দুষ্কৃতীর জঙ্গী যোগ দেখবে পুলিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ফালাকাটা |
ফালাকাটার বর্মনপাড়া থেকে ধৃত দুষ্কৃতীর সঙ্গে কেএলও যোগাযোগ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। গত সোমবার রাতে চারটি বোমা-সহ ওই দুষ্কৃতীকে আটক করে এসএসবি জওয়ানেরা। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাকে জেরা করে পাওয়া তথ্যে কেএলও যোগাযোগের কিছু তথ্য মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানায়, ধৃত গণেশ মণ্ডল একাধিক ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্ত। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, ধূপগুড়ির বেশ কয়েকটি চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনাতেও তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তার কীভাবে কৌটো বোমা পৌঁছাল তা খতিয়ে দেখতে গিয়েই কেএলও বিষয়ে কিছু তথ্য সামনে উঠে এসেছে।
জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার অমিত জাভাগলি বলেন, “এসএসবি গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এক ব্যক্তি এবং চারটে বোমা উদ্ধার করে পুলিশকে দেয়। ধৃত ব্যক্তিকে জেরা করা হচ্ছে। বোমাগুলি নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। সেগুলি কতটা শক্তিশালী তা জানতে নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা কোনও সম্ভাবনাই উড়িয়ে দিচ্ছি না।” এদিন ধৃতকে আলিপুরদুয়ার আদালতে তোলা হলে বিচারক তার ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, সম্প্রতি ধূপগুড়ি-ফালাকাটার শালবাড়ি, বর্মনপাড়া, চাপারডাঙি এলাকায় কেএলওদের কয়েকটি বৈঠক হয়েছে বলে খবর এসেছে। ভুটানে সেনা অভিযানের সময় আত্মসমর্পণকারী এক কেএলও সদস্য প্রতিটি বৈঠকেই উপস্থিত ছিলেন। ধূপগুড়ির কয়েকজন বাসিন্দাকে গত সপ্তাহে কোচবিহারের অসম সীমান্তে নিয়ে গিয়েও বৈঠক হয়েছে। সেখান থেকেই বোমাগুলি নিয়ে আসার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়নি পুলিশ। ধৃত ব্যক্তিকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, সম্প্রতি কেএলওদের তরফে ডুয়ার্সের বেশ কিছু এলাকায় নামকরা অপরাধীদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলা হয়েছে। সেই সূত্রেই গণেশ মণ্ডলের সঙ্গে কেএলও-যোগাযোগ গড়ে উঠেছে কী না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, একটি জর্দার কৌটোতে বারুদ ভরে বোমাগুলি তৈরি করা হয়েছিল। মঙ্গলবার সকালে শিলিগুড়ি থেকে বম্ব স্কোয়াডের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বোমাগুলিকে নিষ্ক্রিয় করেন। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া বলেন, “ধৃতকে জেরা করা হচ্ছে।”
তদন্তকারী অফিসারেরা জানাচ্ছেন, বছরখানেক আগে শিলিগুড়ির মাটিগাড়া থানা এলাকার একটি ডাকাতির ঘটনায় ৫৫ বছরের গণেশ মণ্ডল অভিযুক্ত। আলিপুরদুয়ার থানা এলাকার একটি ডাকাতির মামলাতেও তিনি অভিযুক্ত। শিলিগুড়ির ডাকাতির মামলায় আদালতের নির্দেশে সাত মাস জেল খাটার পর মাস খানেক আগে গণেশ জামিনে ছাড়া পান। বাড়ি ফেরার পরেই তার সঙ্গে কেএলও যোগাযোগ ঘটে বলে পুলিশ অনুমান করেছে। যদিও তাকে ফাঁসাতে বাড়ির পাশে খড়ের গাদায় বোমাগুলি কে বা কারা রেখে দিয়েছে বলে তার স্ত্রী ফুলমনিদেবী দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, “স্বামীর সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দল বা কেএলও-র যোগাযোগ নেই। আমাদের বাড়িতেও বোমা মেলেনি। পাশের একটি জমিতে তা মিলেছে।”
|