বহরমপুর শহরে যান নিয়ন্ত্রণের জন্য ট্র্যাফিক পুলিশের অধীনে থাকা একশো জন পথ-নিরাপত্তা কর্মী হাত গুটিয়ে নেওয়ায় আসন্ন পুজোর দিনগুলোয় যানজটের আশঙ্কা করছে জেলা পুলিশ।
ইতিমধ্যেই শহরের ব্যস্ত মোড়গুলিতে যানজট শুরু হয়ে গিয়েছে। যানজটের রেশ গত শনিবার থেকে পড়ছে শহরের কোল ঘোঁষে যাওয়া জতীয় সড়কের উপরেও। পুলিশের তরফে এ ব্যাপারে বিকল্প কোনও ব্যবস্থা অবশ্য এখনও করা হয়নি। যা নিয়ে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে বহরমপুরের পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য আশ্বাস দিয়েছেন, “পুলিশ সুপারের সঙ্গে বৈঠক করে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।”
বহরমপুর ট্র্যাফিক পুলিশের পরিকাঠামো বলতে এক জন করে ট্র্যাফিক ইন্সপেক্টর ও সাব-ইন্সপেক্টর। চার জন এএসআই, ১২ জন কনস্টেবল এবং ৪৮ জন হোমগার্ড। এই অবস্থায় শহরের যানজট রুখতে ২০১২ সালে পুরসভা ও পুলিশ প্রশাসন যৌথ ভাবে ১০০ জন কর্মী নিয়োগ করে।
শুরুতে তাদের দৈনিক ভাতা ছিল একশো টাকা। সম্প্রতি ওই ভাতার পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ১২৫ টাকা। কিন্তু ওই কর্মীদের দাবি, পুলিশ কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি ছিল হোমগার্ড নিয়োগের সময়ে তাঁদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। কার্যত তা না হওয়ায় এ বার তাঁরা পুজোর আগে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন। |
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “সরকারি চাকরি নিয়োগে কোনও বাড়তি সুবিধা দেওয়া সম্ভব নয়। অন্য প্রার্থীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই নিয়োগপত্র নিতে হবে। তবে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানসূত্র বের করার চেষ্টা চলছে। প্রয়োজনে নতুন কর্মী নিয়োগ করা হবে।”
ওই কর্মীদের বক্তব্য, হোমগার্ড নিয়োগ করার সময়ে তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলেও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও সে দায় এখন এড়িয়ে যাচ্ছে পুলিশ। শহরে চলেছে হোমগার্ড নিয়োগ। কিন্তু সেখানে তাঁরা কোনওরকম অগ্রাধিকার পাচ্ছেন না।
গত কয়েক বছরে বহরমপুর শহরের জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে গাড়ির সংখ্যা। বহরমপুরের এলাকা এখন বিস্তৃত ভাকুড়ি থেকে বানজেটিয়া পর্যন্ত। কিন্তু শহরের ট্র্যাফিক ব্যবস্থা সেই মান্ধাতার আমলের। শহরে প্রতি দিন লাফিয়ে বাড়ছে রিকশার সংখ্যাও। যন্ত্রচালিত লছিমন প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে এখন শহর দাপাচ্ছে।
গত পুজোর সময়ে ওই কর্মীরা ট্র্যাফিক পুলিশের সঙ্গে যৌথ ভাবে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করার ফলে নির্বিঘ্নে কেটে গিয়েছিল পুজো। নীলরতনবাবু বলেন, “পুজোর সময়ে পুর-এলাকার বিভিন্ন জায়গায় টোল-ট্যাক্স আদায় রাখা হয়। ওই কর্মীরা কাজ করলে ভাল। রাজি না হলে ওই টোল-ট্যাক্স আদায়কারী থেকে পুরসভার বিভিন্ন দফতরের কর্মীদের বাছাই করে পুজোর সময়ে শহরের ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজে লাগানো হবে।” |