|
|
|
|
সীমান্তে নতুন হামলার আশঙ্কায় দিল্লি
সংবাদসংস্থা • শ্রীনগর |
টানা ন’দিন হয়ে গেল সীমান্তে সংঘর্ষ থামার কোনও লক্ষণ তো নেইই, বরং তা বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছে সেনাবাহিনী। যে সব জায়গায় এত দিন হামলা হয়নি, নতুন করে হামলার জন্য পাক বর্ডার অ্যাকশন টিম (ব্যাট) সেই সব এলাকাকেই বেছে নিয়েছে বলে রবিবার দাবি করলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর কম্যান্ডার এ সেনগুপ্ত। গত জানুয়ারিতে এ দেশে ঢুকে দুই জওয়ানের মাথা কেটে নিয়ে গিয়েছিল এই বর্ডার অ্যাকশন টিম। পাক সেনা ও লস্কর জঙ্গিদের নিয়ে তৈরি এই ব্যাটের দিকেই অভিযোগের আঙুল উঠেছিল পুঞ্চে পাঁচ জওয়ানকে হত্যার সময়েও। এ দিন কম্যান্ডার সেনগুপ্ত জানান, “আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, প্রায় দু’শো-তিনশো জন জঙ্গিকে সীমান্ত দিয়ে এ দেশে ঢোকানোর চেষ্টা করছে পাক সেনারা। আর তার জন্যই নতুন করে হামলার ছক কষছে বর্ডার অ্যাকশন টিম।”
এ দিকে আজও সারা দিন অব্যাহত দুই শিবিরের গুলি বিনিময়। প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র এস এন আচার্য জানিয়েছেন, বেলা দু’টোয় পুঞ্চের মেন্ধর সেক্টরে গুলি-পাল্টা গুলি চলেছে। স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গোলাগুলি, মর্টার ছুড়েছে পাক সেনারা। জবাব দিয়েছে ভারতও। তবে হতাহতের কোনও খবর মেলেনি। পুঞ্চের হামিরপুর, কৃষ্ণঘাঁটি, বালাকোট এলাকায় গোলাগুলির আওয়াজ থামেনি কাল রাতেও। সেনা সূত্রে খবর, কাল রাত পৌনে বারোটা নাগাদ নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয় এই সেক্টরে। চলে ভোররাত পর্যন্ত। সেনা ছাউনি লক্ষ্য করে বোমা, গুলি, রকেট ছোড়ে ভারত- পাকিস্তান দু’পক্ষই। রবিবার দুপুরে কুপওয়ারার কেরন সেক্টরে জঙ্গি অনুপ্রবেশের চেষ্টাও বানচাল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনা।
ব্রিগেডিয়ার সেনগুপ্তের মতে, এর আগেও দু’তিন মাসে এক বার ছোটখাটো সংঘর্ষ-বিরতি লঙ্ঘন করেছে পাক সেনা। কিন্তু এই বছর জানুয়ারির শুরু থেকে চলতি মাসের পাঁচ তারিখ পর্যন্ত সংঘর্ষ-বিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে অন্তত ৭০ বার। গত বছরের তুলনায় যা প্রায় ৮৫% বেশি। এ হেন লাগাতার আক্রমণ যেন মনে করিয়ে দিচ্ছে ২০০৩ সালের আগের পরিস্থিতিকে। সে সময় সীমান্তে পাক গোলাবর্ষণের জবাব দিতে চব্বিশ ঘণ্টা অস্ত্র উঁচিয়ে ‘পজিশন’ নিয়ে বসে থাকতেন ভারতীয় সেনারা। ২০০৩-এর নভেম্বরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতিতে এনডিএ জমানায় সই হয়েছিল ভারত-পাক সংঘর্ষ-বিরতি চুক্তি। এ বছর নভেম্বরেই দশ বছর পূর্ণ হতে চলেছে তার। কিন্তু ধারাবাহিক আক্রমণে তার আগেই রীতিমতো প্রশ্নের মুখে দেশের সংঘর্ষ-বিরতি চুক্তি।
তবে আক্রমণ যে রকমই হোক না কেন, তার সমুচিত জবাব ভারত দেবে বলে আজ আরও এক বার স্পষ্ট করে দিয়েছেন সেনাবাহিনীর আর এক কর্তা মেজর জেনারেল ভি পি সিংহ। “সীমান্তে ব্যাটের কার্যকলাপ নিয়ে আমরা সম্পূর্ণ সচেতন। ঠিক সময়ে উচিত জবাব দেবে ভারতও” জানিয়েছেন মেজর জেনারেল।
দুই দেশের সেনাবাহিনীর আক্রমণ আর তার জবাবের মাঝে পড়ে অবশ্য ঘুম ছুটেছে সীমান্তবর্তী গ্রামের বাসিন্দাদের। হামলার ভয়ে ঘরবন্দি দশা কবে ঘুচবে, এখন সেই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজে চলেছেন তাঁরা। |
পুরনো খবর: জাগছে কার্গিলের স্মৃতি, আতঙ্কে গ্রামবাসীরা |
|
|
|
|
|