আগের জমা জল নামেনি, তার উপর সোমবার দুপুর থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত দফায় দফায় ভারী বৃষ্টিতে ফের ভাসল শহর হাওড়া। দুপুরে মেঘ কেটে রোদ উঠলেও রাত পর্যন্ত জলে ডুবে থাকল শহরের অধিকাংশ পথঘাট, অলিগলি।
পুরসভার দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকাল ১১টা পর্যন্ত হওয়া বৃষ্টিতে ৫০টি ওয়ার্ডের মধ্যে জলে ডুবে গিয়েছে ২৭টি। কোথাও আড়াই ফুট, কোথাও বা জমেছে দেড় ফুট জল। ফলে দিনভর নাজেহাল হতে হয়েছে এলাকার বাসিন্দাদের। পুরসভা সূত্রে খবর, জমা জল সরাতে মোট ৪৩টি পাম্প চালানো হয়েছে। কিন্তু ভাটার সময়েও গঙ্গার জলস্তর শহর থকে উঁচুতে থাকায় জল দ্রুত বেরোতে পারেনি। |
গত সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে জল জমে গিয়েছিল হাওড়া ও বালি পুরসভার অপেক্ষাকৃত নিচু জায়গাগুলিতে। তা কিছুটা নেমে গেলেও জল জমে ছিল উত্তর ও মধ্য হাওড়ার অধিকাংশ ওয়ার্ড ও পুরসভার সংযোজিত এলাকাগুলিতে। এর পর সোমবার দুপুরে আকাশ ভাঙা বৃষ্টি ও মঙ্গলবার সকাল ১১টা পর্যন্ত মুষলধারে বৃষ্টিতে সেই জল আরও বেড়ে গিয়ে জনজীবন বির্পযস্ত হয়ে পড়ে। নর্দমা উপচে বহু বাড়িতে পাঁকজল ঢুকে যায়। ব্যাহত হয় যান চলাচল। পুরসভা সূত্রে খবর, উত্তর হাওড়ার ৩, ৬, ৭, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে কোথাও দু’ফুট, কোথাও বা দেড় ফুট জল জমে যায়। জমা জলে নাজেহাল হন লালবিহারী বোস লেন, ছোটেলাল মিস্ত্রী লেন, নবীন ঘোষ লেন, ঘোষপাড়া লেন, দশরথ ঘোষ লেন, কোনা রোড, বেলগাছিয়ার বাসিন্দারা। জল জমে ১৭, ১৮, ১৯, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বেলিলিয়াস রোড, এমসি ঘোষ লেন, পঞ্চাননতলা রোড, গঙ্গারাম বৈরাগী লেনে। পুরসভার দাবি, প্রবল বৃষ্টিতে জল জমে ৪২, ৪৪ ও ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডেও। তবে বৃষ্টি থামার পরেই সেখানকার জল নেমে গিয়েছে।
শহরের অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গা থেকে জমা জল নেমে গেলেও তার উল্টো চিত্র হাওড়া পুরসভার সংযুক্ত ওয়ার্ডে। একে নিকাশির বেহাল দশা, তার উপর এক সপ্তাহ ধরে বৃষ্টির জমা জলের মধ্যে বাস করে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন হাওড়া পুরসভার সংযুক্ত ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। তার উপর দফায় দফায় মুষলধারে বৃষ্টিতে ফের দুই থেকে তিন ফুট জলের তলায় চলে যায় ৪৯ নম্বর ওর্য়াডের বালিটিকুরি ঘোষপাড়া লেন, বালিটিকুরি সুরকিকল এলাকা। নীচু এলাকা হওয়ায় তিন ফুট জলের তলায় ডুবে যায় ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাশীপুর, ভূতবাগান ও পিয়ারাবাগান এলাকাও।
হাওড়া পুরসভার মেয়র মমতা জায়সবাল বলেন, “জমা জল সরাতে পুরসভা মোট ৪৩টি পাম্প চালিয়েছে। বহু এলাকায় জল নেমে গিয়েছে। অপেক্ষাকৃত নীচু এলাকাগুলিতে জল জমে রয়েছে। খুব শীঘ্রই সেখান থেকে জল নেমে যাবে বলে মনে হয়।” |