একটা যেতে না-যেতেই আর একটা!
আগের নিম্নচাপ বৃষ্টি নামিয়েছিল দুই চব্বিশ পরগনা ও তার আশপাশে। আর সোমবার পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে তৈরি হওয়া নতুন নিম্নচাপটির জেরে বর্ধমান, বীরভূম, দুই মেদিনীপুর-সহ পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোয় বেশি বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। আবহবিদদের আশা, এতে ওই সব জেলায় বৃষ্টির ঘাটতি অনেকটা মিটবে।
বস্তুত জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে গোটা দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি ৩০% ছাড়ালেও গত ক’দিনের টানা বৃষ্টিতে তা পুষিয়ে গিয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ এ দিন বলেন, “সোমবার দেখা যাচ্ছে, গোটা দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ মোটামুটি স্বাভাবিকে এসে দাঁড়িয়েছে। তবে বীরভূম ও মুর্শিদাবাদে এখনও কিছুটা ঘাটতি আছে।” নয়া নিম্নচাপ স্বাভাবিক নিয়ম বজায় রাখলে সেই ঘাটতি কমবে বলে আবহবিজ্ঞানীরা মনে করছেন।
আবহাওয়া দফতরের খবর, রবিবার বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্তটিই এ দিন শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। সঙ্গে দোসর হিসেবে রয়েছে মৌসুমি-অক্ষরেখা। এই জোড়া ফলাতেই দক্ষিণবঙ্গে নতুন করে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিচ্ছে আলিপুর। “দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা। কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাসও থাকছে।” বলেন গোকুলবাবু।
আশার সঙ্গে খানিক আশঙ্কাও জাগিয়েছে এই ‘ভারী বৃষ্টির’ পূর্বাভাস। সেচ দফতরের কর্তারা কিছুটা উদ্বিগ্ন। কেন?
সেচ-সূত্রের ব্যাখ্যা: গত ক’দিনে পশ্চিমাঞ্চলের কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন নদীতে জলস্তর বেড়েছে। রানিচকের কাছে রূপনারায়ণ বিপদসীমার এক মিটার নীচ দিয়ে বইছে। শিলাবতী, কংসাবতীর জলস্তর কোথাও কোথাও বিপদসীমার দু’-আড়াই মিটারের মধ্যে পৌঁছে গিয়েছে। রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, “জল বিপদসীমার নীচে থাকলেও আগাম সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও রয়েছে।”
সপ্তাহখানেক আগে কিন্তু পরিস্থিতি ছিল একেবারে অন্য রকম। মাঝ জুন থেকে জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গকে কার্যত ব্রাত্য করে রেখেছিল বর্ষা। দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে বাড়ছিল বৃষ্টির ঘাটতিও। এক আবহবিদের কথায়, “জুন-জুলাইয়ে বঙ্গোপসাগরে দু’-একটা নিম্নচাপ তৈরি হলেও তা ওড়িশার দিকে সরে যায়। মৌসুমি-অক্ষরেখাও দক্ষিণবঙ্গের উপরে থিতু ছিল না। ফলে ঘোর বর্ষায় মাথা চাড়া দিয়েছিল পচা ভাদ্রের গুমোট।”
জুলাইয়ের শেষ লগ্নে এসে বর্ষা তার হারানো ছন্দ ফিরে পেয়েছে। বঙ্গোপসাগরে পরের পর নিম্নচাপ এবং দক্ষিণবঙ্গে প্রায় থিতু হয়ে যাওয়া মৌসুমি-অক্ষরেখার হাত ধরে এখন সে আবার ঝোড়ো ইনিংস খেলছে। কৃষি-আবহবিদদের মতে, গত ক’বছর ঠিক সময়ে বৃষ্টি না-পেয়ে রাজ্যে আমন চাষ মার খেয়েছে। এ বার জুন-জুলাইয়ে বৃষ্টির হাল দেখে মনে হচ্ছিল, এই মরসুমেও তার পুনরাবৃত্তি হবে। তবে জুলাই-শেষের বর্ষায় সে আশঙ্কা কিছুটা হলেও কাটছে। পশ্চিমবঙ্গে ধান উৎপাদনের নিরিখে প্রথম সারিতে থাকে বর্ধমান-বীরভূমের মতো পশ্চিমাঞ্চলের একাধিক জেলা। চলতি নিম্নচাপে সেখানে ভারী বৃষ্টি হলে ধানের চারা রুইতে সুবিধে হবে। কৃষি দফতরের খবর: প্রায় ৪৫% জমিতে চারা রোয়া হয়ে গিয়েছে। এ রাজ্যের কৃষি-ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, চারা রোপণ শেষ করার জন্য চাষিদের হাতে এখনও সময় রয়েছে সপ্তাহ তিনেক।
বর্ষার ছন্দে বিরাট কিছু বদল না-হলে সেই পর্ব নির্বিঘ্নে মিটে যাবে বলে আশায় রয়েছেন কৃষি-কর্তারা।
|
উদ্যোগ জলে
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
৭০ লক্ষ টাকা দামের প্রযুক্তিও মুখ থুবড়ে পড়ল রাজ্য নির্বাচন কমিশনে। কমিশন সূত্রের খবর, গণনা কেন্দ্র থেকে সরাসরি ভোটের ফল কমিশনের অফিসে চলে আসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই খবর প্রোজেক্টরের মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও ছিল। এর জন্য খরচ পড়েছিল প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা। কিন্তু গণনা শুরুর কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেই ব্যবস্থা থমকে যায়। কমিশনের এক কর্তা জানান, কম্পিউটারের সার্ভারে বিভ্রাটেই এই বিভ্রাট। কমিশনের একটি সূত্রের বক্তব্য, উদ্যোগ আর অর্থদুই-ই জলে গেল। শুধু সার্ভার নয়, বিভিন্ন গণনাকেন্দ্রে সিসিটিভি এবং ভিডিওগ্রাফি করার ব্যবস্থাতেও এ দিন ত্রুটি ধরা পড়েছে। এ দিন বর্ধমান, হুগলি ও উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক গণনা কেন্দ্র থেকে ব্যালট ছিনতাইয়ের খবর মিলেছে। ওই কেন্দ্রগুলিতে সিসিটিভি বা ভিডিও-ছবির ব্যবস্থা ছিল কি না, তা নিয়ে কমিশনের কর্তারা নিশ্চিত নন। |