|
|
|
|
লোধাদের উন্নয়ন থমকে |
টাকা পড়ে, হয়নি ফলের বাগান
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পড়ে রয়েছে বরাদ্দ অর্থ, অথচ ফলের বাগান তৈরির কাজ শুরুই হয়নি। লোধা অধ্যুষিত এলাকায় উন্নয়নের জন্য ফলের বাগান তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। চার বছর ধরে টাকা পড়ে থাকলেও বাগান তৈরি দূর অস্ত, কোনও কাজই এগোয়নি! এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ লোধারা। তাদের অভিযোগ, অর্থ বরাদ্দ হলেও প্রশাসনিক উদাসীনতার কারণে উন্নয়নের ছিঁটেফোঁটাও পায়নি লোধারা। টাকা থাকা সত্ত্বেও কাজ কেন হয়নি? প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে জেলা অনগ্রসর কল্যাণ আধিকারিক রাহুল নাথ বলেন, “বাগান তৈরির জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
লোধা উন্নয়নের একাধিক প্রকল্পের মধ্যে ফলের বাগান তৈরিও রয়েছে। ২০০৯-১০ আর্থিক বছরে লোধা অধ্যুষিত এলাকায় ৫টি ফলের বাগান তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। তার মধ্যে ২টি নারায়ণগড়ে, ১টি শালবনিতে ও ২টি ঝাড়গ্রাম মহকুমার নয়াগ্রাম ও বিনপুর-১ ব্লকে তৈরি হওয়ার কথা ছিল। প্রতিটি বাগানের জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দও করা হয়েছিল। জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর ৫টি বাগানের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা পেয়েছিল। |
নিষ্ফলা বাগান |
• প্রকল্প ৫টি ফলের বাগান তৈরি
• সময় ২০০৯-১০ অর্থবর্ষ
• এলাকা নারায়ণগড় ২, শালবনি ১, নয়াগ্রাম ১, বিনপুর ১
• মোট বরাদ্দ ৫০ লক্ষ টাকা
(প্রতিটি বাগানের জন্য ১০ লক্ষ করে)
• প্রকল্পের হাল শালবনিতে সবে ওয়ার্ক-অর্ডার হয়েছে, নারায়ণগড়ে বাগান তৈরির তোড়জোড় চলছে, নয়াগ্রাম ও বিনপুরে এখনও জমিই পাওয়া যায়নি |
|
বরাদ্দ অর্থ থেকে ঝাড়গ্রাম মহকুমায় বাগান তৈরির জন্য ঝাড়গ্রামের মহকুমা শাসককে ২০ লক্ষ টাকা ও বাকি দু’টি ক্ষেত্রে বিডিওদের ১০ লক্ষ করে ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাগান তৈরির কাজ এগোয়নি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগে শালবনিতে বাগান তৈরির ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে। তারপরে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় কাজ এগোয়নি। নারায়ণগড়ে এতদিনে সবেমাত্র বাগান তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। আর ঝাড়গ্রামে এখনও ফলের বাগান তৈরির জমিই মেলেনি! গত চার বছরেও জমি পাওয়া গেল না কেন? এই প্রশ্নের সদুত্তর নেই প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছে। লোধা শবর কল্যাণ সমিতির সম্পাদক বলাই নায়েক বলেন, “আগের সরকারও মুখে লোধা উন্নয়নের কথা শুনিয়েছিল। বর্তমান সরকারও সেই পথে চলছে। নেতারা মঞ্চ থেকে বড় বড় কথা বলছেন। আর লোধারা যেমন ছিল তেমনই থেকে গিয়েছে। বারবার আন্দোলন করেছি, বিক্ষোভ করেছি, তবু প্রশাসনের টনক নড়েনি।”
ফলের বাগান হলে কী ভাবে উন্নয়ন হত?
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ফলের বাগান তৈরি করে সেগুলি এলাকার লোধাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। যেখানে বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ থাকবে। প্রতিটি মরসুমেই ফল হবে। তা বিক্রি করে আয়ের একটি উৎস খুঁজে পাবে লোধারা। শুধু তাই নয়, ফলের বাগান তৈরির সময়ও স্থানীয় মানুষই কাজ পাবেন। পতিত জমিতেও সহজেই ফলের বাগান তৈরি করা যায়। আগেও প্রশাসন এ ব্যাপারে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে সফল হয়। তার নিরিখেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু শুধু মাত্র প্রশাসনিক উদাসীনতার কারণেই তা তৈরি করা যায়নি। তাছাড়া এখন ফলের বাগান তৈরি শুরু হলেও তার সুফল পেতে অনেকটাই দেরি হয়ে যাবে। তাছাড়া ২০০৯-১০ আর্থিক বছরের তুলনায় বিভিন্ন সরঞ্জামের বাজার মূল্য বর্তমানে অনেকটাই বৃদ্ধি হয়েছে। ফলে এখন বাগান তৈরি করতে গেলে বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ বাড়াতে হবে। এইসব সমস্যা কাটিয়ে আদৌ কী এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। নিরুত্তর প্রশাসন।
|
পুরনো খবর: লোধাদের জন্য বাগান হয়নি, বরাদ্দ টাকা পড়ে |
|
|
|
|
|