হাওড়ায় নতুন মহাকরণের দেখভালের জন্য দু’টি নতুন থানা তৈরির সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। পাশাপাশি, হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটে ডিসি এসবি এবং এসি সিকিওরিটি পদমর্যাদার দু’জন অফিসার নেওয়ারও সিদ্ধান্ত হল।
মন্দিরতলায় এইচআরবিসি-র ১৪ তলা বাড়িটিতে নতুন মহাকরণ নিয়ে যখন সাজ সাজ রব, তখনই হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে চিঠি লিখে হাওড়া সিটি পুলিশের পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলে কয়েকটি প্রস্তাব পাঠান। তাঁর প্রস্তাব ছিল, নতুন মহাকরণ যে থানা এলাকায়, সেই শিবপুর থানাকে ভেঙে চ্যাটার্জিহাট ও বটানিক্যাল গার্ডেন নামে দু’টি থানা করা হোক। বড় ধরনের কোনও মিছিল-মিটিং বা জামায়েত নতুন মহাকরণের সামনে হলে, তা সামলানোর পরিকাঠামো হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের নেই। তাই ডিসি স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চ এবং এসি সিকিওরিটি পদ সৃষ্টি করে দু’জন অফিসার দেওয়া হোক।
সোমবার অজেয় রানাডে বলেন, “শিবপুর থানাকে ভেঙে দু’টি নতুন থানা করার সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে নেওয়া হয়েছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই নতুন থানার কথা ঘোষণা করা হবে। তা ছাড়া নুতন মহাকরণের নিরাপত্তার জন্য ডিসি এসবি এবং এসি সিকিওরিটি নামে দু’টি নতুন পদ তৈরি করা হয়েছে। খুব শ্রীঘ্রই ওই দু’টি পদে অফিসার যোগ দেবেন।”
|
নতুন মহাকরণে অগ্নি-সুরক্ষার প্রস্তুতি। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র। |
আগামী ৫ অক্টোবর থেকে হাওড়ায় নতুন মহাকরণে বসার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। হাতে আছে মাত্র ১৯ দিন। তাই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এইচআরবিসি ভবনের ভিতরে ও বাইরে কাজ চলছে দিনরাত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেহেতু নতুন মহাকরণের ১৪ তলায় বসবেন, তাই যে কোনও দুর্ঘটনা মোকাবিলা করার জন্য বিধাননগর থেকে আনা হচ্ছে দমকলের অত্যাধুনিক ‘স্কাইলিফ্ট’ ব্রন্টো। দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, এইচআরবিসি ভবনের ২০০ মিটারের মধ্যে ২৪ ঘণ্টা ধরেই রাখা থাকবে ৭ কোটি টাকা দামের এই হাইড্রলিক ল্যাডারটি। হাওড়ার পাশাপাশি কলকাতার কোনও বহুতলে আগুন লাগলে ল্যাডারটি নতুন মহাকরণের সামনে থেকেই নিয়ে যাওয়া হবে।
আগেই ঠিক হয়েছিল, নতুন মহাকরণের ভিতরের নিরাপত্তা দেখভাল করবে কলকাতা পুলিশ। যার দায়িত্বে থাকবেন ডিসি রিজার্ভ ফোর্স। বাইরের নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকবে হাওড়া সিটি পুলিশ। মহাকরণের বাইরের নিরাপত্তার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ঢেলে সাজা হচ্ছে। ঠিক হয়েছে, মহাকরণের ১৪ তলায় অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছতে গেলে ত্রিস্তর নিরাপত্তা বলয় পেরোতে হবে। যেমন প্রথমে প্রবেশ পথেই থাকছে মেটাল ডিটেক্টরের ডোর ফ্রেম। প্রয়োজনীয় অনুমতি দেখালে তবেই পুলিশকর্মীরা কাউকে ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেবেন। দ্বিতীয় নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে এইচআরবিসি ভবনের দোতলায়। সেই বলয় পেরিয়ে এর পরের তলগুলিতে যেতে গেলে সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিক বা মন্ত্রীর অনুমতি প্রয়োজন। তিন থেকে এগারোতলা পর্যন্ত যে সব দফতরগুলি থাকবে সেখানে সহজে পৌঁছতে পারবেন না বাইরের কেউ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাংবাদিকদের বসার জন্য ‘প্রেস কর্নার’ও তৈরি করা হচ্ছে দোতলাতেই। তৃতীয় নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হচ্ছে এগারোতলায়। ঠিক হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের অনুমতি ছাড়া ১২, ১৩ ও ১৪ তলায় ওঠা যাবে না। ওই তিনটি তলাকে ‘হাই সিকিওরিটি জোন’ বলে ধরা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, ওই তিনটি তলায় যে সব দফতর থাকবে, আগামী ২০ তারিখ থেকে তার ফাইলপত্র আনার কাজ শুরু হবে।
|