মামা ভাগ্নে যেখানে বিপদ নেই সেখানে - কিন্তু এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল বিপদ ডেকে আনল এক জনের। এমন মনে করছেন তুফানগঞ্জের বাসিন্দারা। তুফানগঞ্জ-১ পঞ্চায়েত সমিতির ১২ নম্বর আসনে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমে তৃণমূল প্রার্থী ভাগ্নে জগদীশ বর্মনের কাছে হারলেন দলের প্রাক্তন প্রধান তথা বিক্ষুব্ধ নির্দল প্রার্থী, মামা মনোজ বর্মা। তুফানগঞ্জের চিলাখানা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান মনোজ বর্মা টিকিট না পেয়ে এবার ওই আসনে নির্দল প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মনোজবাবু। তাঁর প্রতীক ছিল চেয়ার। অন্য দিকে তার বিরুদ্ধে ঘাস ফুল চিহ্নে প্রার্থী হয়েছিলেন তৃণমূলের তুফানগঞ্জ ১ ব্লকের কার্যকরী সভাপতি অঞ্চল কমিটির সভাপতি ভাগ্নে জগদীশ বর্মন। মামা-ভাগ্নের লড়াই ঘিরে রাজনৈতিক মহলের উন্মাদনা বাড়তে থাকে।
প্রচারে তৃণমূল শিবিরের তরফে দাবি করা হয়, ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ের পর দল মনোজবাবুকে চিলাখানা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের দায়িত্ব দেয়। চার বছর তিনি ওই দায়িত্ব সামলান। এলাকার উন্নয়নে ব্যর্থতার জন্য তাঁকে সরতে হয়। ভোটের ক’দিন আগে মনোজকে দল থেকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
জমজমাট হয়ে ওঠে ওই আসনের ভোটচিত্র। সিপিএমের ভূমিকা নিয়েও এলাকায় জল্পনা রয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীকে হারাতে মনোজবাবুকে সমর্থনের কথা সিপিএম কর্মীদের জানিয়ে দেওয়া হয় বলেও চাউর হয়। তৃণমূল প্রার্থী জগদীশ রায়ও এই আশঙ্কা উড়িয়ে দেননি। তৃণমূলের তুফানগঞ্জ ১ ব্লক সভাপতি ফজল করিম মিঁয়া বলেন, “ওই আসনে দলীয় প্রার্থী ৫৫০-এর বেশি ব্যবধানে জয়ী হন। এটা সুবিধাবাদীদের বিরুদ্ধে জনতার রায়ের প্রতিফলন হয়েছে।” মনোজ বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
জেলার শতাধিক আসনে তৃণমূল ও বিক্ষুব্ধ তৃণমূল প্রার্থীদের মধ্যে ভোট কাটাকাটি হয়েছে। দিনহাটার ভেটাগুড়ি ২ পঞ্চায়েতে এক আসনে জেলা নেতার ঘনিষ্ঠ বাঁধন দে ও অঞ্চল নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ সুশীল চন্দ নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দেন। বাঁধনবাবু জয়ী হন। মাথাভাঙার একাধিক আসনে বিক্ষুদ্ধ তৃণমূল প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।
এছাড়াও তুফানগঞ্জ মহকুমা থেকে জেলা পরিষদ আসনে সিপিএমের প্রাক্তন সভাধিপতি চৈতি বর্মন তারই পুরানো সহকর্মী সিপিএমের যমুনা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেন। ওই আসনে তুফানগঞ্জ-১ পঞ্চায়েত সমিতি প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি দীপালি রায় নির্দল হিসাবে ট্রাক্টর চিহ্নে লড়েছেন। ওই আসনে তিনি আদৌ ফ্যাক্টর হবেন কি না তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে। রাত পর্যন্ত ওই আসনের গণনা চলছে। |