কোচবিহারের অনেক এলাকায় যেখানে তৃণমূলের জয়কার সেখানে জেলারই হলদিবাড়ি ব্লকে তৃণমূল কার্যত কোণঠাসা হয়ে রইল। ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৫টিতেই বাম প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। একটিতে বাম ও তৃণমূল অর্ধেক করে আসন পেয়েছে। গোষ্ঠী কোন্দলেরই জেলার এ এলাকায় পরিবর্তনের ঢেউ আসেনি বলে তৃণমূলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে। হলদিবাড়িতে তৃণমূলের এক সময় প্রথম সারির নেতারা এখন পিছিয়ে।
দলেরই একটি সূত্র জানিয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের এক সময়ের কার্যকরী সভাপতি পরে যিনি সম্পাদক হয়েছিলেন সেই কমল প্রধান, যুব নেতা স্বদেশ রায় এবং টাউন তৃণমুল কংগ্রেসের সভাপতি চন্দন রায়কে দল থেকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়েছিল। এর পর এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই গোষ্ঠীর তরফে ৪২টি আসনে প্রার্থী দেওয়া হয়। পরে মুকুল রায়ের হস্তক্ষেপে ওই গোষ্ঠীর নেতারা তাদের প্রার্থী তুলে নেন। সাধারণ ভাবে একটি সমঝোতা হয়। হলদিবাড়ি ব্লক তৃণমূল সভাপতি গোপাল রায়ের দাবি, “নেতারা বসেছিলেন। মানুষের কাছে ওঁদের গ্রহণযোগ্যতা ছিল না।” তারা জানান, গত বছর পঞ্চায়েতে হলদিবাড়ি ব্লকে তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে কোনও আসন ছিল না। এবার ছ’টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ৭৩টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের প্রাপ্তি ১৫টি আসন।
গোপাল রায়ের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর অন্যতম কমল প্রধান এ দিন বলেন, “আমাদের ডাকাই হয়নি। তা সত্ত্বেও দেওয়ানগঞ্জে আমরা কাজ করেছি বলেই আমরা ছ’টা আসন পেয়েছি। গ্রহণযোগ্যতা নেই এমন নেতাদের নিয়েই গোপালবাবু কাজ করেন। তাই ফল এমন হয়েছে।” তাঁদের দাবি, ব্লক তৃণমূলে কংগ্রেস এবং সিপিএম থেকে দলছুট হয়ে আসা ব্যাক্তিদের রমরমা। তাঁদের অনেকে প্রার্থী হয়ে হেরেছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে তাঁদের কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। কমল প্রধানের গোষ্ঠীর সদস্যদের বক্তব্য, “তাঁদের দলে ব্রাত্য করে রাখা হয়েছে। দলের গোষ্ঠী কোন্দলেই পরিবর্তনের ঢেউ হলদিবাড়িতে এল না।” হলদিবাড়ি ব্লকের ছ’টি গ্রাম পঞ্চায়েতে মধ্যে উত্তর বড়হলদিবাড়ি, দক্ষিণ বড় হলদিবাড়ি, বক্সিগঞ্জ, পার মেখলিগঞ্জ ও হেমকুমারী পঞ্চায়েত রয়েছে বামফ্রন্টের দখলেই। গত বার দেওয়ানগঞ্জ পঞ্চায়েতটিও বামফ্রন্টের দখলে ছিল। ৯টি আসন ফব ও ২টি সিপিএমের দখলে ছিল। এবার এই গ্রাম পঞ্চায়েতে একটি আসন বেড়েছে। ১২ আসনের মধ্যে বামফ্রন্ট ৬টি এবং তৃণমূল কংগ্রেস ৬টি আসন পেয়েছে। এলাকার ফরওয়ার্ড ব্লকের বড় অংশ তৃণমূলে যোগদান করেছে। যদিও ফব-এর হলদিবাড়ি সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ সিংহ বলেন, “দেওয়ানগঞ্জে আসন কেন কমল খতিয়ে দেখব।” |