জলেই গেল বনসৃজন প্রকল্প
রিকল্পনা ছিল বনসৃজনের। কিন্তু জমে থাকা বৃষ্টির জলে লক্ষাধিক টাকার এই প্রকল্প ভেস্তে গেল। এ বছর অরণ্য সপ্তাহে সেই প্রকল্পেরই সুচনা করেছিল কলকাতা পুরসভা। গত বছরেও এমন পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। যদিও পুরকর্তৃপক্ষের দাবি, এই প্রকল্প ফের নতুন করে তৈরি হবে।
পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, “জোকা এলাকা পুরসভায় সংযোজিত হওয়ার পরেই এলাকায় বনসৃজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত বছর পরিকাঠামোগত অসুবিধা থাকায় তা করা যায়নি। সেই কারণেই এই বছর অরণ্য সপ্তাহে এই প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছিল। কিন্তু বেশি বৃষ্টি হওয়ায় অধিকাংশ গাছের চারা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখানে ফের নতুন করে সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের পরিকল্পনার কথা ভাবছে পুরসভা।”
পুরসভা সূত্রে খবর, জোকার বাঁকরাহাট এবং মহাত্মা গাঁধী রোড সংলগ্ন রাস্তার দু’পাশে পুরসভা বনসৃজনের পরিকল্পনা করেছিল। লক্ষাধিক টাকা খরচ করে ছাতিম, জারুল, নিম, অর্জুন, মেহগনি সমেত বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করা হয়। কিন্তু গাছ লাগানোর কিছু দিনের মধ্যেই এখানে বৃষ্টিতে জল জমে যায়। জল বেরোতে এখানে অনেক সময় লাগে। দিন পনেরোর বেশি এই জায়গা জলে ডুবে থাকায় বেশির ভাগ গাছের চারাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
এ দশা বনসৃজন প্রকল্পের। পড়ে আছে ফাঁকা খাঁচা।
পুরসভার উদ্যান দফতরের এক আধিকারিক বলেন, এখনও পর্যন্ত তাঁরা জানতে পারেননি ক’টা চারা বেঁচেছে। শুধু এই এলাকাই নয়, ঠাকুরপুকুরেও বেশ কিছু গাছের চারা এই বর্ষায় লাগানো হয়েছিল। সেগুলিও বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে বলে পুর-আধিকারিকের দাবি। তবে, এখানে চারার সংখ্যা কম ছিল। উদ্যানবিদ রঞ্জিত সামন্ত বলেন, “ যে কোনও চারাগাছ যদি তিন দিন জলমগ্ন থাকে তা হলে সেই গাছের চারা নষ্ট হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।”
যে এলাকায় জল জমে সেই এলাকা পুরসভা বৃক্ষরোপণের জন্য চিহ্নিত করল কেন?
পুরকর্তৃপক্ষ জানান, বৃষ্টির পরিমাণ এ বার অন্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি। এ ছাড়াও এই অঞ্চল সবে কলকাতা পুরসভার মধ্যে এসেছে। সেই কারণে কোথায় কী ভাবে জল দাঁড়ায় তার ধারণাও কম ছিল। শহরের মধ্যে সে সব জায়গায় বনসৃজন হয়েছে সেখানে যাতে বেশি দিন জল না দাঁড়ায় তার যথাযথ ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, একটি অঞ্চলে ছোট গাছ বসানোর জন্যও দু’টি গাছের মধ্যে দূরত্ব কম করে ৬ থেকে ১০ ফুট থাকা দরকার। বড় গাছের জন্য প্রয়োজন অন্তত ২০ ফুট জায়গা। এই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়িত করার জন্য বড় জায়গা দরকার। সেই কারণেই জোকার ফাঁকা জায়গা বাছা হয়েছিল বলে পুরকর্তৃপক্ষ জানান।
মেয়র পারিষদ (নিকাশি) রাজীব দেব বলেন, “জোকা এবং ঠাকুরপুকুর অঞ্চলে বৃষ্টির জল বেরনোর মূল পথ হল খাল। খালের পলি যত ক্ষণ না পরিষ্কার করা হচ্ছে তত দিন এই সমস্যা থাকছে। সেচ দফতরকে এই বিষয়ে জানানো হয়েছে।”
রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ঠাকুরপুকুর ও বাকরাহাট অঞ্চল সংলগ্ন জোকার জমা জল বেগর ও চড়িয়াল খাল দিয়েই বেরোয়। এখানে পলি থাকায় এবং কোথাও কোথাও খালধার দখল করে নির্মাণ হওয়ার ফলে জল বেরনোর ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছে। অনেক দিন ধরেই এখানে জল জমে থেকেছে। তবে সেচ দফতর এখানে কাজ শুরু করেছে।”

ছবি: অরুণ লোধ।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.