বিরোধীশূন্য জঙ্গলমহল
ঞ্চায়েত ভোটের ফলে জঙ্গলমহল থেকে কার্যত ধুয়ে মুছে গেল সিপিএম তথা বামেরা। জঙ্গলমহলের পঞ্চায়েত-নির্ভর আঞ্চলিক ঝাড়খণ্ডী দলগুলিও তৃণমূলের কাছে শোচনীয় ভাবে পর্যুদস্ত হল। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে ঝাড়গ্রাম মহকুমার ৮টি ব্লকের ৭৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে সিপিএম ৫৩টি দখল করেছিল। ঝাড়খণ্ড পার্টি দখল করেছিল ২৬টি। এবার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তৃণমূল দখল করল ৭৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত। সিপিএম দখল করেছে ৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত। ১টি গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল ও ঝাড়খণ্ড মুক্তিমোর্চার মধ্যে টাই হয়েছে। বাকি দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতে কেউই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।
এ দিন সকাল এগারোটা নাগাদ বেলপাহাড়ির সুপার মার্কেট চকে রাস্তার ধারে একটি টিনের ছাউনির তলায় দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বসেছিলেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা। ক্রমে উজ্জ্বল হচ্ছে মন্ত্রীর মুখ। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “যা খবর পাচ্ছি তাতে ঝাড়গ্রাম, জামবনি, সাঁকরাইল সর্বত্রই ভাল ফল হতে চলেছে।” চা শেষ করে মন্ত্রী ছুটলেন জামবনি ও লালগড়ের উদ্দেশ্যে। দুপুরের পর থেকেই ঝাড়গ্রাম মহকুমার ৮টি ব্লকের ৭৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮০৭টি আসনের (৪৫টি আসনে আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় তৃণমূল) ছবিটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। মাওবাদী ঘাঁটি হিসেবে চিহ্নিত বেলপাহাড়ির শিমুলপাল, ভুলাভেদা, বাঁশপাহাড়ি-সহ দশটি গ্রাম পঞ্চায়েতেই তৃণমূলের জয়জয়কার। বেলপাহাড়ির ওই গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি ঝাড়খণ্ডীদের দখলে ছিল। এমনকী সিপিএমের শক্তঘাঁটি শিলদা গ্রাম পঞ্চায়েতটিও তৃণমূল দখল (শিলদা মোট আসন-১৬। তৃণমূল ১১ সিপিএম ৫) করে নিয়েছে। লালগড়ের (বিনপুর-১ ব্লক) দশটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে দশটিরই ক্ষমতা দখল করেছে তৃণমূল। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে দশটির মধ্যে ৬টির ক্ষমতা দখল করেছিল ঝাড়খণ্ড পার্টি এবং ৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত সিপিএম দখল করেছিল। গত তিন দশক ধরে ঝাড়খণ্ডীদের দখলে থাকা কাঁটাপাহাড়ি (সিজুয়া) গ্রাম পঞ্চায়েতটিও তৃণমূল দখল করেছে (তৃণমূল-৮, ঝাড়খণ্ডী-২)। পাশাপাশি, অনুজ পাণ্ডে, ডালিম পাণ্ডেদের খাসতালুক ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতটির ক্ষমতা (মোট আসন ১০। তৃণমূল ৭, সিপিএম ৩) দখল করে নিয়েছে তৃণমূল। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতকে বিরোধীশূন্য করে দিয়েছিলেন পাণ্ডে-ভাইয়েরা। গতবার ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮টি আসনের ৬টিতে বিরোধীরা কোনও প্রার্থীই দিতে পারেনি। নেতাই হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্ত পাণ্ডে ভাইয়েরা ফেরার থাকলেও এবারও সিপিএমের আশা ছিল ধরমপুরে ভাল ফল হবে। কিন্তু অনুজের খাসতালুক ধরমপুর বুথেই ৪৪টি ভোটের ব্যবধানে সিপিএম হেরেছে। ঝাড়গ্রাম, জামবনি, সাঁকরাইল, নয়াগ্রাম, গোপীবল্লভপুর-১ ও গোপীবল্লভপুর-২ এবং নয়াগ্রাম ব্লকেও তৃণমূলের জয়যাত্রা অব্যাহত। একই ছবি ঝাড়গ্রাম, জামবনি গোপীবল্লভপুর, সাঁকরাইলে। সুকুমার হাঁসদার কথায়, “অভূতপূর্ব ফল হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে উন্নয়নযজ্ঞ চলছে। শান্তি ও উন্নয়নে আস্থা রাখলেন জঙ্গলমহলবাসী।” গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে এতদিন জঙ্গলমহলের আঞ্চলিক দলগুলির প্রভাব ছিল। এ বার ঝাড়খণ্ডী দলগুলিরও শোচনীয় অবস্থা। ঝাড়খণ্ড পার্টির (নরেন) নেত্রী চুনিবালা হাঁসদার কথায়, “একেবারে সিপিএমের কায়দায় চাপা সন্ত্রাস করে তৃণমূল ক্ষমতা দখল করল।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.