চাষিদের ধানের দাম মেটানো নিয়ে প্রতারণায় অভিযুক্ত মন্তেশ্বরের দুই চালকল মালিককে গ্রেফতার করল পুলিশ। প্রায় পাঁচ মাস ধরে পলাতক ছিলেন তাঁরা। শেষে রবিবার বিকেলে খণ্ডঘোষের গোপীনাথপুর গ্রাম থেকে তাঁদের ধরা হয়। গ্রেফতার করা হয়েছে চালকলের আরও দুই কর্মীকে।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১২ সালের ডিসেম্বরে। মন্তেশ্বরের জামনা কৃষি সমবায় সমিতি সহায়ক মূল্যে এলাকার চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনে। চাষিরা অভিযোগ করেন, সমবায় সমিতি তাঁদের টাকা দিচ্ছে না। এ নিয়ে ব্লক অফিসে দেড়শোরও বেশি চাষি বারবার অবস্থান বিক্ষোভ করেন। সমবায়ের তরফে জানানো হয়, এলাকার দু’টি চালকলকে তাঁরা ধান দিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের মধ্যে ‘সুনন্দা’ চালকল পুরো টাকা না মেটানোয় সমস্যা হচ্ছে। প্রায় ৯১ লক্ষ টাকা পাওনা মেটানোর ব্যাপারে ওই চালকলের মালিক অভিজিৎ মণ্ডল ও অরিজিৎ মণ্ডলকে নিয়ে প্রশাসন বৈঠকও করে। তাঁরা আশ্বাস দেন, টাকা দিয়ে দেবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা না দেওয়ায় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিগমের তরফে কলকাতার নিউমার্কেট থানায় ওই দুই ভাইয়ের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার পরেই দু’জন গা ঢাকা দেন। ওই চাষিদের কলকাতায় নিয়ে গিয়ে নিজের ত্রাণ তহবিল থেকে ধানের টাকা মেটান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পুলিশের পাশাপাশি ওই চালকল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে সিআইডি-ও। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মোবাইল ফোনের টাওয়ারের অবস্থান দেখে ধরার চেষ্টা হয় ওই মন্তেশ্বরের মাঝেরগ্রামের বাসিন্দা ওই দু’জনকে। কয়েক বার অভিযানও হয়। কিন্তু তাঁদের ধরা যায়নি। চালকলটি আগেই বন্ধ করেছে পুলিশ।
সম্প্রতি পুলিশের কাছে খবর আসে, খণ্ডঘোষে চালকলের কর্মী সুব্রত দত্তর বাড়িতে লুকিয়ে রয়েছেন অভিজিৎ ও অরিজিৎ। রবিবার কালনার এসডিপিও ইন্দ্রজিৎ সরকার-সহ পুলিশের একটি দল সেখানে যায়। গ্রেফতার করা হয় দুই ভাইকে। এ ছাড়াও সুব্রত ও ওই চালকলের আর এক কর্মী তরুণ দাসকে ধরেছে পুলিশ। মন্তেশ্বর থানার তরফে জানানো হয়, ধৃতদের জেরা করে আরও তথ্য পাওয়ার চেষ্টা হবে।
|