সাত দিন আগের ধাক্কা এখনও সামলে ওঠা যায়নি, তার উপরে মঙ্গলবার সকালে ঘণ্টা কয়েকের প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ল শহর কলকাতা। বিশেষত অফিসের ব্যস্ত সময়ে জলমগ্ন হয়ে রইল দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকা। সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশন শুরুর আগে জলমগ্ন শহরের বিষয়টি নিয়ে মূলতুবি প্রস্তাব জমা দেন সিপিএম কাউন্সিলর রাজীব বিশ্বাস। প্রস্তাবে বলা হয়, পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে বর্তমান পুর-বোর্ড। আর সেই প্রস্তাবকে ঘিরেই এ দিন সরগরম হয়ে ওঠে পুর অধিবেশন। ক্রমাগত বাকবিতণ্ডা চলে দু’পক্ষের মধ্যে। |
তবে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “গত ৩৪ বছর ওরা কিছু করেনি। মাত্র আড়াই বছরে তৃণমূল বোর্ড ক্ষমতায় এসে যা কাজ করেছে, তার সুফল হল শহর থেকে দ্রুত জল সরে যাচ্ছে।” মেয়রের এমন বক্তব্যে হইচই শুরু করে দেন বিরোধী কাউন্সিলরেরা। তার মধ্যেই মেয়র বলতে থাকেন, “ঘণ্টায় ৬ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হলে শহরে জল জমে। আজ ঘণ্টা তিনেকের মধ্যে প্রায় ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। কলকাতা শহরের যা ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য, তাতে বেশি বৃষ্টি হলে জল জমবেই। কত তাড়াতাড়ি তা বার করা যায়, সেটাই আসল।” তিনি এ-ও জানান, এ বারের বৃষ্টিতে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হয়েছে যাদবপুর, তিলজলা, তপসিয়া, পঞ্চান্নগ্রাম, গার্ডেনরিচ এবং তাঁর নিজের এলাকা বেহালার।
এ দিকে, সোমবার গভীর রাত থেকে তুমুল বৃষ্টির জেরে শহরের উত্তর, মধ্য, দক্ষিণ সর্বত্র জল জমেছে। কোথাও হাঁটুজল, কোথাও আবার কোমর সমান। তবে বিকেলের দিকে সেই জল নামতেও শুরু করে বলে দাবি পুরসভা ও পুলিশের।
বৃষ্টিতে কয়েকটি রাস্তায় জল জমার কারণে যানজট বাড়ে। এক সময়ে বাধ্য হয়ে উত্তর থেকে মধ্য কলকাতামুখী যানবাহনকে শ্যামবাজার ও গিরিশ পার্ক থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। অন্য দিকে, বৃষ্টির জেরে সিগন্যাল বিকল হয়ে ট্রেন চলাচলে বিপত্তি ঘটে। দমদমে পয়েন্ট খারাপ হয়ে যাওয়ায় গণ্ডগোল হয় মেট্রো চলাচলেও। এই তিন সমস্যার জোড়া ফলাতেই মঙ্গলবার সকালে নাকাল হলেন রাস্তায় বেরোনো সাধারণ মানুষ।
পূর্ব রেল সূত্রে খবর, সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ সিগন্যাল বিপত্তি শুরু হয় শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায়। হাতে পেপার সিগন্যাল দিয়ে ট্রেন চালাতে গিয়ে প্রতিটি ট্রেনই গড়ে প্রায় ২০ থেকে ৩০ মিনিটের বেশি দেরি হয়। ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। বৃষ্টির পরে দুপুর ১২টা থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। |