|
|
|
|
কর্মাটাঁড়ে বিদ্যাসাগরের বাড়িতে চোরের উৎপাত |
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় • রাঁচি |
রাতের অন্ধকারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বাড়িতে হানা দিচ্ছে চোরের দল! ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ার কর্মাটাঁড়ে। তাদের উৎপাতে ওই বাড়ি ঘিরে পর্যটনকেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা ‘বিশ বাঁও জলে’।
জামতাড়া শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে আদিবাসী অধ্যুষিত ছোট্ট জনপদ কর্মাটাঁড়। পুরনো নথি থেকে জানা যায়, জীবনের শেষ ১৮ বছর সেখানেই কাটিয়েছিলেন বিদ্যাসাগর। কর্মাটাঁড় স্টেশনটি এখন তাঁরই নামে পরিচিত।
‘ঝাড়খণ্ড বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন’ সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িটি জবরদখল হয়ে গিয়েছিল। অনেক চেষ্টার পর সেটি দখলমুক্ত করা হয়। বাড়িটিকে ঘিরে একটি পর্যটন-কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা করেছিলেন সংগঠনটির সদস্যরা। বিদ্যাসাগরের বাড়িটিকে সংস্কার করা হয়। সেটির পাশে পর্যটকদের জন্য দুটি অতিথি নিবাসও তৈরি করা হয়েছিল। |
|
কর্মাটাঁড়ে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ঘর। রয়েছে তাঁর ব্যবহার করা সেই খাটও। —নিজস্ব চিত্র। |
কিন্তু নজরদারির অভাবে সেখানেই এখন হানা দিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। দরজার তালা ভেঙে বিদ্যাসাগরের ব্যবহৃত কিছু জিনিসপত্র-সহ চুরি গিয়েছে। সেখানে এখন শুধু তাঁর ব্যবহৃত খাটটিই পড়ে রয়েছে। অতিথি নিবাস থেকে চুরি হয়েছে দরজার ছিটকিনি, জলের কল, কয়েকটি পাখা, ইনভার্টার-সহ অন্য জিনিসপত্র।
সংগঠনের সভাপতি সিদ্ধার্থজ্যোতি রায় বলেন, “জামতাড়ার কাছেই বাংলার সীমানা। সেখান থেকে সহজেই পর্যটকরা সপ্তাহান্তের ছুটিতে কর্মাটাঁড়ে বিদ্যাসাগরের বাড়ি দেখতে যেতে পারেন। আশপাশের জায়গাগুলিও দেখার মতো।” তিনি জানান, দুষ্কৃতীদের উৎপাতে নির্মাণস্থল থেকে প্রতিদিনই জিনিসপত্র চুরি হচ্ছিল। কোনওভাবে কাজ শেষ করা হয়। কয়েকদিন আগে ওই অতিথিনিবাসগুলি থেকে অনেক কিছু চুরি হয়ে গিয়েছে। সিদ্ধার্থবাবুর কথায়, “অনেক কষ্টে টাকা জোগাড় করে কাজ এগোনোর চেষ্টা করছি। কিন্তু এ সব ঝামেলায় তা আটকে যাচ্ছে।”
পরিস্থিতি এমনই গুরুতর যে, এ বার ১২ আশ্বিন (২৯ সেপ্টেম্বর) বিদ্যাসাগরের জন্মদিনও তেমনভাবে পালন করতে পারছে না ওই সংগঠন। সিদ্ধার্থবাবু জানান, বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকেরা এলেও, তাঁদের জন্য অতিথি নিবাসে থাকার মতো ব্যবস্থা নেই। তাই ছোটখাটো অনুষ্ঠান হবে।
সংগঠনের সদস্যরা জানাচ্ছেন, কর্মাটাঁড়ে চারটি বাঙালি পরিবার থাকেন। তাঁদের পক্ষে এ সমস্যার সঙ্গে লড়াই চালানো সম্ভব হচ্ছে না। নজরদারির অভাবেই এ সমস্যা হচ্ছে।
সমস্যা মেটাতে এখন বিদ্যাসাগরের উত্তরসূরিদের খুঁজছে সংগঠনটি। পাশাপাশি, ওই জায়গাটির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রাজ্য পর্যটন বিভাগের সঙ্গে কথাবার্তাও শুরু হয়েছে তাঁদের।
সিদ্ধার্থবাবু বলেন, “বিদ্যাসাগর বাঙালিদের আবেগ। কলকাতায় তাঁর বাড়ি সংরক্ষণ করা হয়েছে। ওঁনার পরিবারের কেউ এ কাজে এগিয়ে এলে সুবিধা হয়।”
রাজ্য পর্যটন দফতরের প্রধান সচিব সজল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এ বিষয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে কথাবার্তা হয়েছে। পর্যটন দফতরের প্রতিনিধিরা জায়গাটি পরিদর্শনের পরই সিদ্ধান্ত নিতে পারে।”
|
|
|
|
|
|