খাল সংস্কার তিমিরেই, ফের জলবন্দি সল্টলেক
গরীর দু’দিকের খাল সংস্কার হয়নি। অন্য দিকে ড্রেনেজ লাইনে প্লাস্টিক, ইমারতি দ্রব্য, রাবিশ থেকে শুরু করে পরিত্যক্ত চেয়ার-সহ আবর্জনা ফেলার প্রবণতা। দুইয়ে মিলে বৃষ্টির মরসুমে নাজেহাল পরিকল্পিত উপনগরী সল্টলেক। পাশাপাশি বাসিন্দাদের অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে জল বেরোনোর নিকাশি-পথ রুদ্ধ। নিয়মিত সাফ না হওয়ায় সমস্যা বেড়েছে।
প্রশাসনের অবশ্য দাবি, পরিকাঠামো নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ হয়। সমস্যা হয়েছে অতিবৃষ্টির জেরে। যদিও খাল সংস্কার না হওয়ায় কিছু ক্ষেত্রে জল নামতে সময় লেগেছে বলে দাবি সল্টলেক পুর-প্রশাসনের। সে সমস্যা কার্যত মেনে নিয়ে সেচ ও নগরোন্নয়ন দফতর জানিয়েছে, পুজোর পরেই খাল সংস্কারের কাজ শুরু হবে।
সোমবারের এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই সল্টলেক লন্ডভন্ড হয়েছিল। মঙ্গলবারও ফের ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয় সল্টলেক। বিকেলের পরেও বেশ কিছু জায়গায় জল জমে ছিল।
জল পেরিয়েই পথ চলা। মঙ্গলবার। ছবি: শৌভিক দে
বাসিন্দাদের অভিযোগ, সল্টলেকে বসতির পাশাপাশি সরকারি ও বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড বেড়েছে। তুলনায় নিকাশি পরিকাঠামোর উন্নতি হয়নি। অনেক ক্ষেত্রেই জল বেরোনোর পথ রুদ্ধ। সি ডি ব্লকের এক বাসিন্দা অনিতা হাতি রায় বলেন, “এ দিন সি ডি ব্লকের একাধিক জায়গায় দীর্ঘক্ষণ জল জমে ছিল। গত দু-তিন বছর ধরেই এই সমস্যা দেখছি। ব্লকে বাড়ির সংখ্যা বাড়লেও নিকাশি পরিকাঠামোর উন্নতি হয়নি। মনে হচ্ছে, আউটলেটগুলি বন্ধ হওয়াতেই সমস্যা।” স্থানীয় কাউন্সিলর তুলসী সিংহরায় বলেন, “সি ডি ব্লকে বেশ কিছুক্ষণ জল জমে ছিল। পুর প্রশাসনকে জানিয়েছি।”
ই ই ব্লকের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বৃষ্টি হলেই জলমগ্ন হচ্ছে খালপাড়ের এই ব্লকটি। জল নামতে সময় লাগছে। পুর প্রশাসন প্রতিশ্রুতি দিলেও সমস্যা মিটছে না। স্থানীয় কাউন্সিলর সুধীর সাহা জানান, ই ই ব্লক, সৌরভ আবাসন-সহ কয়েকটি জায়গায় জল জমার সমস্যা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সল্টলেকে অফিসযাত্রীরাও দুর্ভোগে পড়ছেন। ইছাপুরের বাসিন্দা গৌরাঙ্গ ঘোষ বলেন, “বৃষ্টি হলে করুণাময়ী থেকে ময়ূখ ভবনের রাস্তায় হাঁটা দায় হয়ে উঠছে। এ দিনের বৃষ্টিতে উন্নয়ন ভবনেও জল ঢুকে যায়। কারও কোনও হুঁশ নেই।”
কেন এমন অবস্থা? সল্টলেক পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (নিকাশি) দেবাশিস জানা বলেন, “একবারে অতিবৃষ্টি হলে জল নামতে কিছু সময় লাগবেই। যে পরিকাঠামো রয়েছে, তা নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ হয়। গালিপিট বা আউটলেট রুদ্ধ হয়নি। তবে দু’দিকের খাল জলে ভরে যাওয়ায় কিছুটা সমস্যা হয়েছে। খালের নাব্যতা বাড়াতে সংস্কার প্রয়োজন।” যদিও তাঁর দাবি, “চালু থাকা পাম্পিং স্টেশনের ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি আরও একটি পাম্পিং স্টেশন প্রয়োজন। পরিকল্পনা হয়েছে। রাজ্য সরকার সহযোগিতা করছে। সমস্যা হবে না।”
সমস্যা মেনে নিয়ে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, খালের নাব্যতা বাড়ানো প্রয়োজন। সল্টলেক ও পাঁচ নম্বর সেক্টরে এর জেরে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। সে কারণে বর্ষার পরেই খাল সংস্কারের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
তবে বাসিন্দাদের সচেতনতার অভাবও সমস্যা বাড়াচ্ছে বলে মত প্রশাসনের। সূত্রের খবর, প্রতি মাসে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক, বালি, ইমারতি দ্রব্য নিকাশি লাইনে জমে সমস্যা বাড়ছে। এমনকী, সাফাই করতে গিয়ে মিলছে চেয়ারের অংশও। বাসিন্দাদের সংগঠন, সল্টলেক (বিধাননগর) ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, “আমরাই সচেতন নই। নিজেদের শহর বাঁচাতে বাসিন্দাদেরই এগিয়ে আসতে হবে। কর্মসূচী নিলেও বিশেষ সাড়া মেলে না। তবুও চেষ্টা চালাচ্ছি।”

পুরনো খবর:


 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.