মেদিনীপুর পুরসভা
দ্রুত পুরভোটের দাবিতে সরব বামফ্রন্ট-বিজেপি
মেয়াদ ফুরনোর পর প্রশাসক হিসেবে মেদিনীপুর পুরসভার দায়িত্ব নিয়েছেন মহকুমাশাসক (সদর)। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত পুরসভা নির্বাচনের দাবিতে সরব হল বামফ্রন্ট। বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে সিপিএমের মেদিনীপুর শহর জোনাল কমিটির সম্পাদক কীর্তি দে বক্সী বলেন, “একটা দল গণতন্ত্রের মধ্য গিয়ে সরকারের ক্ষমতায় এল। কিন্তু, তারপর সেই গণতন্ত্রকেই হত্যা করছে। রাজ্য সরকার গণতান্ত্রিক রীতিনীতি কিছুই মানছে না। মানুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে।” তাঁর দাবি, “সরকার স্বেচ্ছাচারী মনোভাব নিয়ে না চললে মেয়াদ ফুরনোর আগেই পুরসভা নির্বাচন হত। কিন্তু, তা হল না। এরফলে শহরবাসী সমস্যায় পড়বেন।” বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুকুমার আচার্য, সারদা চক্রবর্তী, হিমাদ্রি দে প্রমুখ সিপিএম নেতা। ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সভাপতি সুকুমার ভুঁইয়া-সহ ফ্রন্ট নেতৃত্ব। সরকার-বিরোধী আন্দোলন আরও তীব্র করতে বাড়ি বাড়ি প্রচারের উপরই জোর দিচ্ছে বামফ্রন্ট। কীর্তিবাবু বলেন, “আমাদের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাবেন। বাসিন্দাদের বোঝাবেন, কেন এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হল। কেন গণতন্ত্র-গণতান্ত্রিক অধিকার আজ আক্রান্ত।”
দলীয় কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ মানুষের হাতে লিফলেট তুলে দেবেন। যেখানে ফ্রন্টের বক্তব্য পরিষ্কার ভাবে জানানো হয়েছে। ফ্রন্ট নেতৃত্ব মনে করছেন, ব্যাপক মানুষের সমাবেশই পারবে তৃণমূলের জনস্বার্থ বিরোধী কাজকে প্রতিহত করে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে।
বামফ্রন্ট বাদে অন্য বিরোধী দলগুলোও আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। পুরসভা নির্বাচন নিয়ে বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে বিজেপির এক বৈঠক হয়। উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অমল চট্টোপাধ্যায়, জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়, শহর সভাপতি অরূপ দাস প্রমুখ। নির্বাচনে দলের রণকৌশল ঠিক কী হবে, এখন দলীয় কর্মীদের দায়িত্ব কী, তা নিয়েই আলোচনা হয়। রাজ্য সাধারণ সম্পাদক প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। দলীয় সূত্রে খবর, বিজেপি এ বার শহরের সবক’টি ওয়ার্ডে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৈঠক শেষে দলের জেলা সভাপতি তুষারবাবুও বলেন, “আমরা সবক’টি ওয়ার্ডে প্রার্থী দেবো। ঠিক সময়ে নির্বাচন হলে অস্থিত্বের সঙ্কট হবে বুঝেই শাসক দল তড়িঘড়ি নির্বাচন করতে চাইছে না। তবে, আমরা তৈরি আছি। কোনও শরিক দলকে নিয়ে নয়। কোনও জোটে থেকে নয়। নির্বাচন যখনই হোক, পুরসভায় আমরা একক ভাবেই লড়ব।”
আগামী সোমবার পুরসভার সামনে অবস্থান কর্মসূচি করবে বিজেপি। প্রসঙ্গত, বুধবারই পুরসভার সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছিল বামফ্রন্ট। ২০০৮ সালের ২৯ জুন রাজ্যের অন্য ১২টি পুরসভার সঙ্গে মেদিনীপুর পুরসভা নির্বাচন হয়েছিল। ফল বেরোনোর পর ১৮ জুলাই পুরবোর্ড গঠন হয়। সাধারণত, পুরনো বোর্ডের মেয়াদ ফুরনোর আগে পুর-নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু, এ বার তা হয়নি। রাজ্য সরকারের নির্দেশ মতো পুরবোর্ডের মেয়াদ ফুরনোর পর প্রশাসক হিসেবে পুরসভার দায়িত্ব নিয়েছেন মহকুমাশাসক (সদর) অমিতাভ দত্ত। ফ্রন্ট নেতৃত্বের দাবি, পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর রাজ্য সরকার সমস্ত ক্ষমতা প্রশাসকের হাতে তুলে দিয়েছে, এই রকম ঘটনা অতীতে গত ত্রিশ বছরে কখনও ঘটেনি। রাজ্যের উচিত ছিল, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনে সঠিক সময়ে নির্বাচন করা। দাবি উড়িয়ে তৃণমূলের শহর সভাপতি সুকুমার পড়্যার বক্তব্য, “মিথ্যে কথা। আগেও মেদিনীপুর পুরসভায় প্রশাসক বসেছে। এই প্রথম এমন পরিস্থিতি তৈরি হল, তা কিন্তু নয়।” তাঁর কথায়, “পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে কত ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত হল। অশুভ জোট তৈরি হল। সিপিএম-কংগ্রেস চেয়েছিল নির্বাচন যেন না হয়। এ বার পুরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখেও সেই চক্রান্ত চলছে! নানা অজুহাতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ভোট পিছনোর চক্রান্ত করছে!”

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.