ষুব্ধকে সমর্থন করেছিলেন। তা নিয়ে শ্যামল ও তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে তাঁর বিবাদ হয়। সেই আক্রোশে স্ত্রী-র উপরে নির্যাতন চালানো হয়ে থাকতে পারে বলে তাঁর অনুমান।
অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শ্যামলবাবুর দাবি, “তিন জনের কেউই সোমবার ঘটনাস্থলে ছিলাম না। রাজনৈতিক কারণে ফাঁসানো হচ্ছে।” কালুপুর-পাঁচপোতা এলাকাটি বনগাঁ দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে। সেখানকার তৃণমূল বিধায়ক সুরজিৎ বিশ্বাস গোটা ঘটনার পিছনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে বলে মানেননি। তাঁর বক্তব্য, “গ্রাম্য বিবাদে রাজনীতির রং লাগিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের ফাঁসানো হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|