মার্কিন গুপ্তচররা যে বিশ্বজোড়া ফাঁদ পেতে রেখেছে, তিন মাস আগেই সে খবর ফাঁস করে দিয়েছিলেন এডওয়ার্ড স্নোডেন। তা বলে পড়শি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরাও যে রেহাই পাননি, তা আন্দাজ করেননি কেউই। ব্রাজিল ও মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টদের ই-মেল, ফোন এমনকী মেসেজের উপরও মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা (এনএসএ) আড়ি পেতেছিল বলে দাবি করে আরও এক বার হইচই ফেলে দিলেন স্নোডেন।
রবিবার রাতে ব্রাজিলের এক খবরের চ্যানেলে এ কথা জানান সাংবাদিক গ্রিনওয়াল্ড। এনএসএ-র গোপন কীর্তির যে নথি স্নোডেনের হাতে আছে, তার উপর ভিত্তি করে এক ব্রিটিশ দৈনিকে এত দিন ধরে একের পর এক খবর লিখেছেন এই গ্লেন গ্রিনওয়াল্ডই। |
এনরিকে পেনিয়া নিয়েতো
|
এডওয়ার্ড স্নোডেন
|
দিলমা রোসেফ
|
|
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট দিলমা রোসেফ ও মেক্সিকোর এনরিকে পেনিয়া নিয়েতোর উপর নজরদারি চালানোর কথা জানাজানি হওয়ায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দুই দেশই। আন্তর্জাতির নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে দেশের সার্বভৌমত্বর উপর আমেরিকা সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্রাজিলের বিদেশমন্ত্রী। ব্রাজিলের মার্কিন দূত টমাস শাননকে ডেকে পাঠিয়ে লিখিত জবাবও তলব করেছে রোসেফ প্রশাসন। আগামী মাসেই আমেরিকা সফরের কথা আছে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের। বারাক ওবামা এ বছর শুধু রোসেফকেই সে দেশে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
এই কাণ্ডের পর সেই সফর বাতিল হচ্ছে কি না, তা এখনই স্পষ্ট নয়। তবে বিদেশমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন, মার্কিন দূতের জবাবের উপরই আপাতত সবটা নির্ভর করছে।
গত বছর মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এনরিকে। ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই তাঁর উপর নজর ছিল এনএসএ-র। ২০১২ সালের জুন মাস থেকে এনরিকের উপর নজর রাখার যে নথি স্নোডেন ফাঁস
করেছেন, তাতে তাঁর মন্ত্রিসভায় কারা কারা থাকতে পারেন সেই সংক্রান্ত মেসেজ আদানপ্রদানের বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে।
স্নোডেনের অভিযোগের সত্যতা নিয়ে এ দিন সরাসরি জবাব এড়িয়ে গিয়েছে মেক্সিকোর বিদেশ মন্ত্রক। বরং তাদের দাবি, পুরো ঘটনার তদন্ত করুক আমেরিকা। যদি প্রেসিডেন্টের ফোনে সত্যিই আড়িপাতা হয়, তা হলে এর জন্য কে দায়ী তাকে খুঁজে বার করতে হবে তাদেরই। মেক্সিকোর কোন নাগরিক কী করছেন, তা দেখার দায়িত্ব ওবামা প্রশাসনের নয় বলেও মন্তব্য করেছে তারা।
মার্কিন গুপ্তচরদের নেটে আড়ি পাতার ঘটনা ফাঁস করে দেওয়ায় আপাতত রাশিয়ায় আত্মগোপন করে রয়েছেন এডওয়ার্ড স্নোডেন। এত দিন ধরে আমেরিকা দাবি করেছিল, বিভিন্ন দেশে জঙ্গি হানা ঠেকাতেই তাদের এই পদক্ষেপ।
তবে রাষ্ট্রপ্রধানদের ব্যক্তিগত পরিসরে ঢুকে পড়া জঙ্গি হামলা ঠেকাতে কী ভাবে সাহায্য করবে, সে নিয়ে এখন অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছে তারা।
লাতিন আমেরিকার দুই অন্যতম শক্তিশালী রাষ্ট্রের কাজে এ রকম নাক গলানোর ফল কী হতে চলেছে তা সময়ই বলবে। |