ফের জামিনের আবেদন নাকচ হল। সন্দেশখালির কালীনগর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে নিগ্রহের ঘটনায় ধৃত ২৪ জন এসএফআই কর্মী-সমর্থককে মঙ্গলবার ফের ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দিলেন বসিরহাট আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট গোপালকৃষ্ণ সিংহ।
গত শনিবার ওই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনোরঞ্জন নস্করকে নিগ্রহের অভিযোগে ২৪ জনকে ধরা হয়। রবিবার ধৃতদের জামিনের আবেদন নাকচ করে দু’দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। মঙ্গলবার ধৃতদের আদালতে হাজির করানোর পাশাপাশি তদন্তকারী অফিসারকে মনোরঞ্জনবাবুর ইনজুরি-রিপোর্ট এবং তদম্তের সিডি পেশ করারও নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। কিন্তু মনোরঞ্জনবাবু এখনও বসিরহাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় এ দিন সম্পূর্ণ ইনজুরি-রিপোর্ট পুলিশ বিচারকের কাছে পেশ করতে পারেনি জানিয়ে মামলার সরকারি আইনজীবী হরেন মণ্ডল জানান, বিচারক পরবর্তী শুনানির সময়ে পূর্ণাঙ্গ ইনজুরি-রিপোর্ট পুলিশকে পেশ করতে বলেছেন। তত দিন পর্যন্ত ধৃতদের জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
ধৃতদের আইনজীবী রাজা ভৌমিকের অভিযোগ, “পুলিশের গাফিলতির জন্যই এ দিন ছাত্রেরা জামিন পেলেন না। ফলে, ওঁদের মধ্যে ১৩ জন পরীক্ষায় বসতে পারবেন না।” গাফিলতির কথা নস্যাৎ করে পুলিশের দাবি, চিকিৎসাধীন থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অধ্যক্ষের সম্পূর্ণ ইনজুরি-রিপোর্ট দিতে পারেননি। সেই কারণে পুলিশও তা আদালতে পেশ করতে পারেনি। তবে, এ দিন তদন্তের সিডি জমা দেওয়া হয়েছে। |
শিক্ষাঙ্গনে নৈরাজ্যের প্রতিবাদে মিছিল কালীনগরে। —নিজস্ব চিত্র। |
ধৃতদের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদিকা প্রিয়াঙ্কা কাঞ্জিলাল। শনিবার ওই কলেজে সংগঠনের ছাত্রদের মারধরে অভিযুক্ত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ছেলেদের এখনও কেন গ্রেফতার করা হল না তা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক বছরে নানা সময়ে এসএফআই ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মারামারির ঘটনায় বিঘ্নিত হয়েছে পঠনপাঠন। এ দিন ওই কলেজে পঠনপাঠনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিতে স্থানীয় ‘নাগরিক সমাজ’ প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল করে। সংগঠনের পক্ষে অরূপ দাস, দীপক নায়েকরা বলেন, “কালীনগর কলেজের শিক্ষার পরিবেশ কোনও ভাবেই কলুষিত করা চলবে না। শিক্ষাঙ্গনে নোংরা রাজনীতি সহ্য করা হবে না।”
সোমবার বসিরহাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মনোরঞ্জনবাবুকে দেখতে এসে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অধ্যক্ষ নিগ্রহের নিন্দা করেন এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তোলেন। একই সঙ্গে অবশ্য তিনি বলেন, “কোনও ছাত্র সংগঠন যদি শিক্ষক-শিক্ষিকাকে মারধর করে, তা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এসেছিল পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন কলেজ সমূহের পরিদর্শক শিবরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলও।
|