|
|
|
|
পুরবোর্ডে মেয়াদ শেষ, দায়িত্বে এখন প্রশাসক
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মেয়াদ শেষ হল মেদিনীপুর পুরবোর্ডের। কিন্তু, সময় মতো পুর-নির্বাচন না হওয়ায় পুরসভা পরিচালনার দায়িত্ব বর্তাল প্রশাসকের হাতে। বুধবার প্রশাসক হিসেবে মোদিনীপুর পুরসভার দায়িত্ব নিলেন মহকুমাশাসক (সদর) অমিতাভ দত্ত। এ দিন দুপুর তিনটে নাগাদ মহকুমাশাসকের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে পুরসভার দায়িত্ব ছাড়েন বিদায়ী পুরপ্রধান প্রণব বসু।
২০০৮ সালের ২৯ জুন রাজ্যের ১২টি পুরসভার সঙ্গে মেদিনীপুর পুরসভাও নির্বাচন হয়েছিল। ১৮ জুলাই গঠিত হয়েছিল পুরবোর্ড। সাধারণত, বোর্ডের মেয়াদ ফুরনোর আগেই পুর-নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু, এ বার তা হয়নি। এর জেরে বেশ কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বিরোধী দল থেকে রাজনীতি সচেতন মানুষের মধ্যে।
কী সেই সমস্যা?
নিয়মানুযায়ী, মেয়াদ ফুরনোর পর আর এক মুহুর্তও পুরসভার কাজকর্মের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকতে পারবেন না বিদায়ী বোর্ডের সদস্যরা। থাকবে না তাঁদের কোনওরকম সার্টিফিকেট দেওয়ার অধিকারও। আর এতেই প্রবল সমস্যায় পড়তে পারেন সংশ্লিষ্ট এলাকার পুরবাসীরা। তা ছাড়া পুরনো বোর্ডের চলে যাওয়া এবং নতুন বোর্ডের ক্ষমতায় আসার মাঝের সময়টাও গুরুত্বপূর্ণ। মধ্যবর্তী সময়টা বেশি হলে শহরের উন্নয়ন প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
পঞ্চায়েতের মতো পুর-নির্বাচন নিয়েও শাসকদল তৃণমূলকে বিঁধতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। সিপিএমের শহর জোনাল কমিটির সম্পাদক তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর কীর্তি দে বক্সীর কথায়, “সরকার একেবারে স্বেচ্ছাচারী মনোভাব নিয়ে চলছে। সময়ে নির্বাচন হলে মানুষকে সমস্যার মধ্যে পড়তে হত না।” সমালোচনায় সরব হয়েছে কংগ্রেসও। দলের শহর সভাপতি তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর সৌমেন খানের যুক্তি, “আসলে রাজ্য সরকার নির্বাচন করতে ভয় পাচ্ছে। কারণ, ওদের পায়ের তলায় মাটি নেই।” বিজেপির শহর সভাপতি অরূপ দাসের কথায়, “সরকার মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করার চেষ্টা করছে। ঠিক সময়ে নির্বাচন হল না। এ বার মানুষ কত সমস্যায় পড়বেন। পুরসভায় কত জটিলতা দেখা দেবে। নির্বাচন করার ইচ্ছে রাজ্য সরকারের নেই। থাকলে বোর্ডের মেয়াদ ফুরনোর আগেই নির্বাচন হত।”
যদিও বিরোধীদের দাবি মানতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁরা যাবতীয় দায় চাপিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের উপরেই। দলের শহর সভাপতি সুকুমার পড়্যা বলেন, “কমিশন বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ভোট পিছনোর চক্রান্ত করছে! রাজ্য সরকার ৭ সেপ্টেম্বর ভোট করতে চেয়েছিল। কমিশন ওই দিন ভোট করছে না কেন?” তাঁর কথায়, “এই প্রথম পুরসভায় প্রশাসক বসল, তেমন তো নয়। আগেও মেদিনীপুরে প্রশাসক বসেছে। ভোট পিছনোর পিছনে কমিশনের চক্রান্ত রয়েছে। এলাকা পুনর্বিন্যাস হল। প্রস্তাব গেল। এখন কমিশন বলছে, ১৮- ১৯ নম্বর ওয়ার্ড শহরের পূর্বদিকে কেন? ২০- ২১ নম্বর ওয়ার্ড পশ্চিমদিকে কেন? আরে! এ জন্য কী আমরা দায়ী? আগের বাম সরকার এ সব করে গেছে!”
এখন পুর-নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি কবে জারি হয়, কবে নির্বাচন হয়, ফল বেরোনোর পর কবেই বা নতুন পুরবোর্ড গঠন হয়, আপাতত পুরবাসীর নজর সেদিকেই। |
|
|
|
|
|