সমস্যা মেটাতে কথা চান গুরুঙ্গ
রে-বাইরে চাপের মুখে আলোচনার ডাক পেতে মরিয়া বিমল গুরুঙ্গ। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বুধবার বিকেল ৩টের সময় যে ফেসবুক-বার্তা দিয়েছেন, তাতে সেই আগ্রহই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সেখানে রাজ্য সরকারের নানা সিদ্ধান্তের সমালোচনা করলেও শেষ পর্যন্ত ইঙ্গিত দিয়েছেন, রাজ্যপাল যদি আলোচনায় ডাকেন, তা হলে তাঁরা কথায় বসতে আগ্রহী। পাশাপাশি, গুরুঙ্গ এই দাবিও করেছেন, গোর্খারা অস্তিত্বের সঙ্কটে ভুগছেন বলেই পাহাড়ে আন্দোলন চলছে।
মোর্চা সভাপতির আলোচনায় বসার আগ্রহের কথা পৌঁছেছে রাজ্যের কাছেও। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, “৫টা বছর জিটিএ ঠিকঠাক ভাবে না-চালিয়ে দু-তিন মাস পরেই পাহাড় অচল করে দেওয়াটা সুস্থ রাজনীতি নয়। জিটিএ নিয়ে, আরও বেশি স্বশাসন নিয়ে আলোচনার রাস্তা সব সময় খোলা। আগে জনজীবন স্বাভাবিক হোক। তার পর দরকারে রাজ্য আলোচনাও করবে।”
পাহাড়ে আন্দোলন তুলে জনজীবন স্বাভাবিক না-করলে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের ইঙ্গিত দিয়ে মঙ্গলবার ফেসবুকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই দার্জিলিঙে যাবেন তিনি। কেন্দ্র আগেই বলে দিয়েছে, রাজ্যকে এড়িয়ে কোনও আলোচনা হবে না। পাহাড়ের মানুষও জনজীবন অচল করে রাখার বিরুদ্ধে ক্রমশ সরব হচ্ছেন। পুরনো মামলায় মোর্চা নেতা-কর্মীদের ধরপাকড়ের সংখ্যা প্রায় ৬৫০ ছাড়িয়েছে। ধৃতদের যাঁরা জামিন পাচ্ছেন, তাঁদের অনেককে আবার অন্য মামলায় গ্রেফতার করার ঘটনাও ঘটছে। পাশাপাশি টানা ঝড়বৃষ্টি বিপর্যস্ত করে ফেলেছে পাহাড়কে।
দলের অন্দর ও বাইরের ক্ষোভ-অভিযোগের বিষয়টি গুরুঙ্গ ফেসবুক-বার্তায় জানিয়েছেন। সেখানে খানিকটা যেন অভিমানের সুরেই জানিয়েছেন, যে হেতু মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ের মানুষকে সম্মান করেন, তাই পাহাড়বাসীর আবেগকেও তাঁর মর্যাদা দেওয়া উচিত। তা না করে ‘শতবর্ষ প্রাচীন পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি’র পিছনে যে আবেগ রয়েছে, তাকে গুরুত্ব না দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ক্রমশ ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ অবস্থান নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছেন গুরুঙ্গ। এর পরে গুরুঙ্গ জানিয়েছেন, জিটিএ চুক্তিতে বলা ছিল, ২০০৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত মোর্চা নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কারণে যত মামলা হয়েছে, তা তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে রাজ্য। অথচ তা না করে ওই সব মামলায় ধরপাকড় চলছে। এতে জিটিএ চুক্তি লঙ্ঘিত হচ্ছে।
মন্ত্রী গৌতমবাবু অবশ্য বলেছেন, “দু-চার মাস পরপরই আন্দোলনের নামে পাহাড় অচল করে রাখা যাবে এমন কথাও তো চুক্তিতে বলা ছিল না। সাধারণ পাহাড়বাসীর শোচনীয় অবস্থা দেখে রাজ্য তো হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারে না।” আলোচনার রাস্তা খুঁজতে মোর্চা এর মধ্যে অন্য দলগুলির সঙ্গেও যোগাযোগ করছে। গোর্খাল্যান্ড জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির চেয়ারম্যান এনোস দাস প্রধান সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যকে ফোন করেন। অশোকবাবু বলেছেন, “আমি বলে দিয়েছি, আমরা যেমন গোর্খাল্যান্ডের দাবি সমর্থন করি না, তেমন আন্দোলন দমাতে যথেচ্ছ গ্রেফতারও মানতে পারব না।” তাঁর কথায়, “ওঁদের বলেছি, আপনারা পাহাড়ের জনজীবন স্বাভাবিক রাখুন। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে আরও স্বশাসনের রাস্তা খুঁজুন।”
প্রাকৃতিক দুর্যোগেও বিপর্যস্ত পাহাড়। এ দিনও বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। পানীয় জল সরবরাহেও বিঘ্ন ঘটে। দার্জিলিং পুরসভার চেয়ারম্যান তথা মোর্চা নেতা অমর রাই অভিযোগ করেন, ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজে ঢিলেমি চলছে। যদিও দার্জিলিঙের অতিরিক্ত জেলাশাসক গোপাল লামা বলেছেন, “সব কর্মীরা আসতে পারছেন না বলে সমস্যা হচ্ছে। পুরসভার সব কর্মীরা সহযোগিতা করলে কাজ আরও তাড়াতাড়ি হবে।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.