খুলছে না মোদীর নাম ঘোষণার জট
রেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হবে কি হবে না এই নিয়ে বিতর্ক চরমে উঠল। চলছে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে বৈঠক।
রাজধানীতে গত এক সপ্তাহ ধরে ঘাঁটি গেড়ে বসে আছেন আরএসএস তথা সঙ্ঘ পরিবারের শীর্ষ নেতারা। আগামী দু’দিন আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বিজেপি-র সমস্ত শীর্ষ নেতাকে নিয়ে সমন্বয় বৈঠক হবে। তা ছাড়া আলাদা ভাবেও প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করবে আরএসএস। একই সঙ্গে চলছে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত, আরএসএস-এর অন্যতম শীর্ষ নেতা ভাইয়াজি জোশী প্রমুখের দফায় দফায় আলোচনা।
আরএসএস নেতা রামলাল সাধারণত বিজেপি এবং আর এসএস-এর মধ্যে সমন্বয় বজায় রাখেন। তিনি আজ সকালে দেখা করেছেন বিজেপি-র প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণীর সঙ্গে। বিজেপি সূত্রের খবর, আডবাণীকে সঙ্ঘের তরফে বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে যে আর বিলম্ব না করে মোদীকেই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে দেওয়া হোক। মোদীই যে বিজেপি-র প্রচারের প্রধান মুখ, সে কথা তুলে ধরে রামলালের বক্তব্য, বানজারা কাণ্ডের পর আরও বেশি করে দলের উচিত সর্বশক্তি দিয়ে মোদীকে রক্ষা করা। নয়তো কংগ্রেস একের পর এক প্রসঙ্গ তুলে মোদীকে আক্রমণ করে যাবে।
আডবাণী সঙ্ঘ পরিবারকে এবং খোদ মোদীকেও জানিয়েছেন, যে তাঁর নেতৃত্বের বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক প্রচারের স্বর এতটাই উঁচুতে তুলে দেওয়া হয়েছে যে, কংগ্রেস গোটা আক্রমণই মোদী-কেন্দ্রিক করে ফেলেছে। এর ফলে আখেরে সুবিধাই হয়েছে কংগ্রেসের। এ বার তারা মোদীর বিরুদ্ধে একের পর এক বিষয় তুলে ধরে একমুখী প্রচার চালিয়ে যাবে। আডবাণীর বক্তব্য, গত দশ বছরে মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, নীতি নির্ধারণে আড়ষ্টতা ইত্যাদি নিয়ে যে সরকার-বিরোধী মনোভাব দেশে তৈরি হয়েছে, তার সুযোগ নেওয়া উচিত। কিন্তু দল সেই সুযোগ নিতে পারবে না মোদীকে সুরক্ষা দিতে গিয়ে।
বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজ এবং আডবাণী দু’জনেই এর আগে মোহন ভাগবতকে বলেছিলেন যে নভেম্বরে পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে যেন কোনও ভাবেই মোদীর নাম ঘোষণা না করা হয়। কারণ এই নির্বাচনগুলিতে বিজেপি খারাপ ফল করলে তার প্রভাব পড়বে মোদীর নেতৃত্বের উপরে। শুধু এই দুই শীর্ষ নেতাই নন, রাজ্যে ভোটের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানও আরএসএস-কে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, এমনিতেই তাঁর রাজ্য কঠিন লড়াই। তার আগে মোদীর নাম প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করলে মেরুকরণের ধাক্কা সামলাতে হবে তাঁকে। সেই বিপদ বাড়ুক, এটা তিনি চান না। আবার অন্য দিকে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পারিক্কর একাধিক সাক্ষাৎকারে পরোক্ষে গুজরাত দাঙ্গার প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন।
এই পরিস্থিতিতে আরএসএস নেতৃত্বকে আডবাণী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি এ বিষয়ে তাঁর আপত্তি স্পষ্ট ভাবেই জানিয়ে রাখলেন। এ বার সঙ্ঘ পরিবার আলোচনায় বসে যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিক।
মোদী শিবিরও অবশ্য চুপ করে বসে নেই। ছত্তীসগঢ়ের অম্বিকাপুরে তাঁর জন্য লাল কেল্লার মতোই মঞ্চের আয়োজন করেছিলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ। প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা নিয়ে রাজধানীতে যতই বিতর্ক দানা বাঁধুক, মানসিক ভাবে যে তিনি সেখানেই পৌঁছে গিয়েছেন আজ তার একটা বার্তাও দিলেন মোদী। সেই নকল লাল কেল্লার মঞ্চ থেকেই আজ বক্তৃতা দিয়েছেন মোদী। তাঁর বক্তব্য, “কংগ্রেস সোনাকে ধুলো করে ফেলতে পারে। তেলঙ্গানাই তার প্রমাণ।” তাঁর কথায়, “ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড এবং উত্তরাখণ্ড গঠনের সময়ে বাজপেয়ী সরকার সকলকে নিয়ে এগিয়েছিল। কংগ্রেসের সেই মানসিকতাই নেই।” বক্তৃতায় রমন সিংহের সঙ্গে মনমোহনের তুলনাও করেছেন মোদী। তাঁর বক্তব্য, “দিল্লি আর ছত্তীসগঢ়-দুই প্রান্তে দুই ডাক্তার আছেন। ছত্তীসগঢ়ে রয়েছেন মানুষের ডাক্তার। দিল্লিতে টাকার ডাক্তার।” গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর মতে, কংগ্রেসের ঔদ্ধত্য সীমাহীন। তারা চিরকালই জনবিরোধী নীতি নিয়ে চলেছে। কংগ্রেস নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত গরিবের ক্ষতে অ্যাসিড ঢেলে দেয়।
মোদীর ঘনিষ্ঠ শিবিরের বক্তব্য, লোকসভা নির্বাচনের আর দু’শো দিনও বাকি নেই। ফলে ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ নীতি না-নিয়ে এখনই উচিত ভোটের নেতৃত্ব দেওয়ার মুখ তৈরি করা। যত তাড়াতাড়ি সেটা হবে ততই দ্রুত বিজেপি প্রচারের জন্য ঝাঁপাতে পারবে।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.