শান্তিপ্রক্রিয়া ভেস্তে দিতে আরও হানার আশঙ্কা
নমোহন সিংহ পাকিস্তানের সঙ্গে কথা চালিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। কিন্তু, এই শান্তিপ্রক্রিয়া ভেস্তে দিতে মরিয়া চেষ্টা চালাবে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর সমর্থনপুষ্ট জঙ্গিরাও। কেন্দ্রকে দেওয়া একটি রিপোর্টে এ কথাই জানিয়েছে গুপ্তচর সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (র)। তাদের দাবি, লস্কর-ই-তইবার প্রধান হাফিজ সইদ পাক-অধিকৃত কাশ্মীর থেকে লাগাতার আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে যেতে চাইছেন। এই রিপোর্ট পাওয়ার পরে জম্মু-কাশ্মীরে সীমান্তের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নতুন করে ঢেলে সাজতে চাইছে নয়াদিল্লি।
গত কাল জম্মুর হিরানগর থানা ও সেনার সাম্বা ব্রিগেড অফিসে তিন জঙ্গি হামলা চালায়। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে তিন জঙ্গি নিহত হলেও ওই হামলায় সেনার এক লেফটেন্যান্ট কর্নেল-সহ দশ জন প্রাণ হারান। তদন্তকারীরা নিশ্চিত, ওই জঙ্গিদের আত্মঘাতী হামলা চালাতেই পাঠানো হয়েছিল।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের দাবি, কঠুয়ার কাছে নিয়ন্ত্রণরেখার একটি অংশে নদীনালা থাকায় সেখানে কোনও কাঁটাতার নেই। তিন জঙ্গির জুতোতেই প্রচুর কাদামাটি ছিল। ফলে ওই ফাঁক দিয়েই তারা হিরানগরে ঢুকেছিল বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু সীমান্তের ওপার থেকে আসার কোনও প্রমাণ না রাখার জন্য তিন জঙ্গির কেউই জিপিএস ব্যবহার করেনি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক অফিসার জানিয়েছেন, ২০০৮ সালেও সাম্বার সেনা ব্রিগেডের সদর দফতরে হামলা চালিয়েছিল লস্কর-ই-তইবা। সে বার জঙ্গিদের কাছ থেকে জিপিএস উদ্ধার হয়। এ বার সীমান্তের ওপার থেকে লস্করের কোনও রেডিও-বার্তাও ধরা পড়েনি। জঙ্গিরা হিরানগর থেকে বেরিয়ে যে ট্রাকে চেপেছিল, তা লক্ষ্য করে একটি হ্যান্ড-গ্রেনেড ছোড়ে। সেই গ্রেনেডটি কোথায় তৈরি তা পরীক্ষা করে জানার চেষ্টা চলছে।
র-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, এক দল জঙ্গিকে কাশ্মীরে ‘জেহাদ’-এর জন্য পাঠাতে চান হাফিজ সইদ। তাঁর প্রচারে দাবি করা হচ্ছে, মার্কিন সেনা আফগানিস্তান থেকে পুরোপুরি সরলেই সেখান থেকে দলে দলে ‘মুজাহিদিন’ এসে কাশ্মীরের ‘আজাদির’ লড়াইয়ে নামবেন। র জানিয়েছে, যখন সেনা, আধাসেনা বা পুলিশের অফিসার-জওয়ানরা বিশ্রাম নেবেন, তখনই হামলা চালাবে জঙ্গিরা। এর পিছনে উদ্দেশ্য দু’টি। এক, নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলা চললে তার প্রভাব অনেক বেশি হবে। সরকারি স্তরে অনেক বেশি উদ্বেগ ছড়াবে। দুই, সেনা ও আধাসেনা আরও বেশি সতর্ক হবে। কাশ্মীরের রাস্তাঘাটে আরও কড়া মনোভাব নিয়ে পাহারা দেবেন জওয়ানরা। আরও বেশি তল্লাশি, সন্দেহ, জিজ্ঞাসাবাদের ফলে কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের হেনস্থা বাড়বে। যার ফলে নিরাপত্তা বাহিনীর উপরেই ক্ষোভ তৈরি হবে। কোনও নিরীহ মানুষের মৃত্যু হলেই সেই ক্ষোভ বেরিয়ে আসবে। তৈরি হবে অশান্তি।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, গত কালের হামলার আগেই র-এর রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীর দফতর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাছে পাঠানো হয়েছিল। তারপরেও কেন নিরাপত্তা বাহিনী আরও সতর্ক হল না? গত কালের ঘটনায় নানা গোয়েন্দা সংস্থা, সেনা ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের অভিযোগ উঠেছে। অনেকের প্রশ্ন, এখনও কেন সমন্বয়ের অভাব কাটানোর ব্যবস্থা হল না?
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, ইউনাইটেড জেহাদ কাউন্সিলের সৈয়দ সালাউদ্দিন সম্প্রতি পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে দাঁড়িয়ে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর উপরে হামলা চালানোর জিগির তুলেছে। এই পরিস্থিতিতে জম্মু-কাশ্মীরে রক্তপাত বাড়বে বলেই আশঙ্কা গোয়েন্দাদের।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.