কারাট-কণ্ঠে আশা, ফব-র রিপোর্টে ব্যর্থতা
লোকসভা ভোটে কংগ্রেস এবং বিজেপি-র বাইরে বিকল্প সরকার গড়ার লক্ষ্যে বামপন্থীদের বড় ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানালেন প্রকাশ কারাট। বাম ও গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য বাড়ানোর জন্য বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চকে ব্যবহার করলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক। আবার ঘটনাচক্রে, সেই পার্টি কংগ্রেসের জন্যই তৈরি ফব-র সাংগঠনিক রিপোর্টে মানা হল, তাদের সাংসদ ও বিধায়কেরা প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ!
বাম শক্তির জোর বাড়ানোর আশা আর বাস্তবের এই ফারাকের ছবিই চিহ্নিত করে রাখল ফ ব-র ১৭তম পার্টি কংগ্রেসকে।
মঞ্চে প্রকাশ কারাট।
—নিজস্ব চিত্র
দেড় বছর আগে কোঝিকোড়ে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চে দাঁড়িয়ে ঈষৎ ক্ষোভের সুর শুনিয়ে এসেছিলেন এ বি বর্ধন ও দেবব্রত বিশ্বাস। বাম ঐক্য শুধু কয়েকটা বৈঠকে সীমাবদ্ধ থাকছে, জাতীয় থেকে একেবারে তৃণমূল স্তর পর্যন্ত ঠিকমতো সমন্বয় থাকছে না এই ছিল সিপিআই এবং ফ ব-র ক্ষোভ। তার কয়েক মাস পরেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থনের সিদ্ধান্ত ঘিরে স্পষ্ট হয়েছিল এক দিকে সিপিএম-ফব ও অন্য দিকে সিপিআই-আরএসপি’র বিভাজন। এ বার লোকসভা ভোটের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে কোনও ঝুঁকির পথে যাননি কোনও বাম দলের নেতৃত্বই। চেন্নাইয়ের আরাইগনার আন্না আরঙ্গম হলে এ দিন সিপিএমের কারাট, সিপিআইয়ের ডি রাজা ও ফব-র দেবব্রতবাবুর বক্তব্য একেবারে নিখুঁত সুরে বাঁধা রইল। সেখানে একমাত্র ভিন্ন সুর বরং ফব-র সাংগঠনিক রিপোর্টই!
দিল্লিতে জাতীয় সংহতি পরিষদের বৈঠকে আটকে পড়েছিলেন কারাট। তবু ফব-র পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চে বার্তা দেওয়া জরুরি বুঝে সন্ধ্যায় উড়ে এলেন চেন্নাই। সংক্ষিপ্ত অবসরে তাঁর বার্তাও স্পষ্ট “লোকসভা ভোটের আগে লড়াই চলবে ইউপিএ-র জন-বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে। সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থানের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। তাই একজোট করতে হবে ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক শক্তিগুলিকে।” শুধু মুখে বিকল্পের কথা বললে যে হবে না, অর্থনীতি ও রাজনীতির প্রশ্নে বিকল্প নীতির সন্ধানও যে দিতে হবে, তা-ও বলেছেন কারাট। তাঁর কথায়, “দিল্লিতে গত জুলাইয়ে চার বাম দলের কনভেনশন থেকে যে কর্মসূচি তৈরি করেছি, তার ভিত্তিতে বাকি দলগুলির সমর্থন নিয়েই বিকল্পের আহ্বানকে বিশ্বাসযোগ্য করতে হবে।” কারাট চার বাম দলের কথা বললেও আরএসপি-র কেউ ছিলেন না। অসুস্থতার জন্য চেন্নাই-সফর বাতিল করেছিলেন আরএসপি-র সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রচূড়ন। বাকিরা সঙ্গতে ত্রুটি রাখেননি। দেবব্রতবাবু বলেন, “কংগ্রেসের নব্য উদারনীতি এবং বিজেপি-র সাম্প্রদায়িক অভিসন্ধি, গণতান্ত্রিক শক্তির সাহায্য নিয়ে দু’টোকেই হারাতে হবে।” রাজা জানান, জন-বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অঙ্গ হিসাবে ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকে ‘দিল্লি ঘেরাও’ অভিযান হবে। ছিলেন সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন নেতা বালসুন্দরমও।
ফব-র যতটুকু শক্তি, তার মূল উৎস যে হেতু পশ্চিমবঙ্গই, তাই বাংলার কথা বলতেও কারাট ভোলেননি। বলেন, “তৃণমূল বামেদের পিষে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু এ ভাবে বামেদের দমন করা যাবে না! ” তবে সেই লড়াইয়ের সৈনিক জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ফব। রিপোর্টে তারা বলেছে, ‘আমাদের সাংসদ-বিধায়কেরা পদ কাজে লাগিয়ে যে কোনও স্তরেই দলকে শক্তিশালী করতে ব্যর্থ।... পঞ্চায়েত থেকে সংসদ পর্যন্ত নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সুযোগ ও নিজ নিজ মঞ্চ কাজে লাগাতে আরও তৎপর হতে হবে’।
বাস্তব কঠোর! আশা তবু মধুর!

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.