ডেঙ্গি রুখতে এলাকা ভাগ করে প্রচার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
নতুন করে ডেঙ্গির সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে শিলিগুড়ির বিভিন্ন ওয়ার্ডে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে এ দিন তাদের কাছে যে তথ্য এসেছে তাতে চিকিৎসাধীন জ্বরে আক্রান্তদের মধ্যে ডেঙ্গির জীবানু মিলেছে ৭৬ জনের শরীরে। তার মধ্যে ৩৪ জন শিলিগুড়ি শহর ও মহকুমার বিভিন্ন জায়গার বাসিন্দা। ৪২ জন জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে থাকা পুরসভার সংযোজিত ওয়ার্ডের। নিউ জলপাইগুড়ি রেল হাসপাতালে ডেঙ্গি আক্রান্ত কয়েকজন ভর্তি রয়েছেন বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, শহরের বিভিন্ন নার্সিংহোমগুলিতে অন্তত ৪০ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত ভর্তি রয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ এবং শিলিগুড়ি হাসপাতাল মিলিয়ে ভর্তি রয়েছেন অন্তত ৫৪ জন। তবে সন্দেহ ভাজন ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা অন্তত ১৫০ জন বলে তারা জানিয়েছেন। এ দিন পুরসভার ওয়ার্ড মাস্টার এবং ওয়ার্ডের সুপারভাইজারদের নিয়ে ডেঙ্গি প্রতিরোধে কী ভাবে কাজ করতে হবে তা নিয়ে কর্মশালা করে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। কী করে স্প্রে কার উচিত, বাসিন্দাদের তাঁরা কী করে বোঝাবেন সে সব নিয়েই কর্মশালা হয়। সেখানে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে মাশার লার্ভা মারার তেল স্প্রে করার উপর জোর দিতে বলা হয়েছে। |
|
ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে। অথচ মশার আঁতুরঘর শিলিগুড়ি
হাসপাতাল সংলগ্ন ভ্যাটেই। ছবি তুলেছেন সন্দীপ পাল। |
আক্রান্তদের জন্য রক্ত জোগাড় করা এবং অন্যান্য সমস্যায় সাহায্য করতে পুরসভায় হেল্প লাইন খোলার কথা। গত কয়েকদিন ধরে তা বলা হলেও এ দিন পর্যন্ত তা খোলা হয়নি বলে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ডেঙ্গি প্রতিরোধে পুর কর্তৃপক্ষ এবং স্বাস্থ্য দফতর যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারছে না বলেই বাসিন্দাদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন। বিরোধীরাও তা নিয়ে সরব। শহরের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধি এবং নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে নিয়ে এ দিন পুরসভায় বৈঠক করেন মেয়র। তবে অনেক নার্সিংহোমের প্রতিনিধিরা ছিলেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি সামলাতে পুরসভার তরফে একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা ভাগ করে ডেঙ্গি প্রতিরোধে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধিদের অভিযোগ, ডেঙ্গি পরীক্ষার জন্য প্রায় এক হাজার টাকা করে নিচ্ছে বিভিন্ন নার্সিংহোমগুলি। স্বাস্থ্য দফতর বিষয়টিকে না দেখাতেই এই পরিস্থিতি বলে অভিযোগ করেন মেয়র। তিনি বলেন, “এখনও শিলিগুড়ি হাসপাতালে ডেঙ্গি নির্ণয়ে ‘ম্যাক এলাইজা’ পরীক্ষার ব্যবস্থা হয়নি। মেশিন রয়েছে। শুধুমাত্র কিটের ব্যবস্থা করলেই তা করা যাবে।” বিষয়টি জানিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হবে বলে জানান পুর কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য দফতর ঠিক ভাবেই কাজ করছে বলে দাবি করেন দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবীর ভৌমিক। একের পর এক বৈঠক করে নানা পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হলেও তা কতটা বাস্তবায়িত হচ্ছে সে ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন পুরসভার বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলাম।
ডেঙ্গিতে সব থেকে বেশি আক্রান্ত হয়েছে পুরসভার ৪২ ও ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানে লিম্বু বস্তি, প্রকাশনগর ঘরে ঘরে বাসিন্দারা জ্বরে আক্রান্ত। ৩১-৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের অনেক এলাকাতেও ডেঙ্গি রয়েছে। এলাকায় পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দফতরের উদাসীনতা দেখে আত্মরক্ষার জন্য এলাকার বাসিন্দারাই কাজে নেমে পড়েছেন বলে জানান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দিলীপ সিংহ। আজ থেকে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে লিফলেট বিলি ক্যাম্প ইত্যাদি করা হবে বলে জানান মেয়র।
|
পুরনো খবর: ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে |
|