বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী গণেশ দুলের (৩০) দেহ উদ্ধার হল বৃহস্পতিবার। এ দিন সন্ধেয় গড়বেতার কুড়চিবনি এলাকায় সেতুর নীচে রেললাইনের ধার থেকে বস্তাবন্দি দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
গত রবিবার সকালে বাজারে বেরোনোর পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন গণেশ। বাড়ি না ফেরায় তাঁর আত্মীয়দের সন্দেহ হয় গণেশকে হয়ত খুন করা হয়েছে। এবং খুন করেছেন গড়বেতার তৃণমূল ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীরাই। গড়বেতায় লিখিত অভিযোগও জানানো হয়। অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করায় রাস্তাও অবরোধ করা হয়েছিল। যদিও পুলিশ কাউকেই ধরেনি। বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ জানতে পারে, কুড়চিবনির কাছে রেললাইনের ধারে বস্তায় কিছু একটা পড়ে রয়েছে। সেখানে একটি সেতুও রয়েছে। যার উপর দিয়ে বাস চলাচল করে। নীচ দিয়ে যায় ট্রেন। রেললাইনের পাশ দিয়ে যায় নিকাশি জলও। ফলে সেখানে সাধারণ মানুষের যাতায়াত নেই বললেই চলে। কিন্তু মৃতদেহটি দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকায় দুর্গন্ধ ছড়ায়। তা থেকেই স্থানীয় মানুষের সন্দেহ হয়। পরে পুলিশ গিয়ে বস্তাটি উদ্ধার করে। গণেশের পরিবার দেহটি গণেশের বলেই শনাক্ত করে। ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে। বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভও বাড়ছে।
গণেশের বাড়ি ছিল গড়বেতা থানা এলাকার কপ্পরপুর গ্রামে। গণেশের দাদা নিমাই দুলে এ বার এলাকা থেকে বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন। তা নিয়ে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর সঙ্গে প্রথম থেকেই বিবাদ ছিল। বিক্ষুব্ধ তৃণমূল করার জন্য ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী বারেবারে নানা ধরনের হুমকি দিয়েছে বলেও অভিযোগ। গণেশের আত্মীয়দের অভিযোগ, শুধু হুমকি নয়, গণেশকে বাজার থেকে অপহরণ করার পর খুন করে বাস্তবেই হুমকিটা সত্য ছিল বলে প্রমাণ করে দিল।
কেন এমন ঘটনা ঘটল?
তৃণমূলের একাংশের দাবি, আমলাগোড়া এলাকাটি ব্যবসায়িক দিক দিয়ে খুবই সমৃদ্ধ। তাই ওই এলাকায় একাধিপত্য কায়েম করার জন্য সকলেই ব্যস্ত। সেক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বিক্ষুব্ধরা। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে অন্যেরা। যার জেরে এই খুন বলে অনুমান। এর জেরে ফের এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে উঠলেন। তৃণমূলের এক জেলা নেতার কথায়, “সিপিএমের আমলে যে ঘটনা ঘটত, তৃণমূলের সময়েও গড়বেতাতে একই ঘটনা ঘটল। এবং তা ঘটল দলের বিক্ষুব্ধদের বিরুদ্ধেই। ফলে মানুষ তো আবার আগেই মতোই ভীত, সন্ত্রস্ত হয়ে পড়বেন। এর থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে এলাকায় শান্তির বাতাবরণ তৈরি খুবই জরুরি।” এ ব্যাপারে তৃণমূলের গড়বেতা ব্লকের সভাপতি দিলীপ পাল বলেন, “নিন্দনীয় ঘটনা। যারাই করে থাকুক তাদের বিরুদ্ধে পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”
|