‘যত দিন এন শ্রীনিবাসনরা থাকবে,
তত দিন একটা আদিত্য বর্মাও থাকবে’
রাত সাড়ে ন’টা। ফোনে যে আদিত্য বর্মা-কে পাওয়া গেল, তাঁর গলা শুনলে মনে হবে না বোর্ড প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে তিন মাসের কঠিন যুদ্ধের পর তিনি এতটুকু ক্লান্ত। বরং বিহার সংস্থার সচিব শ্রীনিবাসন তো বটেই, তাঁর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধেও নতুন যুদ্ধের আগাম ঘোষণা করে রাখলেন...

প্রশ্ন: ছিয়ানব্বই দিন আগে একটা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধে। তখন কেউ আদিত্যপ্রতাপ বর্মাকে চিনত না। জানতও না, তদন্ত কমিশনের বৈধতা নিয়ে লোকটা বম্বে হাইকোর্টে মামলা করেছে। আজ সেই লোকটাই বোর্ড প্রেসিডেন্টের চেয়ারে শ্রীনিবাসনের ফেরার রাস্তা মোটামুটি বন্ধ করে দিল। আদিত্য বর্মা এখন নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারবেন?
আদিত্য: (অল্প হেসে) আমি যে এত দিন নিশ্চিন্তে ঘুমোইনি, আপনি জানলেন কী করে? গত কালও তো দিব্যি ঘুমিয়েছি!

প্র: সত্যি?
আদিত্য: আমি তো অপরাধ করিনি যে ঘুমোব না, টেনশন করব। প্রশ্নটা বরং শ্রীনিকে করতে পারেন। জিজ্ঞেস করুন না, এর পর থেকে ও আর ঘুমোতে পারবে কি না? আপনি ২১ জুনের কথা বলছেন তো? যে দিন মামলাটা উঠেছিল। সে দিন থেকেই কিন্তু জানতাম, আমিই জিতব। আজ না হলে কাল। কাল নইলে পরশু। এতটুকু টেনশন হয়নি।

প্র: টেনশন হয়নি? আপনিই বলেছিলেন যে আপনাকে নাকি প্রথমে কিনে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার আবার ফোনে মৃত্যু-হুমকিও পেয়েছেন!
আদিত্য: হ্যাঁ, পেয়েছি। তাতে কী?
প্র: কী বলছিল ফোনে?
আদিত্য: ভাঙা ভাঙা হিন্দিতে বলছিল, আমাকে নাকি মেরে ফেলবে। জিজ্ঞেস করছিল, মৃত্যুভয় নেই তোর? অশ্রাব্য গালাগাল দিচ্ছিল।

প্র: শুনে আপনি কী বললেন?
আদিত্য: বলে কী হবে? আমি তিনটে জিনিস করতে পারতাম। বাড়ির লোককে জানাতে পারতাম। মিডিয়াকে বলতে পারতাম। আর পুলিশকে বলতে পারতাম। একটাও করিনি। কেন জানেন? বাড়িতে জানালে বৃদ্ধা মা অস্থির হয়ে পড়তেন। পুলিশের কাছে গেলে লোকে ভাবত আদিত্য বর্মা ভয় পেয়েছে। আর মিডিয়াকে জানাইনি কারণ মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। আদালত একটা বিচার যখন দিতে চলেছে, তখন এ সব বলে অহেতুক জট তৈরি করতে চাইনি।
এর পরেও বলবেন, আদিত্য বর্মা টেনশন করে? ভাবতে পারেন, পুরো ব্যাপারটা আমার নিজের কাছে রেখেছি গত কাল। কাউকে বলিনি। কিন্তু যারা বোঝার তারা তো বুঝল।

প্র: কারা?
আদিত্য: কারা আবার? শ্রীনি আর ওর লোকজন! বুঝল তো যে আদিত্য বর্মাকে কেনা যাবে না। ভয় দেখিয়ে মামলা তোলাও যাবে না। বরং যত বার শ্রীনিবাসন এ সব নোংরামোয় নামবে, তত বার আদিত্য বর্মা ওর জন্য পাল্টা ওষুধের ব্যবস্থা করে রাখবে!

প্র: আচ্ছা, আজ তৃপ্ত লাগছে না? যে লোকটাকে বোর্ডের অন্যান্য সদস্যরা ভয় পাচ্ছে, নির্বিবাদে তাঁর সমস্ত কথা মেনে নিচ্ছে, আপনি একা তাঁকে ধ্বংস করে দিলেন? মহাবলীপুরমের পার্টির একাই বারোটা বাজিয়ে দিলেন?
আদিত্য: আমি শ্রীনিকে ধ্বংস করিনি। ও নিজেই নিজেকে ধ্বংস করেছে। বম্বে হাইকোর্টের রায় মেনে নিলে ওকে তো এত দুর্দশায় আজ পড়তে হত না। কিন্তু ও কী করল? না, সুপ্রিম কোর্টে গেল। আর গিয়ে কী হল? না, নিজেকে উলঙ্গ করে দিল!
আর মহাবলীপুরমের পার্টির কথা বলছেন? জানতে চাইছেন, ওই সব খানাপিনা, মৌজ-মস্তির বারোটা বাজিয়ে আমি কতটা খুশি? একটা কথা বলি। শ্রীনিবাসন তেরো বছর ধরে বিহারের বাচ্চা ছেলেগুলোর ক্রিকেট খেলার স্বপ্নকে শেষ করেছে। আমরা অনুমোদিত সংস্থাই নই। আমাদের ছেলেদের বাইরের রাজ্যের গিয়ে খেলতে হয় ক্রিকেটে কেরিয়ার চাইলে। ঝাড়খণ্ডকে প্রোমোট করেছে।
যে লোকটা তিলে-তিলে শেষ করেছে বিহারের ক্রিকেটকে, তার আনন্দ-ফূর্তি আমি বসে বসে দেখব?

প্র: এত কিছুর পরেও তো শ্রীনিবাসন বলছেন যে, নির্বাচনে দাঁড়াবেন।
আদিত্য: শুনেছি। অবাক হইনি। লোকের যখন মস্তিষ্কবিকৃতি ঘটে, এ রকম অনেক কিছু বলে! আরে, আজ তো ওর আইনজীবী কোর্টে বলল গুরুনাথকে নাকি শ্রীনিবাসন জামাই হিসেবে চায়নি! ওর মেয়ে পছন্দ করেছে। ভাবতে পারেন?
এ বার থেকে শ্রীনি যা-ই করবে, নিজেই ঠেলা সামলাবে। আমি তো স্রেফ ক্যাটালিস্ট। ওর প্রত্যেকটা স্টেপ এ বার দেখবে সুপ্রিম কোর্ট। বেফাঁস কিছু করলে, বুঝবে কোর্ট কী জিনিস। সব কিছু তো আর টাকা দিয়ে কেনা যায় না!
প্র: লোকে এটাও বলছে, শ্রীনি নিজে না বসতে পারলেও এমন কাউকে প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসাবেন, যে কি না শ্রীনির ‘পাপেট’ হবে। রিমোট কন্ট্রোলটা শ্রীনির হাতেই থাকল। তাঁর নির্দেশেই বোর্ড চলবে।
আদিত্য: ভাল তো। শ্রীনিবাসনের জন্য আজ বোর্ড রাস্তায় নেমেছে। আদালতে গিয়ে অপমানিত হয়েছে। তার পরেও যদি বাকি বোর্ড কর্তারা ওর তোষামোদ করে, তা হলে আমার আর কিছু বলার নেই।

প্র: শ্রীনিবাসনকেও আজ কিছু বলতে চাইবেন না?
আদিত্য: (একটু ভেবে) বলব যে, ভাই তুমি যদি বাঁচতে চাও তো সুপ্রিম কোর্ট এখন যা বলছে, সেটা করো। বেশি শক্তি দেখাতে যেও না, আরও ঝামেলায় পড়বে। জানি তোমার টাকা আছে। তুমি মিথ্যে সাক্ষী জোগাড় করবে। বিভিন্ন লোককে কিনবে। আইনের ফাঁক খুঁজে ক্লিন-চিট জোগাড়ের চেষ্টা করবে। কিন্তু এখন কিছু করতে গেলে তোমার কপালে দুঃখ আছে।

প্র: আর কিছু?
আদিত্য: সরি, বোর্ড সদস্যদের নিয়ে আপনাকে বললাম না যে ওরা শ্রীনির পাশে দাঁড়ালে আমার কিছু বলার নেই। ওটা ঠিক নয়। বলার আছে।

প্র: কী?
আদিত্য: এটাই বলব যে তোমাদের হাতে এখনও সময় আছে। এখনও নিজেদের শোধরাও। এ রকম নোংরা লোকের সঙ্গে থেকো না। সরে এসো। নইলে আমাকে মনে রেখো।
মনে রেখো, যত দিন এন শ্রীনিবাসনরা থাকবে, তত দিন কিন্তু একটা আদিত্য বর্মাও থাকবে!

সুপ্রিম কোর্টের সওয়াল
জামাই চার্জশিট পেয়ে থাকলে শ্বশুর কেন ক্ষমতায় থাকবেন?
প্রেসিডেন্ট পদে আবার নির্বাচিত হতে আপনার এত কী উৎসাহ?
শ্রীনি-আইনজীবীর জবাব
শ্রীনি জানতেনই না যে ওঁর মেয়ে গুরুনাথের সঙ্গে প্রেম করছে।
খানিকটা ওঁর অমতেই বিয়েটা হয়। গুরুনাথকে কী করে ভাল
লাগল, এর উত্তর ওঁর মেয়েই দিতে পারবে।
মোদীর টুইট-বোমা
মাফিয়াদের পাণ্ডা শ্রীনিবাসনকে আটকে দেওয়ার জন্য
সুপ্রিম কোর্টের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.