|
|
|
|
মুখ্যমন্ত্রীর গোষ্ঠী পরিচয় নিয়ে বিতর্ক মেঘালয়ে
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি |
মুখ্যমন্ত্রীর গোষ্ঠী পরিচয় নিয়ে উত্তাল মেঘালয়।
উপজাতি প্রধান রাজ্যের প্রশাসনিক দায়িত্ব কোনও বাঙালির সন্তানের হাতে থাকতে পারে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যের বিভিন্ন মহলে। তবে, এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমার পাশে দাঁড়িয়েছে তাঁর নিজের গোষ্ঠী।
বিতর্কের সূত্রপাত এ বছর মে মাসে। উইলিয়ামনগর কংগ্রেস কমিটির মুখ্য সাংগঠনিক সচিব টেনিডার্ড এম মারাক দাবি জানান, মুখ্যমন্ত্রী ‘সাংমা’ পদবি ব্যবহার করতে পারেন না। কারণ, মুকুলবাবুর মা অসমের নগাঁওয়ের বাঙালি পরিবারের মেয়ে। বাবা মান্দা মাহারি গোষ্ঠীর সদস্য। পরে, মুখ্যমন্ত্রীর মা এবং মুকুল গারোদের পদবি গ্রহণ করেন। টেনিডার্ডের বক্তব্য, মেঘালয়ে সমাজ মাতৃতান্ত্রিক। গারোরা মায়ের গোষ্ঠীকেই মেনে চলে। বাঙালি মায়ের সন্তান মুকুলবাবু তাই গারো উপজাতি অধ্যুষিত মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন না।
এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য এখনও করেননি মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর পরিবারসূত্রে জানানো হয়েছে, নগাঁওয়ের বাঙালি মুসলিম পরিবারের মেয়ে রোশেনারা এবং গারো খ্রিষ্টান বিনয়ভূষণ মোদক মারাক সমাজ, ধর্মের বিভেদ কাটিয়ে বিবাহ করেন।
মুকুলবাবুর গোষ্ঠী জানিয়েছে, রোশেনারা দেবী গারো সমাজের রীতিনীতির সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন। বিয়ের পর বাপের বাড়ির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। বান্দালকোনা গ্রামের রাকমি মান্দা সাংমা এবং তাঁর স্বামী গোসিন সি মারাক ওই মহিলার দায়িত্ব নেন। গারো সমাজের আচার মেনে নিজেদের মেয়ে হিসাবেও ঘোষণা করেন। তাঁর পদবি হয় মান্দা সাংমা। তিনি মাহারি উপজাতির মান্দা গোষ্ঠীভুক্ত হন। মুকুলবাবুর জন্ম হয় মাহারদের আশ্রয়েই।
মুখ্যমন্ত্রীর ‘সাংমা’ পদবি ব্যবহারের প্রতিবাদে টেনিডার্ড-এর পাশাপাশি প্রতিবাদে নেমেছে ‘অল নর্থ-ইস্ট ইন্ডিজেনাস গারো ল প্রোমোটার অ্যাসোসিয়েশন’। সংগঠনটির দাবি, জন্মসূত্রে মুকুল গারো হতে পারেন না। পদবি বদলালেও, মুকুলবাবুর মা আমৃত্যু ইসলাম ধর্ম পালন করে গিয়েছেন। মায়ের পরিচয় লুকিয়েই জেলাশাসকের কাছ থেকে উপজাতি শংসাপত্র নিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশন, সংখ্যালঘু কমিশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছেও চিঠি পাঠিয়েছে সংগঠনটি।
মান্দা মাহারি গোষ্ঠীর সম্পাদক লোনারসন সি মারাক বলেন, “রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের জন্যই এ নিয়ে মাতামাতি হচ্ছে। গারো নিয়ম মেনেই মুকুল মাহারি সম্প্রদায়ভুক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে ভিত্তিহীন বিতর্ক চলছে।”
|
|
|
|
|
|