ত্রিশঙ্কু হয়ে রইল মালদহের ইংরেজবাজার পঞ্চায়েত সমিতি। ৩২ আসন বিশিষ্ট ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূল কংগ্রেস ১৫ টি আসন, কংগ্রেস ১৩ টি আসন এবং বামফ্রন্ট ৪ টি আসনে জিতেছে। ত্রিশঙ্কু অবস্থায় থাকলেও ওই পঞ্চায়েত সমিতি দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
ফল ঘোষাণার পরই স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের পযর্টন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর দাবি ইংরেজবাজার পঞ্চায়েত সমিতি তাঁরাই দখল করবেন। এই অবস্থায় কী করে তারা ওই পঞ্চায়েত সমিতি দখল করবেন? রাজ্যের পযর্টন মন্ত্রী তথা ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, “আমি ১০ জন কাউন্সিলারকে নিয়ে যে ভাবে ইংরেজবাজার পুরসভা চালাচ্ছি ঠিক সে ভাবেই।” বস্তুত, ২৫ আসনের ইংরেজবাজার পুরসভায় ১০ টি আসনে জিতেছিল তৃণমূল। তা সত্ত্বেও চেয়ারম্যান নির্বাচনে গোপন ব্যালটে ভোট হলে কৃষ্ণেন্দুবাবু জেতেন।
|
ইংরেজবাজারে কংগ্রেস ও সিপিএমের উচ্ছ্বাস। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়। |
ইংরেজবাজার পঞ্চায়েত সমিতি দখল করার ব্যাপারে সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “জেলায় তো বহু গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ইংরেজবাজার পঞ্চায়েত সমিতি ত্রিশঙ্কু হয়েছে। ওরা গায়ের জোরে, অর্থের জোরে ত্রিশঙ্কু গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করবে। এটা নতুন কী। এটা করবে বলেই তো জোর গলায় এখন থেকেই বলছে ত্রিশঙ্কু ইংরেজবাজার পঞ্চায়েত সমিতি দখল করবে।”
জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরীর অভিযোগ, ভোট গণনা শেষ না হতেই তৃণমূল কংগ্রেস নিবার্চিত সদস্যদের কেনাবেচার মহড়া শুরু করে দিয়েছে। তিনি বলেন, “দলের কোন নিবার্চিত সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসের প্রলোভনে যাতে পা না দেয় সে ব্যাপারে সর্তক করা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য কেনা বেচার এই ঘৃণ্য রাজনীতিকে ধিক্কার জানাই।”
গত পঞ্চায়েত নিবার্চনে ইংরেজবাজার পঞ্চায়েত সমিতি এককভাবে কংগ্রেস দখল করেছিল। কিন্তু সভাপতি পদ নিয়ে দলীয় সদস্যদের মধ্যে বিরোধের জেরে কংগ্রেসের বেশিরভাগ সদস্য কংগ্রেস ছেড়ে সিপিএমে যোগ দেওয়ায় পঞ্চায়েত সমিতি হাত ছাড়া হয়েছিল। পরবর্তীতে ইংরেজবাজার পঞ্চায়েত সমিতি বামফ্রন্ট দখল করে। কিন্তু গত বিধানসভা উপনিবার্চনে রাজ্যের পযর্টন মন্ত্রী এই পঞ্চায়েত সমিতি এলাকা থেকে বিপুল ভোটে জেচে। তার কয়েকমাসের মধ্যে ওই এলাকার পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূল কংগ্রেস দখল করতে না পারায় দলের নেতারা একে অপরকে দোষারোপ শুরু করেছেন। দলের নেতাদের একাংশ বলেছেন, “ইংরেজবাজারে আমদের দলের জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করেছে। সে কারণেই আমরা পঞ্চায়েত সমিতি দখল করতে পারলাম না।” |