মুখোমুখি ২...
আমার গলা ভাড়া করা নয় যত্ন করে তৈরি

পত্রিকা: বেশ কিছু দিন অন্তরালে ছিলেন আপনি। হঠাৎ-ই রণবীর কপূরের ‘বেশরম’ ছবিতে আপনাকে পাওয়া গেল।
অভিজিৎ: আমি হারবার জন্য হারিয়ে যাইনি। আট মাস আগে চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম, আমি মেলোডি নিয়েই ফিরব, ফিরেছি। ইন্ডাস্ট্রির কেউ কেউ বলছেন অসাধারণ মেলোডিয়াস গান হয়েছে ‘দিল কা যো হাল হ্যায়’।

পত্রিকা: মুম্বইয়ের এই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে আপনি কিন্তু ঠিক টিঁকে রয়েছেন। একবার পিছোচ্ছেন, একবার এগোচ্ছেন। রহস্যটা কী বলতে পারেন?
অভিজিৎ: পেটে গান জানার বিদ্যা ও কালচার থাকলে, অন্যকে সম্মান করতে জানলে অনেক কঠিন সমস্যাকেও জয় করা যায়।

পত্রিকা: এটা কোনও যুক্তি হল নাকি?
অভিজিৎ: তা অবশ্য নয়। আসলে যাঁরা এক সময়ে বলিউডে আমাকে অসম্মান করেছিল তাঁদের যোগ্য জবাব দেবার মানসিকতা তৈরি হয়েছিল বলেই আমি আজও ‘অভিজিৎ’। প্রথম জীবনে কত মানুষ কত রকম ভাবে আমাকে হেয় ও অবহেলা করেছিলেন, এক এক করে সবাই জবাব পেয়ে গেছেন। সত্যি কথা বলতে কী জানেন, আমি কখনও কোনও দিন নিজেকে বলিউড সিঙ্গার বলে ভাবিনি। নিজের ব্র্যান্ড নিজে তৈরি করেছি। সারা দেশের সামনে তাই আমার পরিচিতি একই রকম।

পত্রিকা: কথাটার মধ্যে একটু অহংকারী লাগছে না?
অভিজিৎ: কে বলল? নিজের সেরা কাজই তো নিজের ব্র্যান্ড। আচ্ছা, বাংলার বিধানচন্দ্র রায়ের পাশে কি কখনও ডিগ্রি লেখার দরকার হত? আমি সেটাই বলতে চেয়েছি।

ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল
পত্রিকা: শুনছি ‘বেশরম’ ছবির পরে আরও কয়েকটি ছবির প্লেব্যাকে আপনার নাম রয়েছে?
অভিজিৎ: এখনই সব বলে দেব না। আরও একটু অপেক্ষা করুন। (হাসি)

পত্রিকা: এখন তো হিন্দি ছবিতে প্লেব্যাক সিঙ্গার-এর বড় অভাব চলছে শোনা যাচ্ছে। এই শূন্যস্থানে আপনার গান সব পরিস্থিতিতেই যে মানানসই হবে—এতটা ভাবছেন কী করে?
অভিজিৎ: আমার গান সে রকমই। লোককে বিনোদন দেয়। পাড়ার দোকান থেকে খাবার কিনে খাওয়া, আর মায়ের হাতের স্নেহ মাখানো খাবার—দু’টোর মধ্যে পার্থক্য তো থাকবেই। আমার গলাও তেমন ভাড়া করা নয়। ভালবেসে যত্ন করে তৈরি করা। চট করে কেউ ফেলে দিতে পারেন না। তাই আমার গানের কদর আগেও ছিল, এখনও আছে।

পত্রিকা: সেটা শ্রোতারাই বলবেন। কিন্তু আপনি এত আত্মবিশ্বাসী কেন?
অভিজিৎ: আরে দশ হাজার সিঙ্গার ইন্ডাস্ট্রির আনাচে কানাচে ঘুরছে। কেউই কিছু করতে পারছে না। হাওয়ায় উড়ছে তারা। সাময়িক পিছিয়ে গেলেও আমরাই তো ফিরে আসছি। পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। আত্মবিশ্বাসী সেই কারণেই।

পত্রিকা: মুম্বইয়ে বসে বাংলা গানেরও চর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন। যথারীতি এ বছর পুজোতে বাংলা গানের অ্যালবামও বেরোচ্ছে। ‘প্রাণটা জুড়াইয়া গেল রে’। সত্যিই কি প্রাণ জুড়োবে?
অভিজিৎ: খাঁটি বাঙালিয়ানা মেজাজেই থাকি। (হাসতে হাসতে) অহংকার করে বলছি না আমি নিজেকে মনে করি ‘খাঁটি বেঙ্গল ব্র্যান্ড।’ মাটির গন্ধ মাখা লোকগীতির ঐতিহ্য ফিরিয়ে এনেছি ঠিক এই পুজোর মুহূর্তেই। মানুষের রুচি বুঝতে আমার দেরি হয় না। শুধু বাংলায় কেন, মুম্বইয়ের বিভিন্ন দুর্গাপুজোতেও আমার নিজস্ব গায়কীর এই লোকগীতি শুনতে পাবেন। প্রবাসী বাঙালিদের কাছেও আমার বাংলা গানের কদর কম কিছু নয়।

পত্রিকা: অনেকেই এ বছর লোকগীতির অ্যালবাম করছেন। রবীন্দ্রসঙ্গীত, আধুনিক ছেড়ে হঠাৎ আপনিও ফোকের উপর জোর দিলেন কেন?
অভিজিৎ: কে কী করছেন জানি না। তবে ফোক দরদ দিয়ে গাইলে এ গানের তুলনা হয় না। আমার এই সংকলনে কিছুটা ব্যতিক্রমও আছে। ফোকের উপরে মজা, কিছুটা কমেডি। বাকিটা নন স্টপ ডান্সিং।

পত্রিকা: ফোকে নন স্টপ ডান্সিং? এ রকম শুনিনি আগে...
অভিজিৎ: নতুন কিছু ভাবলে অসুবিধে কোথায়? এ সব গানে প্রাণ আছে। উন্মাদনাও আছে। মনের মতো গান পেলে মানুষ নাচতেও চায়। (হাসি) ‘তোর পিরিতে ও শেফালি’ শুনলে আপনিও নাচতে চাইবেন।

পত্রিকা: এই অ্যালবামে দেখছি মুম্বইয়ে প্রতিষ্ঠিত অন্যান্য বাঙালি নায়ক, গায়ক ও সুরকারদের প্রসঙ্গও এনেছেন।
অভিজিৎ: হ্যাঁ। কিশোরকুমার, রাহুল দেববর্মন, কুমার শানু, শান, বাপি লাহিড়ি, মিঠুন চক্রবর্তী-সহ অনেকেরই প্রসঙ্গ এনে একটি গানও গেয়েছি ‘হরিবোল, সুপারস্টার বলিউড’।

পত্রিকা: এখন তো দেব-এর প্রায় সব ছবিতেই আপনার প্লে-ব্যাক।
অভিজিৎ: গানে মেলোডি থাকতে হবে। না হলে লোকে নেবে না। ‘ঢাকের তালে, কোমর দোলে, আজ খুশিতে নাচে মন’ বা ‘পুলিশ চোরের প্রেমে পড়েছে’ এখন তো লোকের মুখে মুখে ঘুরছে। মানুষের মন বোঝাটাও যে শিল্পীর বড় দায়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.