|
|
|
|
ইন্টারনেটে গগৈয়ের নামে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট |
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি |
সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে তাঁর নাম ‘সার্চ’ করলেই দেখা যাচ্ছে হাসিমুখে সনিয়া গাঁধীর পাশে দাঁড়িয়ে তিনি। কংগ্রেস সভানেত্রীর মাথায় পরিয়ে দিচ্ছেন অসমীয় জাপি। হাতে সরাই। আশপাশে তাঁরই নানা ছবির ‘কোলাজ’। ‘ফেসবুক’, ‘টুইটার’-এ এমনই প্রোফাইল তৈরি হয়েছে অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের নামে। তবে গগৈ নন, এটির স্রষ্টা অন্য কেউ। ভুয়ো ওই প্রোফাইলে গগৈ মন্ত্রিসভার সদস্যদের বিরুদ্ধে মন্তব্য করা হচ্ছে। দলের অন্তর্দ্বন্দ্বে এমনিতেই অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে অসমের প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। গগৈয়ের নামে ভুয়ো প্রোফাইলে তা আরও বেড়েছে। অবস্থা সামলাতে এ নিয়ে কাল সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সিআইডি সূত্রে খবর, সাইবার অপরাধ-দমন শাখা অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। এএসপি পর্যায়ের এক অফিসার তদন্ত করছেন। টুইটার ও ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলি বন্ধের আর্জি জানানো হচ্ছে।
গগৈ-বিরোধী শিবিরের নেতা অসমের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার ‘টুইটার-প্রেম’ কারও অজানা নয়। নিজের মনের কথা, রাজনৈতিক বক্তব্য, ক্ষোভ—সবই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে লেখেন তিনি। আমজনতার সঙ্গে মত বিনিময়ও করেন। একই পথে হাঁটেন মুখ্যমন্ত্রীর ছেলে গৌরব গগৈও। মানুষের কাছে পৌঁছতে ‘টুইটার’-এ অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রীও। মাঝেমধ্যে সেখানে রাজ্যের উন্নয়ন নিয়ে মন্তব্য করতেন। সম্প্রতি, গগৈয়ের প্রোফাইলের ধাঁচেই তাঁর নামে ভুয়ো অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়।
কয়েকদিনের মধ্যেই ‘আসলের’ চেয়ে তাঁর ‘ভুয়ো’ প্রোফাইলের জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় চিন্তায় পড়েছেন গগৈ। ভুয়ো প্রোফাইলে নিয়মিত গগৈ-শিবিরের মন্ত্রী রকিবুলের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন ‘নকল’ গগৈ। কখনও বলছেন, ‘বনবিভাগের ব্যর্থতায় অসম গন্ডার হত্যায় নজির গড়েছে।’ কখনও মুখ্যমন্ত্রীর কাছের লোক বলে পরিচিত বিদ্যুৎমন্ত্রী প্রদ্যোৎ বরদলৈয়ের বিরুদ্ধেও মন্তব্য করা হচ্ছে।
এ কথা ছড়ানোর পর সিআইডি-কে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেন গগৈ। ভুয়ো প্রোফাইল বন্ধ করার পাশাপাশি, কারা তা ‘চালনা’ করছে তা-ও খুঁজে বের করতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। গগৈ শিবিরের সন্দেহ, এ সবের পিছনে দলের বিরোধীদের হাত থাকতে পারে। গন্ডার-হত্যা নিয়ে সম্প্রতি হিমন্ত ও রকিবুলের কাজিয়া প্রকাশ্যে এসেছে। এরপরই, টুইটারে মুখ্যমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে রকিবুলের নিন্দা হওয়ায় সন্দেহ জোরদার হয়েছে। তবে, ভুয়ো ওই প্রোফাইলে লেখা হয়েছে—‘এটি মুখ্যমন্ত্রীর ব্যঙ্গাত্মক অ্যাকাউন্ট’।
সিআইডি-র বক্তব্য, ইন্টারনেটের ওই অ্যাকাউন্টে মন্ত্রীদের নামে গুরুতর অভিযোগ তোলা হয়েছে। ব্যঙ্গের মোড়কে নয়, সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর ছবি, বনমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করা হয়েছে। ভবিষ্যতে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে সংবেদনশীল বা সাম্প্রদায়িক মন্তব্যও জুড়ে দেওয়া হতে পারে। যা থেকে গন্ডগোল ছড়ানোর আশঙ্কা থাকবে।
|
|
|
|
|
|