মুখোমুখি ১...
ক্রিকেটার হয়েও মিস্টার বচ্চনের লিস্টে ঢুকলাম
বেহালা চৌরাস্তা থেকে বাঁ দিকের গলিটায় ঢুকে পড়লে যে লাল রঙের প্রাসাদোসম বাড়িটা পাওয়া যাবে, তাকে বোধহয় খুব একটা সময়-বিবর্তনে পড়তে হয়নি।
যুগ বদলেছে। সময় পাল্টেছে। কিন্তু বীরেন রায় রোডের ওই অট্টালিকার পারিপার্শ্বিকে বদল কোথায়?
আজও ওই গলিতে গাড়ি ঢুকে পড়া মানে নিয়ম করে বাড়িটার সামনে মিনিট দু’য়েক দাঁড়ানো। কেউ নেই, কেউ চট করে বেরিয়েও আসে না। তবু। ভরদুপুরে এমন দু’পাঁচ জনকে পাওয়া যায়, যাঁরা আজও ব্যালকনির দিকে নির্নিমেষ তাকিয়ে থাকবেন।
প্লেয়ার্স কর্নারের পুজোয় আজও ভিড়টা একই রকম হয়। বছর দশেক আগে যা হত। সেই উঁকিঝুঁকি, স্রেফ পাঁচিলের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে ছবি তোলা...মণ্ডপটা একটু দেখে নেওয়া...একই তো আছে।
কলকাতায় ক্রিকেট-পীঠও বা আছে ক’টা?
এবং ক্রিকেট-পীঠের অধীশ্বর যিনি, তাঁরও খুব পরিবর্তন হয়েছে কি?
কথাবার্তায় ‘ডিপ্লোম্যাসি’ এখনও নেই। বরং বোঝা গেল, বাইশ গজের যুদ্ধ থেকে বরাবরের মতো সরে গেলে কী হবে, আজও সময়-সময় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ‘বাপি বাড়ি যা’ করে ফেলে দিতে ভালবাসেন...


পত্রিকা: পাঁচ বছর হল আপনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছেড়েছেন। বছরখানেক হল আইপিএলের পৃথিবীতেও আপনি আর নেই। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এখন ঠিক কতটা সংসারী?
সৌরভ: অ্যাঁ (কিছুটা চমকে উঠে)?

পত্রিকা: বলছিলাম, বাইশ গজের যুদ্ধ থেকে বরাবরের মতো সরে দাঁড়ানো সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এখন কতটা সংসারী?
সৌরভ: এটা তো বলা মুশকিল...এই প্রশ্নের উত্তর তো আমি দিতে পারব না। তবে সময় এখনও খুব কম পাই।

পত্রিকা: যতটুকু পান, তার মধ্যে সানার অঙ্কের খাতা দেখতে হয়? রোজ বসতে হয় মেয়েকে নিয়ে?
সৌরভ: অবশ্যই দেখতে হয়। আর কাজটা কিন্তু আমি খুব আনন্দের সঙ্গেই করি।
পত্রিকা: আর মিসেস গাঙ্গুলির রান্নাঘর? খোঁজ-টোজ নেন, কী রান্না হচ্ছে না হচ্ছে?
সৌরভ: (সামান্য অপ্রস্তুত) আরে না, না। ও সবে একদমই থাকি না।

পত্রিকা: পুজোয় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় থাকা মানে অষ্টমীর দিন ঢাক বাজানো নির্ঘন্টে থাকবেই। এ বার কী করছেন?
সৌরভ: পুজো? নাহ্, পুজোয় এ বার থাকছি না। অস্ট্রেলিয়া খেলতে আসছে ভারতে। ১০ অক্টোবর প্রথম ম্যাচ। কমেন্ট্রি আছে। পুজোয় আমি নেই।

পত্রিকা: ইদানীং আপনাকে নিয়ে একটা প্রশ্ন ঘুরছে ময়দানে।
সৌরভ: কী?

পত্রিকা: এই যে আপনি আবার ইডেনে দৌড়োচ্ছেন। সিএবি-র জিমে যাচ্ছেন। লোকে বলছে, তা হলে কি...
সৌরভ: আসলে কী জানেন, সারা জীবন তো রোগা ছিলাম। এখন আয়নার দিকে তাকালে যখন দেখি যে একটু একটু করে ওজন বেড়ে যাচ্ছে, দেখলে নিজেরই খারাপ লাগে।
আপনি যেটা ভাবছেন সেটা নয়। আবার নেমে পড়ব কি না জানতে চাইছেন তো? কোনও চান্স নেই। এক পার্সেন্টও না!


পত্রিকা: কিন্তু আপনার কাছাকাছি বয়সের লিয়েন্ডার পেজ তো ক’দিন আগেও গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতলেন। লিয়েন্ডারকে জিততে দেখে কোথাও কি মনে হয়েছে, বারবার স্ক্রুটিনি, সার্চলাইটের প্রেসার বিরক্ত না করলে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও পারত? তাঁর কাছেও চল্লিশ পেরিয়ে পারফর্ম করাটা কোনও ব্যাপার হত না?
সৌরভ: দেখুন, ইন্ডিভিজুয়াল স্পোর্টের সঙ্গে টিম স্পোর্টের কোনও তুলনাই হয় না। কারণ লিয়েন্ডার পেজ কেউ সিলেক্ট করে না। তাই দু’টোয় অনেক তফাত আছে। তুলনা না করে বরং উচিত, লিয়েন্ডারের জয়টা নিয়ে আনন্দ করা। চল্লিশ বছরেও ডাবলস জিতছে, এটা তো বাংলা খেলাধুলোর দুনিয়ায় খুব ভাল একটা খবর।

পত্রিকা: দু’ধরনের স্পোর্টের তুলনা নয়, কিন্তু মিডিয়ার চাপটা যে আপনার উপর অন্য রকম ছিল...
সৌরভ: আমি ব্যাপারটাকে সে ভাবে দেখি না। ক্রিকেট আমাদের দেশে নিশ্চয়ই বিশাল একটা ব্যাপার। ম্যাসিভ স্পোর্ট। কিন্তু মিডিয়ার নজর তো শুধু সৌরভ গাঙ্গুলির উপর ছিল না। সচিন তেন্ডুলকরের উপর ছিল। রাহুল দ্রাবিড়ের উপর ছিল। ক্রিকেটারের উপর ফোকাসটা বরাবরই এখানে আছে। টেনিসকে সম্মান করেই বলছি, ঠিক-ভুল জানি না, তবে টেনিসের প্রেফারেন্স আমাদের দেশে ততটা নেই। আসলে প্রত্যেক দেশেরই আলাদা আলাদা খেলা থাকে যেটা তার নিজস্ব। পছন্দের। যেমন ইংল্যান্ডে ফুটবল। দক্ষিণ আফ্রিকায় রাগবি। ভাগ্যবান বলতে হবে যে, আমাদের দেশের নিজস্ব খেলাটা ক্রিকেট। পছন্দের খেলাটা ক্রিকেট।

পত্রিকা: লিয়েন্ডার ইউএস ওপেন জেতার পর কোনও কথা হয়েছে?
সৌরভ: নাহ্। হয়ে ওঠেনি। আসলে ও মুম্বইয়ে থাকে তো। সব সময় তাই কথা হয়ে ওঠে না।

পত্রিকা: আর আপনার পুরনো টিমমেটরা? তাঁদের সঙ্গে?
সৌরভ: হ্যাঁ। যখন দেখাটেখা হয়। রাহুল, কুম্বলে, সচিন সবার সঙ্গেই হয়। আর বাংলা ক্রিকেটাররা তো আছেই।

পত্রিকা: একটা কথা বলবেন। চল্লিশ পেরিয়ে আজ লর্ডস টেস্টের সেঞ্চুরিটার কথা ভাবলে ঠিক কেমন লাগে?
সৌরভ: সেঞ্চুরি করার সময়টা বলছেন? আমার জীবনের বিরাট একটা মুহূর্ত বলতে পারেন। আমি ভাগ্যবান যে ঈশ্বর আমার উপর এতটাই সদয় ছিলেন যে সেঞ্চুরিটা লর্ডসে করতে পেরেছিলাম। সব চেয়ে বড় ব্যাপারটা কী জানেন? লর্ডসের সেঞ্চুরিটার পর আমি বুঝে গিয়েছিলাম যে এ বার আমি ভারতের হয়ে অনেক দিন খেলতে পারব।

পত্রিকা: লর্ডস টেস্টের পর আপনার বারো বছরের ক্রিকেট কেরিয়ার বাঙালিকেও তো পালটে দিল।
সৌরভ: কী রকম?

পত্রিকা: আপনি আসার আগে বাঙালি নিয়ে একটা প্রচলিত ধারণা ছিল যে ঝিমোনো একটা ব্যপারস্যাপার। কিন্তু আপনি আসার পর, আপনাকে খেলতে দেখার পর এখন অধিকাংশ বাঙালি ভাবে সৌরভের মতো আমিও জামা খুলে ওড়াতে পারি!
সৌরভ: (অল্প হেসে) শুধু ভাবলে হবে না। মনে করলে হবে না। করে দেখাতে হবে। মনে করা আর করার মধ্যে কিন্তু অনেক তফাত আছে।
আমি নিজে প্রবল ভাবে চাই বাংলা থেকে আবার কেউ দেশকে রিপ্রেজেন্ট করুক। পরে যখন ইডেন গার্ডেন্সে ম্যাচ দেখতে যাব, বা ধরুন যখন আমি কমেন্ট্রি করি কিংবা আপনারা ম্যাচ কভার করতে যান, দেখতে তো ইচ্ছে হয় যে পাঁচ, চার বা তিন নম্বরে বাংলার কেউ খেলছে।


পত্রিকা: তার মানে প্রশাসক সৌরভের ‘ওয়ার্ম আপ’ প্রবল ভাবে শুরু হচ্ছে?
সৌরভ: ক্রিকেট প্রশাসনে আসা না আসা পরের ব্যাপার। তবে আমি সিএবি-তে যাই। যাই, কারণ বাংলা ক্রিকেটের উন্নতি দরকার। বাংলা ক্রিকেটকে আরও ভাল করতে হবে। খুব জরুরি সেটা।

পত্রিকা: সচিন তেন্ডুলকরের দু’শোতম টেস্ট নিয়ে ইডেন আর ওয়াংখেড়েতে কী রকম টানাটানি চলছে দেখছেন নিশ্চয়ই। আপনার কী মত? কোথায় হওয়া উচিত সচিনের দু’শো?
সৌরভ: অবশ্যই ওয়াংখেড়ে। এটা যদি সৌরভের দু’শোতম টেস্ট হত, তখন ইডেন ছাড়া আর কিছু ভাবা যেত না। ঠিক তেমন এটা যখন সচিনের দু’শোতম, তখন ওয়াংখেড়ে ছাড়া আর কিছু ভাবা উচিতও নয়। আসলে ইডেন না ওয়াংখেড়ে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, সচিন কোথায় জন্মেছে।

পত্রিকা: এই যে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের আগে একটা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর ঢুকিয়ে ফেলা হল। আপনার মনে হয় যে এটা সচিন তেণ্ডুলকরের অবসরের সিগন্যাল?
সৌরভ: বলতে পারব না। কিন্তু এটুকু বুঝতে পারি যে দেশের মাঠে দু’শোতম টেস্ট খেলার মধ্যে অপরাধ কিছু নেই। সচিন তো ইন্ডিয়ার প্লেয়ার। বিসিসিআইয়ের সম্পত্তি।

পত্রিকা: উপমহাদেশে একটা ব্যাপার খুব দেখা যায়। যদি কোনও মহাতারকার সামনে মাইলস্টোন থাকে, তা হলে তাঁর অবসরের কথা না ভেবে সেটার জন্য অপেক্ষা করা হয়। যেমন গাওস্করের দশ হাজার রান। কপিলের চারশো চৌত্রিশ উইকেট। এখন সচিনকে নিয়ে চলছে। ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ায় যেটা হয় না খুব একটা। রিকি পন্টিংকে অত সুযোগ দেওয়া হয় না। কিন্তু দরকারে বুড়ো বয়সের মাইক ব্রিয়ারলিকে ফিরিয়ে আনা হয়...
সৌরভ: কে বলল, ওদের ওখানে অপেক্ষা করা হয় না? ব্যাপারটা হচ্ছে আমরা এখানে বসে সে সব জানতে পারি না। জানতে পারি না, ওদের নিয়ে ওখানে কী নিয়ে মাতামাতি চলছে। নইলে অ্যান্ড্রু স্ট্রস একশো টেস্ট খেলার পরই রিটায়ার করল কেন? আর কপিল দেব, গাওস্কর বা সচিনের সঙ্গে মাইক ব্রিয়ারলির কোনও তুলনাই হয় না। সচিন ডিজার্ভস টু প্লে টুহান্ড্রেথ টেস্ট। দু’শো টেস্ট খেলার যোগ্য ও। গাওস্কর দশ হাজার রানের মাইলস্টোন ছোঁয়ার জন্য কমপ্লিট যোগ্য ছিলেন, তাই সেই সুযোগও ওঁর প্রাপ্য ছিল। কারণ উনি নিজের সময়ে এক নম্বর ছিলেন। এরা প্রত্যেকেই তাই। সচিনও। জানি না কেন লোকে তবু এত সমালোচনা করে।
পত্রিকা: একটা সময় ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে ইন্ডিয়ান টিমে প্রবল আকচাআকচি চলত। এখন কিন্তু সেটা দেখা যায় না। বরং এখন কোহলিকে ভবিষ্যতের ক্যাপ্টেন জেনেও তাঁকে দিব্যি ধোনি প্রোমোট করে যান।
সৌরভ: ভারতীয় ক্রিকেট আসলে অনেক বদলে গিয়েছে। ক্রিকেটারদের অ্যাটিটিউড, বোর্ডের মনোভাব অনেক পাল্টেছে। এখন ক্যাপ্টেন হিসেবে কাউকে ঠিক করলে, তাকে লম্বা সময় দেওয়া হয়। সে ভেবেচিন্তে একটা টিম তৈরি করতে পারে। আগে সেটা হত না। একটা-দু’টো সিরিজ হারলে ক্যাপ্টেনকে সরিয়ে দেওয়া হত।

পত্রিকা: আর এই যে ধোনির টিম ইন্ডিয়া এত ভাল করছে। চার-পাঁচ জন সিনিয়রকে বাইরে রেখেও দেশে-বিদেশে জিততে অসুবিধা হচ্ছে না। জাম্পটা কী ভাবে হল?
সৌরভ: টেস্ট আর ওয়ান ডে-কে একসঙ্গে ধরাটা ঠিক হবে না। ইন্ডিয়ার ওয়ান ডে পারফরম্যান্স দেখে কিছু বলা উচিত নয়। ওয়ান ডে-তে কিন্তু গত দু’বছরে ধোনিদের খুব একটা উতরাইয়ের মধ্যে পড়তে হয়নি। বরাবরই ভাল খেলেছে। দেখতে হবে, টেস্ট ক্রিকেটে কী করছে। তার পর এ সব রিমার্কস দেওয়া ভাল।

পত্রিকা: কিন্তু এত যে সাফল্য। টিমটা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতছে। জিম্বাবোয়েতে জিম্বাবোয়েকে ৫-০ ওড়াচ্ছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাচ্ছে। কোথাও গিয়ে মনে হয় না যে ফ্লেচার-জমানা কি রাইট-রেজিমকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল?
সৌরভ: কারও সঙ্গে কারও এ রকম তুলনা চলে না। (ভ্রু কুঁচকে অল্প উত্তেজিত হয়ে) আর সত্যি রাইট-রেজিমকে চ্যালেঞ্জে ফেলে দিচ্ছে কি?

পত্রিকা: ধোনিরা তো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতলেন।
সৌরভ: হ্যাঁ জিতেছে। (এ বার কেটে কেটে) কিন্তু আমি মনে করি না রাইটের সঙ্গে ফ্লেচারের কোনও তুলনা টানা যায় বলে...তুলনাই হয় না।

পত্রিকা: অন্য প্রসঙ্গে আসি। আপনি এক দিকে প্রবল সফল ক্রিকেটার। আবার তুমুল সফল ক্যাপ্টেন। একই সঙ্গে দুর্দান্ত সঞ্চালক, কমেন্ট্রি বক্সে অপ্রতিরোধ্য। এক কথায় সুপার পারফর্মার। কাউকে যদি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো সুপার পারফর্মার হতে হয়, কী করতে হবে?
সৌরভ: বলা মুশকিল। জীবনে কাউকে সুপার পারফর্মার হতে গেলে কী করতে হবে, সত্যি বলতে পারব না। কিন্তু ক্রিকেটের ক্ষেত্রে কী করতে হবে, বলতে পারি।

পত্রিকা: কী করতে হবে?
সৌরভ: সঞ্চালনা বা কমেন্ট্রির কথা উঠল ঠিকই। আমার মনে হয়, হোস্ট বা কমেন্ট্রি করার চেয়ে অনেক কঠিন টেস্ট ম্যাচে সেঞ্চুরি করা। ক্রিকেটটা কমিটমেন্টের ব্যাপার। মানে, তুমি কতটা নিজের ক্রিকেটের প্রতি দায়বদ্ধ। কতটা খাটুনি তুমি বরাদ্দ রাখছ। আর হ্যাঁ, কতটা ভয়ডরহীন তুমি থাকতে পারছ। দশ-পনেরোটা টেস্ট নয়। তোমাকে যদি একশোটা টেস্ট খেলতে হয়, এগুলো কিন্তু দরকার পড়বে।

পত্রিকা: সঞ্চালনার প্রসঙ্গ যখন উঠল, তখন আরও একটা কথা জিজ্ঞেস করার আছে। দাদাগিরিতে আপনাকে দেখা যায়, অতি সহজে প্রতিযোগীদের সঙ্গে মিশে যাচ্ছেন। মাঠের সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে যার সঙ্গে কিছুতেই মেলানো যায় না। এই অ্যাডজাস্টমেন্টটা কী ভাবে করেন?
সৌরভ: আরে, আমি তো এ রকমই! ক্রিকেট মাঠে আমার যে কড়া চেহারাটা দেখতেন, ওটা ছিল ওখানকার সাফল্য পাওয়ার রাস্তা। আর দাদাগিরিতে যেটা দেখেন, সেটা এখানকার সাফল্যের রাস্তা। জীবনের দু’টো সম্পূর্ণ ভিন্ন অ্যাভিনিউ, দু’টো তাই আলাদা মাপকাঠি। তবে দাদাগিরি আমার কাছে বিরাট একটা আই ওপেনার বলতে পারেন।

পত্রিকা: কেন?
সৌরভ: কারণ দুনিয়াটা সম্পূর্ণ আলাদা বলে। আসলে এক জন ক্রিকেটার হয়ে আপনি যদি মিস্টার বচ্চনের লিস্টে ঢুকে পড়তে পারেন, তা হলে সেটা বোধহয় প্রশংসার দাবি রাখে। আবার মিস্টার বচ্চন যদি দ্রাবিড়-সচিন-সৌরভের সঙ্গে লিস্টে ঢুকে খেলতে নেমে পড়েন, সেটাও তেমনই। তাই না?

পত্রিকা: আর মিস্টার বচ্চনের মতো আপনার কেবিসি সঞ্চালকের চেয়ারে বসতে ইচ্ছে করে না?
সৌরভ: ওটা মিস্টার বচ্চনেরই শো। যত দিন না উনি ওটা ছাড়ছেন, কেবিসি মিস্টার বচ্চনেরই থাকবে। যার যেটা, তার সেটা!

পত্রিকা: কিন্তু আপনার দাদাগিরির টিআরপিও তো কিছু কম নয়। উত্তরোত্তর বাড়ছে। তা হলে আপনি নন কেন?
সৌরভ: বললাম তো, যার যেটা, তার সেটা। দাদাগিরি এত সফল কেন? কারণ এটা সৌরভ গাঙ্গুলির শো বলে। আবার কেবিসি সফল কেন? কারণ, ওটা মিস্টার বচ্চনের শো বলে। অন্য কারও অস্তিত্বের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া কঠিন, বুঝলেন?

ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.