উদার হিন্দুদের আস্থা জয়ে মোদীর মুখে মুসলিম ভোট
গুজরাতে গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গায় অভিযুক্ত তিনি। তবু দলকে সংখ্যালঘুদের সমর্থন পাওয়ার জন্য উৎসাহিত করতে নিজের রাজ্যেরই উদাহরণ তুলে ধরলেন নরেন্দ্র মোদী। আজ দিল্লিতে বিজেপির কর্মী-সংগঠকদের সভায় মোদী বলেন, “গুজরাতে আমি যদি মুসলিমদের ভোট পেতে পারি, তা হলে অন্যত্র বিজেপি কেন পাবে না।” দেশের সব শ্রেণির মানুষের পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের ভোটও যাতে বিজেপির ঘরে আসে, তার জন্য দলীয় কর্মীদের সর্বাত্মক ভাবে ঝাঁপাতে নির্দেশ দিয়েছেন মোদী।
কিন্তু প্রশ্ন হল, হঠাৎ কেন মুসলিম ভোট পেতে বিজেপি এত মরিয়া?
মুখে সংখ্যালঘু ভোট পাওয়ার কথা বললেও বিজেপি ভাল করেই জানে, তাদের পক্ষে মুসলিমদের সমর্থন পাওয়া যথেষ্ট মুশকিল। তা সত্ত্বেও মোদী এ বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়ায় মনে করা হচ্ছে, সংখ্যালঘু সমাজ নয়, ধর্মনিরপেক্ষ হিন্দু ভোটারদেরই আসলে বার্তা দিতে চেয়েছেন তিনি। তাদের সমর্থন আদায়ই পাখির চোখ বিজেপির।
দূরত্ব রয়েই গেল। রবিবার নয়াদিল্লিতে বিজেপির কর্মিসভায় নরেন্দ্র
মোদী ও লালকৃষ্ণ আডবাণী। রয়েছেন সুষমা স্বরাজও। ছবি: প্রেম সিংহ
কারণ উদার হিন্দুদের একটি বড় অংশ বিজেপি-সঙ্ঘ পরিবারের কট্টর ভাবধারা সমর্থন করেন না। গুজরাত দাঙ্গার পর মোদীর যে সংখ্যালঘু-বিরোধী ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে, তাতে ওই ধর্মনিরপেক্ষ হিন্দুরা বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। দলের এক নেতার কথায়, “মুসলিম ভোট পাওয়া গেলে সেটা হবে বাড়তি লাভ। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ, শিক্ষিত, মধ্যবিত্ত, উদার হিন্দুদের যে অংশ দল থেকে মুখ ফিরিয়ে রেখেছে, তাদের সমর্থন আদায়ই আমাদের লক্ষ্য।” সংখ্যালঘুরা বিজেপিকে ভোট দেবে মোদীর এই দাবি খারিজ করে কংগ্রেস নেতা রশিদ অলভি বলেছেন, “উনি দেশের মানুষকে বিপথে চালিত করার চেষ্টা করছেন।”
লোকসভা নির্বাচনের আগে নিজের সংখ্যালঘু-বিরোধী ভাবমূর্তি বদলাতেও মরিয়া মোদী। শিল্পবন্ধু হিসাবে নিজেকে তুলে ধরার পরেও তিনি এখনও মার্কিন ভিসা পাননি। আজ দলীয় কর্মীদের সভায় মোদী বলেন, “গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে দল ২৫ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট পেয়েছে। তা হলে অন্যত্র লোকসভা নির্বাচনে কেন পাবে না?” মোদী বলেন, এটা সম্ভব হলে আনায়াসে ম্যাজিক সংখ্যা ২৭২-র কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে বিজেপি। এক আগে প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী বলেন, “মানুষ কংগ্রেসের হাত থেকে মুক্তি পেতে চাইছে। আমরা এক জোট হয়ে নির্বাচনে লড়তে পারলে ম্যাজিক সংখ্যায় পৌঁছনোটা সমস্যা হবে বলে মনে করি না।” আডবাণীর ওই দাবির সকতা উল্লেখ করে মোদী আজ বলেন, “ওই লক্ষ্য ছোঁয়া অসম্ভব নয়।”
নেতাদের কোন্দলের কারণেই বিজেপি এখনও তাদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীই যে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির মুখ হতে চলেছেন, কার্যত তা মেনে নিয়েছেন আডবাণী, সুষমা স্বরাজেরা। মোদী যে ভাবে দেশবাসীকে উন্নয়ন ও শক্তিশালী রাষ্ট্র গঠনের বার্তা দিচ্ছেন, তাঁকে সামনে রেখে লোকসভা নির্বাচনে লড়া ছাড়া অন্য রাস্তা নেই বলেই মনে করছে দলের মোদী-বিরোধী অংশ। তবে মোদীর নেতৃত্বে নতুন শরিক দল কতটা এনডিএ-তে আসবে, তা নিয়ে দলে প্রশ্ন রয়েছে। এ ক্ষেত্রে মোদী শিবিরের পাল্টা যুক্তি, দল সরকার গড়ার মতো জায়গায় পৌঁছলে বহু শরিক এসে ভিড় করবেন।
গত কাল প্রচার কমিটির বৈঠকে বিহার বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়, এখনই মোদীর নাম প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হোক। আজ দলীয় সভাপতি রাজনাথ সিংহ কর্মীদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “ভবিষ্যতে যেন এমন দাবি তোলা না হয়। এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার হলে তা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই নেবে।” পাশাপাশি আজ দলের সমস্ত রাজ্য সভাপতিকে নিজেদের রাজ্যের সব ক’টি কেন্দ্রের জন্য প্রার্থী তালিকা তৈরি শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন রাজনাথ।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.