বুড়িরহাটে নিরঙ্কুশ তৃণমূল
লাকা ‘দখল’ নিয়ে যেখানে রক্ত ঝরেছিল, সেই এলাকায় কর্তৃত্ব কায়েম করল তৃণমূল। দলীয় কর্মী খুনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠা কোচবিহারের দিনহাটার বুড়িরহাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সবকটি আসনে জয়ী তৃণমূল। গত নির্বাচনে গ্রাম পঞ্চায়েতটি বামেদের দখলে ছিল। প্রধান ছিলেন সিপিএমের শোভা সরকার। উপ-প্রধান ফরওয়ার্ড ব্লকের। বরাবর বামেদের ঘাঁটি বলে পরিচিত এলাকাটি এক তৃণমূল কর্মীর খুনের ঘটনা ঘিরে শিরোনামে আসে। এ দিন ফল ঘোষণায় দেখা যায়, পঞ্চায়েতের ১৩ আসনের সবগুলিতে তৃণমূল জয়ী। তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বুড়িরহাট-২ এলাকার মানুষ রতন বর্মনের রক্ত ব্যর্থ হতে দেননি। ব্যালটে মানুষ বামেদের ওই খুনের রাজনীতির প্রতিবাদ করেছেন।”
ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “এলাকায় বামেদের ছয় প্রার্থী তৃণমূলের সন্ত্রাসে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হন। বাকিরা প্রচার করতে পারেননি। ভোটের ফলে সন্ত্রাসের প্রতিফলন হয়েছে।” সিপিএম জেলা সম্পাদকমন্ডলী সদস্য তারাপদ বর্মন বলেন, “সন্ত্রাসের জন্য আমাদের কর্মীরা ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি। বহু নেতাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হয়। খুনের ঘটনা নিয়ে আমাদের বক্তব্যও বাসিন্দাদের কাছে তুলে ধরা যায়নি। তৃণমূলের বাইক বাহিনীর সন্ত্রাস রুখতে মানুষ প্রতিরোধ করায় দুঃখজনক ঘটনাটি ঘটেছিল।” ১৫ জুন গ্রাম পঞ্চায়েতের খট্টিমারিতে তৃণমূলের বাইক বাহিনীর সঙ্গে বামফ্রন্টের সমর্থকদের সংঘর্ষে রতন বর্মন নামে এক তৃণমূল কর্মী খুন হন।
ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক তথা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ-সহ ৬০ বাম-নেতাকর্মীর নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ। প্রায় একমাস কোচবিহার জেলা পরিষদের বিদায়ী সহকারি সভাধিপতি মণীন্দ্র বর্মন-সহ ১৩ জন বাম নেতাকর্মীকে ধরে পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে হতের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে যান শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ভোটের আগে হতের স্ত্রী পূর্ণিমাকে সঙ্গে নিয়ে দিনহাটা মহকুমা শাসকের দফতর ঘেরাও করে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানায় তৃণমূল। তার কয়েকদিন আগে বাম তরফে মিথ্যা মামলায় উদয়নবাবু-সহ অন্যদের ফাঁসানোর অভিযোগ তুলে মহকুমাশাসক দফতরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। প্রকাশ্যে উদয়নবাবুকে গ্রেফতার করা হলে দিনহাটায় আগুন জ্বালানোর হুমকি দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে খট্টিমারির খুন কাণ্ডে বুড়িরহাট ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ফলের দিকে নজর ছিল সকলের। গতবার ওই পঞ্চায়েতের আসন ছিল ১১টি। এর মধ্যে সিপিএম ৯টি, ফরওয়ার্ড ব্লক ১টি ও নির্দল প্রার্থী ১টি আসনে জয়ী হয়েছিলেন।
তৃণমূল কর্মী খুনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠা দিনহাটার সিতাই ব্লকের চামটা গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০টি আসনের সব ক’টি তৃণমূল জয়ী হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিন চামটার কোনাচামটা এলাকায় তৃণমূল কর্মী শামসুল হক খুন হন। ওই ঘটনায় ফরওয়ার্ড ব্লক সাংসদ নৃপেন রায় সহ ৬৪ জন বাম নেতাকর্মীর নামে হতের পরিবারের অভিযোগ পেয়ে খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ। বাম দখলে থাকা ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এবার তৃণমুলের দখলে আসা প্রসঙ্গে ফব সাংসদ নৃপেন রায়ের প্রতিক্রিয়া, “ওখানে সন্ত্রাসের জয় হয়েছে।” তৃণমূল দাবি করেছে, “বামেদের খুনের রাজনীতির বিরুদ্ধেই মানুষ রায় দিয়েছেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.