শীর্ষ কর্তা নিয়োগে জটিলতা,
সমস্যায় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা
রুগ্ণ সংস্থার তকমা ঝেড়ে সদ্য ঘুরে দাঁড়িয়েছিল রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ব্রিজ অ্যান্ড রুফ। কিন্তু, গত কয়েক মাস ধরে শীর্ষ কর্তা নিয়োগে জটিলতা তৈরি হওয়ায় চলতি বছরে ওই সংস্থার পক্ষে লক্ষ্যমাত্রার ধারে কাছে পৌঁছতে পারা সম্ভব নয় বলে আশঙ্কা প্রকাশ করল কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প মন্ত্রক।
সেপ্টেম্বর থেকে ওই সংস্থার কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান কাম ম্যানেজিং ডিরেক্টর (সিএমডি)-র দায়িত্ব নেওয়ার কথা রয়েছে সংস্থারই অধিকর্তা (প্রকল্প) এম কে সিংহের। কিন্তু, ওই ব্যক্তির নিয়োগের বিরোধিতায় এখন সরব হয়েছে অফিসার থেকে কর্মী ইউনিয়ন- সকলেই। রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী ও সিপিএম সাংসদ বাসুদেব আচারিয়াও ওই ব্যক্তিকে নিয়োগ করা উচিত কি না তা খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ করেছেন কেন্দ্রীয় ভারী শিল্পমন্ত্রী প্রফুল্ল পটেলকে।
গত কয়েক বছর ধরে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল রুগ্ণ হয়ে পড়া ব্রিজ অ্যান্ড রুফ। গত আর্থিক বছরে ১৩২১ কোটি টাকার ব্যবসা করে সংস্থাটি। কিন্তু সংস্থার শীর্ষ কর্তা মুকেশ ঝা-র পর দায়িত্ব কে নেবে তা নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে চূড়ান্ত বিবাদ সৃষ্টি হয় সংস্থার অন্দরমহলে। মন্ত্রকের পক্ষ থেকে পরবর্তী সিএমডি হিসাবে সংস্থার ‘সিনিয়র মোস্ট’ ব্যক্তি এম কে সিংহের নাম প্রস্তাব করার পর থেকেই বিবাদের সূত্রপাত।
এম কে সিংহের নিয়োগকে কেন্দ্র করে একটি মামলা হয়। সেই মামলা এখনও সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন। তাই আপাতত কার্যনির্বাহী সিএমডি হিসেবে দায়িত্ব নিতে হবে তাঁকে।
কিন্তু তাতেও আপত্তি নানা শিবিরে। সিটু ও আইএনটিইউসি দু’টি সংগঠনই এম কে সিংহকে সিএমডি করার বিরোধী। তাদের অভিযোগ, ওই ব্যক্তি ইতিমধ্যেই একাধিক সংস্থায় সিএমডি হিসাবে কর্মরত রয়েছেন। ফলে তাঁর পক্ষে ব্রিজ অ্যান্ড রুফে প্রয়োজনীয় সময় দেওয়া সম্ভব হবে না। অথচ, সদ্য ঘুরে দাঁড়ানো ওই সংস্থায় এখন এমন এক জন ব্যক্তি চাই যিনি সময় দিতে পারেন।
আইএনটিইউসি-র সেক্রেটারি জেনারেল কোয়ামরুজ্জামান কামার প্রফুল্ল পটেলকে লেখা চিঠিতে জানান, বর্তমানে তিনটি সংস্থায় সিএমডি-র দায়িত্বে আছেন এম কে সিংহ। তিনি মাসে মাত্র ৭-১০ দিন কলকাতায় থাকেন। ফলে তাঁর পক্ষে ওই সংস্থার কাজ সর্বক্ষণ দেখা সম্ভব নয়।
ওই কর্মী সংগঠনের আরও অভিযোগ, বিএইচইল, এনটিপিসি-র মতো একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বরাত পেয়ে ব্রিজ অ্যান্ড রুফ ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু, এম কে সিংহের ভূমিকায় বিএইচইএলের মতো সংস্থাগুলি ক্ষুব্ধ। কারণ, অনুপস্থিতির কারণে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে না তারা। পরিস্থিতি না শুধরোলে ভবিষ্যতে সমস্ত বরাত বাতিল করার হুমকিও দিয়েছে বিএইচইএল।
সিপিএম সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া বলেন, “এমন এক জনকে ওই পদে চাই যিনি সংস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। সংস্থা যাতে ফের রুগ্ণ না হয়ে পড়ে তা নিশ্চিত করার জন্য প্রফুল্ল পটেলের কাছে দল আবেদন জানিয়েছে।” বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীও। তিনিও প্রফুল্ল পটেলকে অনুরোধ করেছেন যাতে ওই ব্যক্তির নামে থাকা সব অভিযোগ খতিয়ে দেখেই তবেই নিয়োগের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়।
শুধু দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা নয়, এম কে সিংহের বিরুদ্ধে মহিলা সহকর্মীকে হয়রানির অভিযোগও রয়েছে। অভিযোগটির তদন্তের দায়িত্বে রয়েছে লালবাজারের নারী নির্যাতন শাখা। আইএনটিইউসি নেতা কামারের দাবি, ওই মহিলা কর্মীকে হয়রানির বিরোধিতা করায় একাধিক কর্মীকে খেয়ালখুশি মতো বদলির নির্দেশও দিয়েছেন এম কে সিংহ। কেন ওই বদলি করা হয়েছিল তা নিয়েও রিপোর্ট চেয়েছে মন্ত্রক।
এম কে সিংহের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। সিএমডি নিয়োগে জটিলতা দেখা দেওয়ায় ব্রিজ অ্যান্ড রুফের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন সংশ্লিষ্ট সব শিবিরই।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.