গড়বেতা-হত্যা
পুলিশি তদন্তে আস্থা রাখব
কেন, প্রশ্ন হাইকোর্টের

প্রথম দিনের শুনানির সময়ে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ ছিল, পুলিশ ‘ঝান্ডার রং’ দেখে কাজ করছে। আর মঙ্গলবার গড়বেতার সেই হত্যা-মামলায় পুলিশি তদন্তের অগ্রগতি দেখে হতাশ হাইকোর্ট প্রশাসনের কাছে জানতে চাইল, তদন্তের দায়িত্বভার কেন হাতবদল হবে না?
সব মিলিয়ে পুলিশের প্রতি আদালতের অনাস্থা আরও এক বার প্রকট হল। কড়েয়ায় যুবক আমিনুল ইসলামের অপমৃত্যু নিয়ে কলকাতা পুলিশের তদন্তের গতি-প্রকৃতি দেখে দিন দশেক আগে কলকাতা হাইকোর্ট অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল। কেন সিবিআই বা অন্য সংস্থাকে দিয়ে ঘটনাটির তদন্ত করানো হবে না, রাজ্য সরকারের কাছে তার কৈফিয়ৎ তলব করেছিল আদালত। আজ, বুধবার আমিনুল-মামলা ফের হাইকোর্টে শুনানির জন্য উঠবে।
তার আগে, এ দিন গড়বেতার গণেশ দুলে হত্যা-মামলাতেও পুলিশি-তদন্ত সম্পর্কে কার্যত একই প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। গড়বেতা থানার আমলাগোড়ায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী নির্দল প্রার্থী নিমাই দুলের ভাই গণেশবাবুর খুনের ঘটনায় তদন্তভার কেন সিবিআই-কে দেওয়া হবে না, সরকারের কাছে তার ব্যাখ্যা চাইলেন তিনি। হাইকোর্টের নির্দেশ, আগামী সোমবার সরকারকে এ বিষয়ে তাদের ব্যাখ্যা হলফনামার আকারে এজলাসে পেশ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের দু’দিন পরে গণেশবাবু খুন হন। অভিযুক্ত ১৩ জনের মধ্যে মাত্র দু’জনকে পুলিশ এ পর্যন্ত গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারির দিনেই ধৃতদের পুলিশ কোর্টে তুলেছিল বটে, কিন্তু তাদের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়নি। ফলে তাদের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের এই জাতীয় কাজকর্মে সন্তুষ্ট না-হয়ে নিহতের পরিবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার আশঙ্কাও প্রকাশ করা হয়েছে তাদের আবেদনে।
এ দিন শুনানিতে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মনজিৎ সিংহের কাছে বিচারপতি জানাতে চান, গণেশ দুলে খুনের মামলায় কত জন গ্রেফতার হয়েছে? পিপি জানান, দু’জন। শুনে ক্ষুব্ধ বিচারপতির প্রশ্ন, এত দিন তদন্ত চালানোর পরে মাত্র দু’জন ধরা পড়ল কেন?
পিপি জবাব দেন, “অন্যেরা পলাতক। পুলিশ তাদের ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে।” অন্য দিকে বাদীপক্ষ, অর্থাৎ গণেশবাবুর মা ও স্ত্রীর কৌঁসুলি অনিন্দ্য লাহিড়ি সওয়ালে দাবি করেন, “মামলার কেস ডায়েরি অনুযায়ী খুনের প্রত্যক্ষদর্শী রয়েছে। ভোটের দু’দিন বাদে নির্দল সদস্যের ভাইকে খুন করা হল। ফল প্রকাশের পরে দেখা গেল, ওই নির্দল প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। বুঝতে অসুুবিধে নেই যে, এই খুন রাজনৈতিক।”
এবং কেস ডায়েরিতেই দেখা যাচ্ছে যে, পুলিশ ধৃতদের নিজের হেফাজতে নিতে চায়নি। কেন?
সরকারি তরফে সদুত্তর মেলেনি। বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আপাতগ্রাহ্য ভাবে অন্য সংস্থাকে দিয়ে ঘটনাটির তদন্ত করানোর অবকাশ রয়েছে। এ প্রসঙ্গেই বিচারপতি পিপির কাছে জানতে চান, শেষ দু’শোটি খুনের মামলার ক’টায় তদন্তকারী পুলিশ ধৃতদের পুলিশ হেফাজত না-চেয়ে জেল হেফাজত চেয়েছে? পিপি বলেন, কোনও ক্ষেত্রে পুলিশ হেফাজত চাওয়া হয়েছে, কোনও ক্ষেত্রে জেল হেফাজত। পিপি’র জবাবের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতির মন্তব্য, “খুনের মামলার অভিযুক্তদের প্রথম দিনেই পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানাচ্ছে না? এটা ভাবা যায় না।” পিপি নীরব থাকেন।
গণেশ দুলে হত্যা-মামলায় ময়না-তদন্তে ‘ঢিলেমি’ নিয়েও আদালত এ দিন ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। কেস ডায়েরি বলছে, গণেশবাবুর মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল গত ১৮ জুলাই। আর ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এসেছে ৫ অগস্ট। “এই বিলম্বের ব্যাখ্যা দেওয়ার কোনও জায়গা সরকারের নেই।” মন্তব্য করেছেন বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়।
আগামী সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর মামলাটির পরবর্তী শুনানি।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.