এক পায়ে তালা সমেত শিকল জড়ানো অবস্থায় এক কিশোরকে উদ্ধার করল বর্ধমান জিআরপি। শনিবার সন্ধ্যায় বর্ধমান স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। ওই কিশোরের নাম আলমোড়া সিংহ রানা। সে রেলপুলিশকে জানিয়েছে, তার বাড়ি ব্যারাকপুরের ক্যান্টনমেন্ট স্কুলের পাশে। আলমোড়াকে আপাতত বর্ধমানের তেঁতুলতলা বাজারের চাইল্ডলাইন নামে একটি বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ওই সংস্থা জানিয়েছে, কাউন্সিলিংয়ের পরে ওই কিশোরকে তার বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
বর্ধমান জিআরপির ওসি প্রমথেশ সাহা বলেন, “ওই কিশোর মানসিক ভারসাম্যহীন। প্রায়ই সে বাড়ি থেকে পালাত বলে জানিয়েছে। তবে বিভিন্ন সময় সে বিভিন্ন ধরনের কথা বলছে। ফলে ঠিক কী ঘটেছে বোঝা যাচ্ছে না। বাড়ির ঠিকানা জোগাড় করে ওর বাবা-মাকে ডেকে পাঠাব।” |
আলমোড়া সিংহ রানা।—নিজস্ব চিত্র। |
এ দিন হাওড়া থেকে আসা একটি লোকাল ট্রেনের কামরা থেকে নেমে স্টেশনে ইতিউতি ঘুরে বেড়াচ্ছিল আলমোড়া। বাঁ পায়ে ছিল তালা লাগানো শিকল, যার এক দিক ভাঙা। তাকে এ অবস্থায় ঘুরতে দেখে বর্ধমান জিআরপিতে খবর দেন অন্য যাত্রীরা। জিআরপির কনস্টেবলেরা এসে তাকে নিয়ে যায়। পরে চাইল্ড লাইনের দফতরে বসে ওই কিশোর বলে, “আমি খুব দুষ্টুমি করতাম বলে বাবা-মা আমায় শিকলে বন্দি করে রাখত। দিন চারেক আগে দুপুরে জানালায় আটকানো শিকল আমি খুলে ফেলি। সে দিন বাড়িতে কেউ ছিল না। তারপর থেকে নানা জায়গায় ঘুরছি। শেষে ব্যারাকপুর থেকে ট্রেনে চড়ে হাওড়া আসি। তারপর ট্রেনে চড়েই নানা স্টেশনে ঘুরছি।” তবে কোন কোন স্টেশনে ঘুরেছে তার বিস্তারিত বিবরণ দিতে পারেনি ওই কিশোর। সে নিজেই জানিয়েছে, তার বাবার নাম ইয়াদি সিংহ ও মায়ের নাম সীমা দেবী। এক দাদা ও বোনও রয়েছে তার। তারা নিয়মিত স্কুলে যায়। সে স্কুলে পড়ে কিনা জানতে চাওয়া হলে আলমোড়া জানায়, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পরে সে আর পড়তে চাইত না। সারাদিন বাড়ির বাইরে নানা জায়গায় ঘুরত, বদমায়েশি করত। তাই তার বাবা-মা প্রথম প্রথম মারধর করতেন পরে বাড়িতে আটকে রাখতে শুরু করেন। তাও সে প্রায়ই পালিয়ে যেত। আর বাবা মা ফিরিয়ে আনতেন। শেষে তাঁরা বিরক্ত হয়ে তাকে শিকলে বেঁধে রাখতেন বলেও সে জানিয়েছে। |