তিন বছরের অপেক্ষার পর টেস্ট সেঞ্চুরির মুখ দেখলেন শেন ওয়াটসন। যদিও এ বারের অ্যাসেজে অস্ট্রেলিয়াকে টেনে তোলার পক্ষে অনেক দেরিতেই এল এই সেঞ্চুরি। ২০১০-এ মোহালির টেস্ট সেঞ্চুরির পর ৪৭টি ইনিংস খেলে ফেললেও একটিতেও সেঞ্চুরি পাননি অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন সহ অধিনায়ক। এত দিনে সেই খরা কাটল। প্রায় সারা দিন ব্যাট করে ১৭৬ রানে থামলেন তিনি। ওভালে অ্যাসেজের গুরুত্বহীন শেষ টেস্টে ০-৩-এ পিছিয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়া প্রথম দিনের শেষে ৩০৭-৪।
টেস্ট ক্রিকেটে পা রাখা দুই অনভিজ্ঞ ইংরেজ পেসার ক্রিস ওকস ও সাইমন কেরিগানকে পেয়ে বুধবার শুরু থেকেই দ্রুত রান তোলা শুরু করে দেন ওয়াটসন। এই দুই বোলার সাত ওভারে ৫৮ রান দেওয়ায় ওয়াটসন প্রথম দু’ঘন্টায় ৭৭ বলে ৮০ রান তোলেন। লাঞ্চের পর নিজের ৯১ রানের মাথায় স্টুয়ার্ট ব্রডের এক বিপজ্জনক শর্ট বল সামলাতে গিয়ে কানের পিছনে চোট পান ওয়াটো। তাতেও টলেননি। চা বিরতির আগেই সেঞ্চুরিতে পৌঁছে যান তিনি। এই নিয়ে টেস্টে তৃতীয় সেঞ্চুরি ৩২ বছর বয়সি অজি তারকার। ওয়াটসন ফর্মে ফিরলেও এ দিন ওয়ার্নার (৬) শুরুতেই আউট হয়ে যান। ওয়াটসনের সঙ্গে ১০৭ রানের পার্টনারশিপ খেলে রজার্স ফিরে যান ২৩ রানে। ক্লার্কও এ দিন সাতের বেশি রান করতে পারেননি। চতুর্থ উইকেটে স্টিভন স্মিথের (৬৬ অপরাজিত) সঙ্গে ১৪৫ রানের পার্টনারশিপ গড়ার পর ব্রডের বলে পিটারসেনের হাতে বেশ কঠিন ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ওয়াটসন। |
ওয়াটসন। ২৪৭ বলে ১৭৬। ওভালে বুধবার। ছবি: রয়টার্স। |
তিন বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার ভারত সফরের পর থেকে এত দিন সেঞ্চুরি না থাকার চাপ তো ছিলই। তার উপর আবার মোহালিতে চলতি বছরের মার্চে ওই সফরে অন্য তিন সতীর্থের সঙ্গে ওয়াটসন সাসপেন্ড হয়েছিলেন শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে। যার জের চলে চলতি সপ্তাহ পর্যন্ত। প্রাক্তন অজি কোচ মিকি আর্থার একটি সাক্ষাৎকারে বলে দেন, চলতি মরসুমে ভারত সফরে এই ঘটনার পর থেকেই তিনি ওয়াটসনের সমর্থন খুইয়ে বসেছিলেন। ওভালে এত দিনে যেন শাপমুক্তি ঘটল ওয়াটোর। আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন আগের থেকে নতুন কোচ ড্যারেন লেম্যানের অধীনে অনেক আনন্দে আছেন। সেই আনন্দই যেন ফুটে বেরোল ২৪৭ বলে ২৫টা চার আর একটি ছয় দিয়ে সাজানো দুরন্ত ইনিংসে। পরিসংখ্যান বলছে দু’বছর পর আবার তিন নম্বরে নামা কোনও অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি করলেন। ২০১১ সেপ্টেম্বরে পাল্লেকেলেতে শন মার্শের সেঞ্চুরির পর। একই সঙ্গে ইংরেজ বোলারদের রীতিমতো শাসন করে হয়তো সমালোচকদের জবাবটাও দিয়ে দিলেন ওয়াটসন।
২৫তম ওভারে সাইমন কেরিগানের ওভারে ১৮ রান তুলে নিয়ে অ্যালিস্টার কুককে বাধ্য করেন স্টুয়ার্ট ব্রডকে ফিরিয়ে আনতে। তাতেও রোখা যায়নি ওয়াটসনকে। প্রচুর চার, ডট বল আর কয়েকটা এলবিডব্লিউ-র আবেদন ঘেরা ইনিংস ৮৮ ওভারে থামার আগে আরও নাটক। ৮২তম ওভারে ক্রিস ওকসের বলে ওয়াটসনকে এলবিডব্লিউ আউট দিয়ে দেন ফিল্ড আম্পায়ার। ডিআরএস-এ ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নাকচ হয়ে যায়। সিরিজে এই নিয়ে ন’বার এলবিডব্লিউ আউটের বিরুদ্ধে আবেদন জানিয়ে দ্বিতীয় বার জীবন পান ওয়াটসন। নতুন জীবন অবশ্য ছ’ওভারের বেশি স্থায়ী হয়নি। |