ফুটবলারদের নিজেদের মধ্যে সমস্যা ও বিতর্কের জন্যই গত মরসুমে মনঃসংযোগে সমস্যা হয়েছিল দলে। তার জেরেই ফল খারাপ মোহনবাগানের। বলছেন, চলতি মরসুমে সবুজ-মেরুন অধিনায়ক ওডাফা ওকোলি।
বুধবার সকালে ওডাফা যখন গত মরসুমের ব্যর্থতার কার্যত কাটাছেঁড়া করছেন, তখন সেই মনঃসংযোগ নিয়ে চিন্তায় ইস্টবেঙ্গলও। তবে সেটা নতুন মরসুমের জন্য। এএফসি কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের আগে যা ফিরে পেতে এ দিন অনুশীলনের পর কোচ মার্কোস ফালোপাকে ছাড়াই নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসেছিলেন ফুটবলাররাই। উদ্যোগ নিয়েছিলেন দলের দুই সিনিয়র বিদেশি চিডি এবং ওপারা।
যেখানে চিডি-ওপারারা সরাসরি বলে বসলেন, এএফসি কাপের নক আউট পর্বের জন্য আরও একাগ্রতা দরকার। কারণ, কর্তারা যেমন দল গড়তে টাকা খরচ করেছেন, তেমনই সমর্থকরাও ক্লাব টেন্টে ট্রফি দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। সুতরাং তাঁদের নিরাশ করা চলবে না। অনুশীলনে আরও মনোযোগী হওয়া দরকার। শুধু তাই নয়, জাতীয় দল ফেরত পাঁচ ফুটবলার দলে ফিরলে কী ভাবে দলের সঙ্গে তাঁদের মানিয়ে নিতে হবে, এ দিন তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
যা দেখে বা শুনে লাল-হলুদ কোচ মার্কোস ফালোপা বলছেন, “এটা ভাল লক্ষণ। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করলে অনেক সময় ভুল-ভ্রান্তি খুব সহজেই ধরা যায়। দলে একতা বাড়ে।”
এরই মাঝে এ দিন গোল করতে গিয়ে পোস্টে পা চালিয়ে চোট পেলেন মোগা। অনুশীলনের মাঝপথে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে তাঁকে মাঠ ছাড়তে দেখা যায়। দলের এই গুরুত্বপূর্ণ স্ট্রাইকার চোট পাওয়ায় শুরু হয় জল্পনা। যদিও সহ-সচিব ডাক্তার শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত বলছেন, “তেমন বড় চোট নয়।”
ব্রাজিলীয় ফালোপার দলে যখন একতা বাড়ানোর প্রস্তুতি, তখন মরক্কান করিম বেঞ্চারিফার দলেও একতা ফিরিয়ে এনে ট্রফি শিকারের প্রতিশ্রুতি। এ দিন সকালে বৃষ্টিস্নাত যুবভারতীতে আক্রমণের সময় ‘পজিশনাল গেম’-এর অনুশীলন হল জোর কদমে। আক্রমণের সময় চার ব্যাক এবং দুই উইং হাফ কী ভাবে নিজেদের জায়গা ব্যবহার করবে তা নিয়ে করিমকে দীর্ঘক্ষণ ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়।
অনুশীলনের পর বাগানের ‘কিং কোবরা’ ওডাফা কোচের অনুশীলন নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বললেন, “গত মরসুমের চেয়ে বৈচিত্র রয়েছে এ বারের অনুশীলনে। দলের সবাই ফিট।” যা শুনে ওডাফাদের কোচ করিম বলছেন, “অনেকটা রাস্তা যেতে হবে। তবে এখনও পর্যন্ত ফুটবলারদের কারও পেশির চোট নেই।”
গত মরসুমে ইস্টবেঙ্গল থেকে টোলগেকে ছিনিয়ে আনার পরও ট্রফি খরা কাটেনি মোহনবাগানে। উলটে ওডাফা-টোলগের ব্যক্তিত্ব সংঘাত নিয়ে অনেক মুচমুচে গল্প চাউর হয়ে গিয়েছিল ময়দানে। এ দিন ওডাফাও নাম না করে সেই প্রসঙ্গ মনে করিয়ে দেন। বলেন, “গত মরসুমে ফুটবলারদের মধ্যে অনেক বিতর্ক, সমস্যা ছিল। এ বার তা নেই।” নবাগত কাতসুমির প্রশংসা করে ওডাফা আরও বলেন, “কাতসুমি দুর্দান্ত পাসার। ওর সঙ্গে আমার দারুণ বোঝাপড়া তৈরি হচ্ছে।” তবে চতুর্থ বিদেশি নিয়ে কিছু জানতে চাইলেই সবুজ-মেরুনের গোলমেশিন দেখিয়ে দেন কোচকে।
এ দিকে, এ দিনই বাগানে ট্রায়াল দিতে শহরে এলেন আইভরি কোস্টের স্ট্রাইকার আবু কোনে। তার আগে বিকেলেই চলে আসেন আর এক বিদেশি এরিকও। ট্রেনে করে হাওড়া স্টেশনে এসে নামেন কিনিয়ার স্ট্রাইকার। বৃহস্পতিবার সকালে দু’জনেই যুবভারতীতে নামবেন ট্রায়াল দিতে।
|