|
|
|
|
দলবিরোধী কাজ, কোপে সিপিএমের দুই
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলবিরোধী কাজ এবং শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে কোপে পড়েছেন দুই সিপিএম নেতা-কর্মী। দল এঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। একজনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অন্য জনকে লোকাল কমিটির সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেলার বহু এলাকায় যখন সিপিএমের পায়ের তলায় মাটি নেই, সংগঠনে ধস নেমেছে, তখন জেলা নেতৃত্বের এমন কড়া পদক্ষেপ ঘিরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। দুই সিপিএম নেতা- কর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে মানছেন দলের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার। তাঁর কথায়, “পার্টির নীতি ও শৃঙ্খলা সকলকে মেনে চলতে হবে। শৃঙ্খলাভঙ্গের প্রবণতা বরদাস্ত করা যায় না। ওই দুই কর্মীর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ এসেছিল। তা খতিয়ে দেখেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
যে দুই নেতা- কর্মী কোপে পড়েছেন, তাঁদের একজন জেলা পরিষদের আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে, পরে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। নাম মুরলী বিশুই। বাড়ি গোয়ালতোড়ে। মুরলীবাবু দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ওই এলাকায় জেলা পরিষদের দু’টি আসন রয়েছে। দু’টিই সংরক্ষিত। একটি এসসি। অন্যটি এসটি। যেটি এসসি সংরক্ষিত, জেলা পরিষদের সেই ৫২ নম্বর আসন থেকে সিপিএমের হয়ে মনোনয়ন দাখিল করেন মুরলীবাবু। জেলা সিপিএম নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতিতে না হোক, জেলা পরিষদের সব আসনে দলীয় প্রার্থী থাকবে প্রতীকেই। এ ক্ষেত্রে নির্দলকে সমর্থনের প্রশ্ন নেই। জেলা পরিষদের আসন সংখ্যা ৬৭। ঠিক হয়েছিল, ৬২টিতে প্রার্থী দেবে সিপিএম। ৪টিতে সিপিআই। বাকি একটিতে ফরওয়ার্ড ব্লক। ৬২টি আসনে কে কে প্রার্থী হবে, তা নিয়ে বেশ কয়েকবার সিপিএমের মধ্যে আলোচনা হয়। এমনকী, বেশ কিছু ক্ষেত্রে একাধিক নাম উঠে আসে। তাঁদের দিয়ে মনোনয়নপত্র জমা করাও হয়। তবে, জেলা পরিষদের ওই আসনে শুধুমাত্র মুরলীবাবুই মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। দলীয় নেতৃত্বকে তিনি আশ্বস্ত করেছিলেন, যত সন্ত্রাসই হোক, তবু প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করবেন না। তবে, কথা রাখতে পারেননি দলের এই কর্মী। সন্ত্রাসের জেরে তিনি প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করে নেন। ফলে, ৬২টি আসনের মধ্যে সিপিএমের প্রার্থী ছিল ৬১টি আসনে। যে জন্য জেলা নেতৃত্বকে অস্বস্তিতেও পড়তে হয়।
অন্য জন স্বদেশ মিদ্যা। স্বদেশবাবু সিপিএমের মাদপুর জোনাল কমিটির অন্তর্গত সুলতানপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক ছিলেন। পাশাপাশি, জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ কর্মাধ্যক্ষও ছিলেন। জেলা পরিষদের ৯ জন কর্মাধ্যক্ষের মধ্যে ৪ জন কর্মাধ্যক্ষকে এ বার প্রার্থী করেনি সিপিএম। ঘটনার জেরে দলের অন্দরে শোরগোল পড়ে। সেই তালিকায় নাম ছিল স্বদেশবাবুর। এদিকে, সুলতানপুর এলাকার বেশ কয়েকজন প্রার্থী এ বার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েও পরে তা প্রত্যাহার করে নেন। জেলা সিপিএম নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ এসেছিল, এঁদেরকে মনোনয়ন প্রত্যাহারে প্রভাবিত করেছেন জেলা পরিষদের ওই বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ। লোকাল কমিটির সম্পাদক হিসেবে তাঁর যে পদক্ষেপ করা উচিত ছিল, এ ক্ষেত্রে তিনি তা করেননি। উল্টে মনোনয়ন প্রত্যাহারে সম্মতি দেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখেই স্বদেশবাবুকে লোকাল কমিটির সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে, তাঁর পার্টি সদস্যপদ খারিজ হয়নি। দল থেকে বহিস্কারও হননি। জেলা সিপিএম সূত্রে খবর, আপাতত তিনি দলের কর্মী হিসেবে কাজ করবেন। |
|
|
|
|
|