প্রথম দু’দফার পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী যথাযথ ভাবে মোতায়েন না-হওয়ায় অসন্তুষ্ট রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আগামী শুক্রবার, তৃতীয় দফার ভোটেও যাতে এর পুনরাবৃত্তি না হয়, তার নিশ্চয়তা পেতে ফের আদালতের শরণাপন্ন হচ্ছে তারা।
কমিশনের অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের এক মুখপাত্র বলেন, “কোথায়, কোন বাহিনী কত সংখ্যায় মোতায়েন হবে, তা কমিশনই ঠিক করেছে। তারাই এ ব্যাপারে জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তাই এ ব্যাপারে দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে।” যার উত্তরে কমিশনের তরফে বলা হচ্ছে, জেলাশাসকেরা এখন খাতায়কলমে কমিশনের অধীনে কাজ করছেন ঠিকই। কিন্তু কোন জেলায় কী ভাবে বাহিনী মোতায়েন হচ্ছে তা কমিশন জানতেই পারছে না।
ভোট পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনগুলির ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে সোমবার বলেছিলেন, “ভোট শান্তিপূর্ণ হয়নি।” এ দিন তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনীকে আরও সক্রিয় ভাবে ব্যবহার করলে দ্বিতীয় দফার অনেক ঘটনাই হয়তো এড়ানো যেত।” সোমবারের ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথায়, কখন, কী ভাবে টহল দিয়েছে, এ দিন তার বিস্তারিত তথ্য তিনটি জেলার পুলিশ সুপার এবং জেলাশাসকদের কাছে জানতে চেয়েছেন কমিশনার। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে জানাচ্ছে কমিশন সূত্র।
অবশ্য তার আগেই হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টকে গোটা বিষয়টা জানিয়ে রাখতে চাইছে কমিশন। কমিশন সূত্রের বক্তব্য, এ বার ভোট ব্যতিক্রমী। গোটা পর্বটাই হচ্ছে আদালতের নির্দেশে। তাই বাস্তব পরিস্থিতি তাদের জানিয়ে রাখা কমিশনের দায়িত্ব। মঙ্গলবার কমিশনের এক মুখপাত্র বলেন, “হাইকোর্টে আমরা নতুন কোনও মামলা করব না। বাইকবাহিনী নিয়ে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের এজলাসে একটা মামলা চলছে। গত ক’দিন সেই মামলায় অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের লক্ষ্যে বাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি নিয়েও সওয়াল জবাব চলছে। সেখানেই কেন দ্বিতীয় দফায় শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা গেল না, তার ব্যাখ্যা দেওয়া হবে।” হাইকোর্টের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টকেও দ্বিতীয় দফার ভোটের অশান্তি এবং তিনটি প্রাণহানির বিষয়ে জানিয়ে রাখবে কমিশন। শুক্রবারের আগেই সেই কাজ করা হবে বলে কমিশন সূত্রের খবর।
রাজ্য সরকার ভোটে অশান্তির জন্য নির্বাচন কমিশনকে দুষলেও বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের বক্তব্য, “নির্বাচন কমিশনকে আমি দায়ী করতে পারি না। কমিশনকে সম্পূর্ণ অমান্য করে, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে অকেজো করে রেখে তৃণমূল বাহিনী ভোট পরিচালনা করছে। তারাই ঠিক করছে, কে বুথে ভোট দিতে যাবে। এমনকী ভোটারদের পরিচয়পত্রও তৃণমূল-বাহিনীই পরীক্ষা করছে।”
|