ভাঙচুরের ঘটনার ১৩ দিন পরে দমদমের ক্রাইস্ট চার্চ স্কুলে মেরামতির কাজ শুরু হল।
চার্চ অফ নর্থ ইন্ডিয়ার কলকাতা ডায়োসেসের সাম্মানিক সচিব আবির অধিকারী মঙ্গলবার বলেন, “পুজোর আগেই স্কুল খোলা হবে। তাই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামতির কাজ করতে হবে।” আবিরবাবু জানান, পুলিশি তদন্ত ও ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য এতদিন ভাঙা অংশে স্কুল পরিচালন সমিতি হাত দিচ্ছিল না। ভাঙচুরের ঘটনার তদন্তের কাজ শেষ হয়েছে কি না, তা গত শনিবার ব্যারাকপুর কমিশনারেটের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ভাঙা অংশে আর কিছু তদন্ত করার নেই। ফরেন্সিক তদন্তও শেষ। তাই পুলিশের অনুমতি নিয়েই এ দিন থেকে স্কুলের মেরামতির কাজে হাত দেওয়া হয়েছে। |
এ দিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ স্কুলে আসেন পরিচালন সমিতির সদস্যরা এবং কয়েক জন শিক্ষিকা। সেখানে তখন পুলিশও উপস্থিত ছিল। খোলা হয় শিক্ষিকাদের ঘর, অফিস ঘর ও প্রধান শিক্ষিকার ঘরও। সে দিনের ভাঙচুরের ঘটনায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল প্রধান শিক্ষিকার অফিস এবং অডিটোরিয়াম। প্রধান শিক্ষিকার ঘর খুলে সকলে দেখেন, মাটিতে ছড়িয়ে রয়েছে কাচের টুকরো। চারদিকে লণ্ডভণ্ড অবস্থায় পড়ে জরুরি নথিপত্র। ভাঙা চেয়ার-টেবিল, কম্পিউটারের অংশও বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। প্রথমে ভাঙা জিনিসপত্র সরানোর কাজে হাত দেন সাফাইকর্মীরা। স্কুলের অডিটোরিয়াম-সহ বারান্দায় পড়ে থাকা যাবতীয় জানলা-দরজার কাচ সাফ করার কাজ শুরু হয়। চলতে থাকে ভাঙা চেয়ার-টেবিল মেরামতিও। আবিরবাবু জানান, ভাঙচুরের সময়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি খোয়া গিয়েছে। কিছু নষ্টও হয়ে গিয়েছে। এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত যে সব নথি খোয়া গিয়েছে, তা পুনরুদ্ধারের জন্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সাহায্য নেওয়া হবে। স্কুল কর্তৃপক্ষের কয়েক জন জানান, খুব শীঘ্রই শিক্ষিকাদের সঙ্গে পরিচালন সমিতির বৈঠক হবে। সেখানেই নির্ধারিত হবে স্কুল খোলার দিন।
এ দিকে, স্কুল খোলা নিয়ে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা আরও বেড়েছে। স্কুলে পঠনপাঠন চালুর দাবি জানিয়ে মূল গেটে পোস্টারও পড়েছে বেশ কয়েকটি। এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা জানায়, প্রি-টেস্টের মৌখিক পরীক্ষা চলাকালীন স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা খুবই চিন্তিত।
এ দিকে, স্কুল ভাঙচুরের ঘটনায় এ দিন কোনও অভিভাবক বা বহিরাগতকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। সে দিনের ঘটনায় রেশমি দে এবং পাপিয়া মজুমদার নামে দুই অভিভাবককে ভাঙচুর করতে দেখা গিয়েছিল সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে। পুলিশ জানিয়েছে, এই দুই অভিযুক্ত এখনও অধরা। ধরা যায়নি আরও কয়েক জন অভিযুক্তকে।
এ দিন ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হয় পম্পা ঘোষ নামে এক অভিভাবককে। তাঁকে স্কুল ভাঙচুরের অভিযোগে তিন দিন আগে তেঘরিয়ার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বিচারক তখন তাঁকে তিন দিনের জেল হেফাজত দিয়েছিলেন। এ দিন তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর না করে আদালত ফের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। |