অস্বাভাবিক মৃত্যু হল এক স্কুল ছাত্রের। রবিবার পূর্বস্থলী ১ ব্লকের সমুদ্রগড় মোল্লার বিল এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম অঞ্জন মুন্সি (১৮)। সমুদ্রগড় উচ্চবিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল সে। এই ঘটনার তদন্ত দাবি করে এলাকাবাসী এ দিন থানায় একটি স্মারকলিপি জমা দেন। তাঁদের দাবি, ওই ছাত্রকে খুন করা হয়েছে। অভিযোগ, এই ঘটনায় যুক্ত তার বাবা এবং সৎ মা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পূর্বস্থলী থানা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অঞ্জনের বাবা অধীর মুন্সি বহু বছর ধরে ওই এলাকার বাসিন্দা। বছর আটেক আগে প্রথম পক্ষের স্ত্রী সোমা মুন্সির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। এর পর এলাকার এক বিধবা মহিলা মালা মুন্সিকে বিয়ে করেন অধীরবাবু। ওই সময় অঞ্জন ছাড়াও সোমাদেবী ও অধীরবাবুর দুই মেয়ে ছিল। পরবর্তী সময়ে তাঁদের দু’জনেরই বিয়ে হয়ে যায়। এলাকাবাসীর দাবি, দুই দিদির বিয়ের পর থেকেই অঞ্জনকে মারধর করতেন তার বাবা। স্কুলের বন্ধুদের কাছে এ নিয়ে আক্ষেপও করত সে।
এ দিন সকালে অঞ্জনের মৃতদেহ ঘরের বাইরে বের করে কান্নাকাটি শুরু করেন তার বাবা ও মা। তাঁরা মৃতদেহ সৎকারের চেষ্টা করেন। এই ঘটনায় সন্দেহ হয় এলাকার বাসিন্দাদের। তাঁদের দাবি, অঞ্জনের পায়ের তলায় কালো দাগ দেখতে পান তাঁরা। তাঁদের সন্দেহ হয় বৈদ্যুতিক শক দিয়ে খুন করা হয়েছে অঞ্জনকে। এর পরেই তাঁরা ঘটনার তদন্তের দাবি করে পূর্বস্থলী থানায় একটি স্মারকলিপি জমা দেন। স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করা হরেন বিশ্বাস, রঞ্জিত বিশ্বাসদের বক্তব্য, “অঞ্জন শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিল। আমাদের দৃঢ় ধারণা সে আত্মহত্যা করতে পারে না। অথচ ওর বাবা এবং সৎ মা ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালাতে চাইছে। তাই আমরা তদন্ত চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়েছি।” অঞ্জনের দিদি সুপর্ণা চক্রবর্তী বলেন, “সামান্য কারণে বাবাকে বেধড়ক মারত ভাইকে। আমি ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে গালিগালাজ করত। মৃত্যুর খবর শুনে ভাইয়ের ঘরে ঢুকতেই একটি ডায়েরি খোলা রয়েছে দেখতে পাই। সেখানে কী লেখা আছে তা পড়তে গেলে বাবা দৌড়ে ডায়েরি কেড়ে পাতা ছিঁড়ে নেয়।” তাঁর দাবি, অভাবের টানেই তাঁর মা-কে মুম্বইয়ে কাজ করতে যেতে হয়। সেখান থেকেই তিনি অঞ্জনের জন্য টাকা পাঠাতেন। |