বিজেপিকে ঠেকানোই লক্ষ্য, বোঝালেন কারাট
লোকসভা ভোটের পরে বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখাই যে সিপিএমের মূল লক্ষ্য, তা সাফ জানিয়ে দিলেন প্রকাশ কারাট। শনিবার কলকাতায় দলের বর্ধিত রাজ্য কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে এসে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক অবশ্য কংগ্রেস প্রশ্নে দলের ভবিষ্যৎ অবস্থান স্পষ্ট করেননি। এ ব্যাপারে তাঁর মন্তব্য, “কী হবে, তা লোকসভা ভোটের পরে দেখা যাবে।”
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে কারাট জানান, লোকসভা ভোটের পরে তাঁর দল কোনও ভাবেই কংগ্রেসকে সমর্থন করবে না। দলের সাধারণ সম্পাদকের ওই মন্তব্য নিয়ে সিপিএমের অন্দরে প্রতিক্রিয়া হয়। বিশেষত বঙ্গ সিপিএমে। কারাট কংগ্রেস সম্পর্কে কট্টর অবস্থান নেওয়ার কথা বললেও পলিটব্যুরোর সদস্য তথা সিপিএমের রাজ্যসভার নেতা সীতারাম ইয়েচুরি, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসু, নিরুপম সেনরা তার পক্ষপাতী নন। এ রাজ্যে লোকসভা ভোটে কংগ্রেস-সিপিএম-তৃণমূল ত্রিমুখী লড়াই হলে সিপিএমের লাভ। এ কথা মাথায় রেখেই ইয়েচুরি-বুদ্ধবাবুরা কংগ্রেস সম্পর্কে নরম মনোভাবের পক্ষে।
সে ক্ষেত্রে লোকসভা ভোটের পরে তাঁর দল কি কংগ্রেসকে সমর্থন করবে? কারাটের জবাব, “আমাদের অন্যতম লক্ষ্য সাম্প্রদায়িক শক্তি বিজেপিকে ক্ষমতার বাইরে রাখা। তার জন্য যা করা দরকার, করতে হবে।” বিভিন্ন অ-কংগ্রেসি এবং এনডিএ-র বাইরে থাকা দলকে নিয়ে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ জোট গড়ার চেষ্টা হচ্ছে বলেও কারাট জানান। তিনি বলেন, “আমাদের প্রধান লক্ষ্য দিল্লিতে ধর্মনিরপেক্ষ প্রগতিশীল সরকার গঠন। সে ক্ষেত্রে বিজেপিকে বাদ দিয়ে অন্য কোন দলকে সমর্থন করা যাবে, তা নিয়ে লোকসভা ভোটের পরেই কথা হবে।”
এ দিন রাজ্য কমিটির বর্ধিত বৈঠকে বিভিন্ন জেলার নেতারা পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে আলোচনা করেন। তাঁদের অভিযোগ, সন্ত্রাস মোকাবিলায় যতটা সক্রিয়তার প্রয়োজন ছিল, অনেক ক্ষেত্রেই তা করা যায় নি। কয়েক জন অবশ্য এর জন্য পুলিশের ভূমিকাকেও দায়ী করেন। ভবিষ্যতে সন্ত্রাস মোকাবিলায় নির্দিষ্ট টিম তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন একাধিক জেলা নেতা। সেই সঙ্গে কোথাও কোনও ঘটনা ঘটলে জেলা বা রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় না থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার উপরেও জোর দেন জেলার বহু নেতা।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুর পেশ করা রিপোর্টে বলা হয়েছে, তৃণমূলের সন্ত্রাস মোকাবিলায় কয়েকটি জেলা (উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা) যে সক্রিয়তা দেখিয়েছে, অন্য কয়েকটি জেলা (পশ্চিম মেদিনীপুর, বর্ধমান) তা পারেনি। কেন পারল না, তা নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের আত্মসমীক্ষা করতে হবে বলে ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে। জবাবে জেলার নেতাদের বক্তব্য, লোকসভা, বিধানসভার পরে পঞ্চায়েত ভোটেও হার হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সব ব্যাপারেই কেবল তাঁদের দিকে আঙুল তোলার রীতি ছাড়তে হবে আলিমুদ্দিনকে। ওই নেতাদের বক্তব্য, রাজ্য নেতাদেরও আত্মসমীক্ষা করতে হবে, হারের দায় নিতে হবে তাঁদেরও।
সিপিএম নেতাদের একাংশের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটে হারতে হলেও যে ভাবে শাসক দলের সন্ত্রাস মোকাবিলা করে পূর্ব মেদিনীপুর বা বাঁকুড়া জেলায় বামেরা ৪০% ভোট পেয়েছে, তা কর্মীদের উৎসাহিত করেছে। তাঁদের বক্তব্য, ভোটের ফল বিশ্লেষন করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের তুলনায় মুসলিম ও তফসিলি অধ্যুষিত এলাকায় বামেদের ফল কিছুটা ভাল হয়েছে। আগামী দিনে এই সব এলাকায় দলের তরফে আরও বেশি করে প্রচারের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.