সব কিছু ঠিকঠাক চললে, জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ইচ্ছেমতো ট্রেনিং এবং রিহ্যাবের সুযোগ-সুবিধা বন্ধ হতে চলেছে ক্রিকেটারদের। ক্রিকেটাররা এনসিএ-তে আসতে পারবেন। ট্রেনিং কিংবা রিহ্যাবও করতে পারবেন। কিন্তু হাতে টিম ফিজিও-র বৈধ চিঠি থাকলে, তবেই।
দিন কয়েক আগে যুবরাজ সিংহ এবং জাহির খানের বিরুদ্ধে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিকে ইচ্ছেমতো ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল। বলা হচ্ছিল, এই দুই ক্রিকেটার এনসিএ-কে গেস্টহাউস বানিয়ে ফেলেছেন। এ দিনই আবার ফ্রান্সে ট্রেনিং করে দেশে ফিরেছেন যুবরাজরা। যুবরাজ টুইটও করেন, “ছ’সপ্তাহের কঠোর পরিশ্রম শেষ হল। আশা করব, ভবিষ্যতে এর সুফল পাব।” যুবরাজ পরোক্ষে যেন এটাই বুঝিয়ে দিলেন, নিজের খরচে বিদেশে গিয়ে ট্রেনিং করতে তিনি প্রস্তুত। বোর্ডের উপর নির্ভর করার প্রয়োজন নেই।
প্রায় দেড় বছর ধরে এনসিএ-তে পড়ে থাকার অভিযোগ উঠেছিল বরুণ অ্যারনের নামেও। এনসিএ কমিটির গত বৈঠকে পুরো ব্যাপারটা নিয়ে উত্তেজনাও ছড়ায়। আপাতত যা খবর, এনসিএ-তে ইচ্ছেমতো যাওয়া-আসা বন্ধ হচ্ছে। বরং ক্রিকেটারদের জন্য থাকছে নির্দেশনামা।
সেগুলো কী?
বোর্ড কর্তাদের কারও কারও বক্তব্য, ক্রিকেটাররা চোট পেতে পারেন তিন ভাবে। আন্তর্জাতিক ম্যাচে। রাজ্যের জার্সিতে নেমে। কিংবা আইপিএল খেলতে গিয়ে। ভারতের হয়ে খেলতে গিয়ে চোট লাগলে, জাতীয় দলের ফিজিওই প্রস্তাব পাঠাবেন এনসিএ-তে। সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারের যাবতীয় খরচ তখন বোর্ড দেবে। আইপিএল বা ঘরোয়া ক্রিকেটে চোট লাগলেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট ফ্র্যাঞ্চাইজি বা রাজ্য দলের ফিজিও-র চিঠি লাগবে। কিন্তু ফিজিও-র বৈধ চিঠি ছাড়া কোনও ক্রিকেটারকেই এনসিএ-তে ট্রেনিং করতে দেওয়া হবে না। তা সে যত বড় নামই হোক।
পাশাপাশি জাতীয় অ্যাকাডেমিকে ঘিরে আর্থিক কেলেঙ্কারির যাবতীয় তথ্য খতিয়ে দেখতে বোর্ড সচিব সঞ্জয় পটেল এবং সিএও রত্নাকর শেঠিকে দায়িত্ব দিল বোর্ড। ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি’-র যা কাজ, এঁদেরও তাই হচ্ছে। কয়েক দিন আগেই জানাজানি হয় যে, এনসিএ-র জন্য জমি কিনতে গিয়ে প্রতারিত হয়েছে বোর্ড। কর্নাটকে অ্যাকাডেমির জন্য পঞ্চাশ একর জমি তো পাওয়া যায়ইনি, উল্টে প্রতারণার জেরে ক্ষতি হয়েছে পঞ্চাশ কোটি টাকা। জানা যায়, বোর্ডের তরফে জমি সংক্রান্ত কাগজে সই করেছেন গুরুদত্ত শানবাগ নামের এক ব্যবসায়ী। যাঁর সঙ্গে বোর্ডের আদতে কোনও সম্পর্ক নেই। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে বোর্ড সচিবকে।
জানা গেল, টাকা ফেরত পাওয়া নিয়েও ঝামেলা আছে। কারণ— কর্নাটক ইন্ডাস্ট্রিয়াল ও এগ্রিকালচারাল ডেভলপমেন্ট বোর্ডের সঙ্গে জমি নিয়ে যে চুক্তি আছে, তাতে পরিষ্কার বলা যে টাকা ফেরত চাইলে পুরো অঙ্কের পঁচিশ শতাংশ কেটে নেওয়া হবে। বোর্ড তাতে রাজি নয়। বরং আইনি পথে যাওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
|