ফের চাপান-উতোর
ভাসল সল্টলেক, উপচে পড়ল খালও
ছরের প্রথম ভারী বৃষ্টিতেই কুপোকাত্‌ সল্টলেক ও লাগোয়া এলাকা। কার্যত বিধাননগর কমিশনারেটের ন’টি থানা এলাকার বহু জায়গাতেই দীর্ঘক্ষণ জল জমে থাকে। বাগজোলা, কেষ্টপুর খাল উপচে পড়ে।
শনিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে ৫ নম্বর সেক্টরে জল জমে যায়। কলেজ মোড়, ওয়েবেল টেকনোপলিস মোড়, উইপ্রো মোড়, এসডিএফ বিল্ডিং সংলগ্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। রাস্তায় নামেন নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষের কর্মীরা। গালিপিট খুলে চালু করা হয় পাম্প। বেলা বারোটার মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় বলে দাবি প্রশাসনের।
এ দিন সকাল থেকেই তথ্যপ্রযুক্তি তালুকে বাসের সংখ্যা ছিল কম। কর্মীদের অভিযোগ, দুর্যোগের সুযোগ নিয়ে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া চেয়েছে অটো বা রিকশা। ৫ নম্বর সেক্টরের ভেড়ি সংলগ্ন রিং রোড এলাকাও জলমগ্ন হয়ে পড়ে। নবদিগন্তের কার্যনির্বাহী আধিকারিক বদ্রিনারায়ণ কর বলেন, “জল কিছুক্ষণের জন্য জমলেও দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়েছে। রিং রোডে কাজ চলায় সেখানে জমা জল সরাতে কিছুটা সময় লেগে যায়।”
জলমগ্ন দত্তাবাদ। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।
এ দিকে, মূল সল্টলেকের কিছু এলাকায় জল জমলেও দ্রুত নেমে যায়। তবে কেষ্টপুর খাল সংলগ্ন বৈশাখী আবাসনে বৃষ্টির জল জমে থাকে অনেক ক্ষণ। দ্রুত পরিস্থিতি সামলান পুরকর্মীরা। করুণাময়ী আবাসনের একাংশেও দীর্ঘক্ষণ জল জমে ছিল। এ ছাড়া মূল সল্টলেকের অধিকাংশ জায়গায় জল দ্রুত নেমে যায়। তবে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হয় মহিষবাথান, নয়াপট্টি, সর্দারপাড়া, বারোকপাট, পোলেনাইট, কুলিপাড়া, নাওভাঙা, গরুমারা, সুকান্তনগরে।
জলমগ্ন হয়ে পড়ে দত্তাবাদ এলাকাও। সকাল থেকে স্থানীয় কাউন্সিলরেরা পাম্প চালান। তবুও সমস্যা একেবারে কমেনি। অভিযোগ, বাইপাসের বেঙ্গল কেমিক্যাল অংশে মাটির তলায় নিকাশি নালা দীর্ঘদিন অবরুদ্ধ। বারবার প্রশাসনকে বলেও কাজ হয়নি। সল্টলেকের জল দত্তাবাদে এসে আটকে আছে। যদিও কলকাতা পুরসভার ৩ নম্বর বরো চেয়ারম্যান রাজীব বিশ্বাসের পাল্টা দাবি, তাঁরা নিকাশি নালা সাফ করেছেন। কিন্তু ওখানে কেএমডিএর একটি নিকাশি নালা বেহাল অবস্থায় পড়ে। প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ হয়নি।
পুরমন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিমও বলেন, “মেট্রোর কাজের জেরে একটি নিকাশি নালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেটি ওদেরই মেরামত করার কথা। সম্ভবত আর্থিক কারণেই ওরা এখনও করে উঠতে পারেনি।” অভিযোগ অস্বীকার করে মেট্রো কর্তৃপক্ষের এক চিফ ইঞ্জিনিয়ার বিশ্বনাথ দেওয়ানজি বলেন, “রাস্তার মাঝে দু’বছর আগে কাজ হয়েছিল। এ ছাড়াও ওই কাজের সঙ্গে নিকাশি নালার সম্পর্ক নেই। সমস্ত কাজ মিটিয়েই রাস্তার বিষয়টা কেএমডিএ-র হাতে দিয়েছি।”
জল জমে লেকটাউন, পাতিপুকুর, দমদম পার্ক, বাঙুরেও। রবিবার সকাল দশটা নাগাদ দেখা যায়, কেষ্টপুর এলাকায় বাগজোলা খাল প্রায় ভিআইপি রোড ছুঁয়ে ফেলেছে। ফলে লেকটাউন, বাঙুর বা দমদম পার্কের জল পাম্পের সাহায্যে খালে ফেলে কোনও লাভ হয়নি।
দক্ষিণ দমদম পুরসভা সূত্রে খবর, দমদম পার্কের পাঁচটি নিকাশি পথ দিয়ে জমা জলা বাগজোলা খালে ফেলা হচ্ছে। তবু জল নামছে না। চেয়ারপার্সন অঞ্জনা রক্ষিত বলেন, “কেষ্টপুর লকগেটের কাছে আবর্জনা ও পানা জমে থাকায় জল উপচে পড়ছিল। তবে পুরকর্মীরা সকাল থেকে বাগজোলা খালের জঞ্জাল তোলার কাজ করছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে জলও একটু নামছে।” এ দিকে দমদম পার্কের বিভিন্ন রাস্তায়, গ্যারেজে ও বাড়ির ভিতরে জল ঢুকে যায়। দমদম পার্কের ৩ নম্বর ট্যাঙ্ক সংলগ্ন এলাকায় একতলা সমান জল। লেকটাউনের বি ব্লকে বিভিন্ন রাস্তায় এক কোমর জল। সেই সুযোগে রিকশা ও ট্যাক্সিভাড়া দ্বিগুণ হয়ে যায়।
প্রতি বছর বর্ষাতেই দমদম পার্ক, লেকটাউন ভাসে। পুরকর্মীদের এক সাফাই, বাগজোলা খালের সংস্কার না হওয়ায় এই হাল। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে খাল সংস্কার হচ্ছে না কেন? বাঙুরের কাউন্সিলর মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলেন, “এ বছর গোড়া থেকেই খালের সংস্কার হচ্ছে। কিন্তু মূলত কেষ্টপুর লকগেট অঞ্চলে পানা ও আবর্জনা জমে থাকায় খালের জল উপচে পড়েছে। লকগেট দ্রুত পরিষ্কারের কাজ চলছে।” বাঙুরে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জল নেমে গিয়েছে বলে ওই কাউন্সিলরের দাবি। টানা বৃষ্টিতে ভিআইপি রোডের সার্ভিস রোডগুলিও জলের তলায়। কৈখালির কাছে ভিআইপি রোডে সার্ভিস রোড সংলগ্ন আবাসনের বাসিন্দারা জলবন্দি হয়ে পড়েন। জলে জমে চিনার পার্ক এলাকার নিউ টাউন রোডেও। ভিআইপি রোডের যানজট এড়াতে যে গাড়িগুলো নিউ টাউন রোড ধরে, সেগুলো চিনার পার্ক এলাকায় প্রায় এক কোমর জলের মধ্যে পড়ে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.