আগামী চার মাসের মধ্যে ‘সবার শৌচাগার’ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় এক লক্ষ পরিবারে স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার তৈরির উদ্যোগী হল নদিয়া জেলা প্রশাসন। একশো দিনের কাজের প্রকল্প, নির্মল ভারত অভিযান ও গ্রামীণ জীবিকা মিশনের সমন্বয়ে এই কাজ সম্পন্ন হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। জেলা শাসক পিবি সালিমের দাবি, “চলতি মাসে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের উদ্যোগে আয়োজিত এক কর্মশালায় আমরা বিষয়টি তুলে ধরি। কেন্দ্র বিষয়টিকে ‘নদিয়া মডেল’ হিসেবে উল্লেখ করে। দেশের অন্যান্য জেলাকে এই মডেল অনুসরণের কথা বলে।”
সম্প্রতি জেলা প্রশাসন আশা কর্মী ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দিয়ে একটি সমীক্ষা করে। তাতে দেখা যায়, প্রায় তিন লক্ষ পরিবারে কোনও শৌচাগার নেই। খোলা মাঠই ভরসা। রিপোর্ট হাতে পেয়েই নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। স্থির হয় দারিদ্র সীমার বাদ-বিচার না করে দশ হাজার টাকা মূল্যের কংক্রিটের শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হবে। ২ অক্টোবর গাঁধীর জন্মদিনে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে গাঁধীজির প্রয়াণ দিবস ৩০ জানুয়ারি। নির্মল ভারত অভিযান প্রকল্পের মাধ্যমে চার হাজার ছ’শো টাকা দেওয়া হবে। |
শ্রমিকের মজুরি বাবদ একশো দিনের কাজের প্রকল্প থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা দেওয়া হবে। বাকি ৯০০ টাকা দিতে হবে প্রকল্পের সুবিধাভোগীকে। ওই টাকা দিতে অপারগরা শৌচাগার নির্মাণে শ্রম দিতে পারবেন। শারীরিকভাবে অক্ষম ও ওই টাকা দিকে অপারগ পারিবারগুলির ক্ষেত্রে ওই ৯০০ টাকা দেবে পঞ্চায়েত। গ্রামীণ জীবিকা মিশনের আওতায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি শৌচাগার তৈরির কাঁচামাল সরবরাহ করবে। কিছু উপকরণ গোষ্ঠীগুলি নিজেরাই বানাবে। প্রকল্পের কাজ দেখভালের জন্য প্রতি সংসদে বাড়িতে শৌচাগার আছে এমন একজন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাকে ‘স্বচ্ছতা দূত’ হিসেবে নিয়োগ করা হবে। তিনি মাসে ৫০০ টাকা করে ভাতা পাবেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, দেশের প্রায় ৪৮ শতাংশ বাড়িতে কোনও শৌচাগার নেই। রাজ্যে এই সংখ্যাটা ৩৮ শতাংশ। জেলাশাসক বলেন, “বাংলাদেশে মাত্র ৪ শতাংশ পরিবারে শৌচাগার নেই। তাই তাদের থেকে আমাদের দেশের শিশুদের বৃদ্ধির হার কম। নানা অসুখে ভোগে।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি তৃণমূলের বানীকুমার রায় বলেন, “বাংলাদেশের থেকে আমরা পিছিয়ে, এটা লজ্জার। এই তৈরির উদ্যোগকে আমরা সফল করবই।” উদ্যোগকে সফল করতে প্রতি সোমবার স্কুলে প্রার্থনার পর পড়ুয়াদের শপথবাক্য পড়ানো হবে। |